ছবি-বেঙ্গল ফাউন্ডেশন
ঢাকা : শিল্পচর্চা অবদানের জন্য ‘হামিদুর রাহমান পুরস্কার’ পেলেন বরেণ্য শিল্পী মুর্তজা বশীর। শনিবার বিকেলে ছায়ানট মিলনায়তনে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়।
পঞ্চাশের ও ষাটের দশকের কীর্তিমান শিল্পী, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের স্থাপত্য-নকশার প্রধান রূপকার ও আধুনিক শিল্প-আন্দোলনের অন্যতম ব্যক্তিত্ব হামিদুর রহমানের স্মৃতি রক্ষার্থে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে ‘হামিদুর রাহমান পুরস্কার’ ২০০৭ সাল থেকে প্রবর্তন করা হয়েছে। এ পুরস্কার প্রদানের সার্বিক ব্যবস্থা ও পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন।
২০১৫ সালের ‘হামিদুর রাহমান পুরস্কার’-এর জন্য মনোনীত হন বরেণ্য শিল্পী মুর্তজা বশীর। ইতিপূর্বে শিল্পী মনিরুল ইসলাম ২০০৭ সালে, শিল্পী সৈয়দ জাহাঙ্গীর ২০১১ সালে এবং শিল্পী রফিকুন নবী ২০১৩ সালের ‘হামিদুর রাহমান পুরস্কার’ পেয়েছেন।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বরেণ্য শিল্পী রফিকুন নবী, শিল্পী মাহমুদুল হক এবং পারভীন আহমদ। আরো বক্তব্য রাখেন বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবুল খায়ের এবং মহাপরিচালক লুভা নাহিদ চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে ২০০৫ সালে নির্মিত, বেঙ্গল ফাউন্ডেশন প্রযোজিত ও সৈয়দ তানভীর আহমেদ এবং পল জেমস গোমেজ পরিচালিত ‘মুর্তজা বশীর: শিল্প অন্বেষার ৫৫ বছর’ শীর্ষক প্রামান্যচিত্রটি প্রদর্শিত হয়।
মুর্তজা বশীর বাংলাদেশের আধুনিক শিল্প-আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ। বিগত শতাব্দীর পঞ্চাশের দশক থেকে অদ্যাবধি তাঁর নানামাত্রিক সৃজনে যে বৈচিত্র্য তা তাঁকে স্বাতন্ত্র্যে উজ্জ্বল করেছে। শক্তিশালী ড্রইং, রঙের সুমিত ব্যবহার এবং সমাজচেতনায় উদ্দীপিত দৃষ্টিভঙ্গি তাঁর সৃজন বৈভবে প্রাণময় হয়ে ওঠে। শিল্পী মুর্তজা বশীর দীর্ঘদিনের চিত্র সাধনা ও চর্চার মধ্যে দিয়ে এ দেশের চিত্রকলা প্রয়াসকে মনীষা ও শিল্পগুণে সমৃদ্ধ করেছেন।
এছাড়া তাঁর কবিতা চর্চা ও কথাসাহিত্যের ভূবনে বিচরণ, মুদ্রা সংগ্রহ ও পোড়ামাটির কাজ নিয়ে যে গবেষণা তা নিশ্চিতই আমাদের ঐতিহ্যিক সাংস্কৃতিক প্রবাহে নবমাত্রা দান করেছে। শিল্পী মুর্তজা বশীর ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন ১৯৩২ সালে। ১৯৫৪ সালে গভর্ণমেন্ট ইনস্টিটিউট অব্ আর্টস থেকে প্রথম বিভাগে পাশ করেন।
১৯৫৬-৫৮ সাল পর্যন্ত আকাদেমিয়া দ্য বেলি আর্টি, ফ্লোরেন্সে অধ্যয়ন করেন। একক প্রদর্শনী করেছেন ১৮টি। ১৯৮০ সালে একুশে পদক লাভ করেন। ১৯৯৮ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২৫ বছরের শিক্ষকতা শেষে অধ্যাপক হিসাবে অবসর গ্রহণ করেন।