Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ৫ ১৪৩১, শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪

স্বাধীনতার এমন স্বাদ জীবনে কখনো পাইনি

মাহমুদা পারভীন নুপুর, ইউকে করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ০৪:০৪, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৬

আপডেট: ২৩:৩০, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৬

প্রিন্ট:

স্বাধীনতার এমন স্বাদ জীবনে কখনো পাইনি

ছবি: পারিবারিক অ্যালবাম থেকে

লন্ডন: পাসপোর্ট যে কী জরুরি জিনিস, তা ভীষণভাবে বুঝতে পেরেছিলাম শেষবার যখন কোলকাতায় গিয়েছিলাম তখন। নিজের দেশের বাইরে পাসপোর্ট-ই হলো একজন মানুষের একমাত্র পরিচয়, আর পরিচয়হীন মানুষের যে কত ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় সেবার আমরা তা প্রতিটা পদে পদে বুঝেছিলাম তখন।

এটা ২০০৬ সালের কথা। তখন আমার ছেলের বয়স ৬ আর মেয়ের বয়স ২ এর কিছু বেশি। এর আগেও যেহেতু আমরা কোলকাতায় গিয়েছি এই জন্য তখন আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম পুরিতে যাওয়ার। পুরিতে যেতে হলে কোলকাতা হয়েই। আমরা প্রথম দিন কোলকাতা থাকবো, তারপর ৩-৪ দিন পুরিতে আবার ২-৩ কোলকাতা থেকে দেশে ফিরে আসবো-এটাই ছিলো আমাদের প্ল্যান|

পরিকল্পনা অনুযায়ী, নির্দিষ্ট দিনে আমরা কোলকাতা গিয়ে পৌঁছালাম। পরের দিন, যেহেতু আমার ছেলে-মেয়েরা ছোট আর কোলকাতা থেকে পুরি প্রায় ৮ থেকে ১০ ঘন্টার জার্নি তাই স্টেশন থেকে ট্রেনের একটা কামরা রিজার্ভ করে আসলাম। কেনাকাটা আর ঘোরাঘুরি করে দিনটা বেশ আনন্দেই কেটে গেলো। ছেলে-মেয়েরা ছোট থাকলেও তেমন অসুবিধা হতো না কারণ ততদিনে ঘুরুনী বাবা মায়ের অভ্যাসটা ওরাও মোটামুটি রপ্ত করে ফেলেছিলো।

যাহোক আমাদের ট্রেনের সময় ছিল খুব সম্ভবত রাত ১০টা। আমরা হাতে বেশ সময় রেখেই রওনা দিয়ে দিলাম, যে হোটেলে ছিলাম(হোটেলের নামটা মনে করতে পারছিনা, তবে আমরা যখনই গিয়েছি ওই হোটেলটিতে উঠেছি) ঐ হোটেলের একজন কর্মচারী আমাদের জন্য একটা ট্যাক্সি ডেকে দিলো, যাওয়ার সময় আমার স্বামী মাসুম বললেন যেহেতু এখানে আমাদের লাগেজ সব রেখে যাচ্ছি পাসপোর্ট গুলো রেখে যাই। আমি বললাম না এগুলো নিয়ে যাই যদি পুরিতে লাগে।

আমি পাসপোর্টগুলো আমার হ্যান্ডব্যাগে নিয়ে নিলাম, তখন খুবই বৃষ্টি হচ্ছিলো আমরা ট্যাক্সি থেকে নেমে স্টেশনের ভিতরে যেতেই একদম ভিজে গেলাম। বিশাল বড় স্টেশন, লোকে গিজগিজ করছে-আমরা এক জায়গায় গিয়ে দাঁড়ালাম।

পাশেই এক ভদ্রলোক দাঁড়িয়ে ছিলেন-উনি জিগ্যেস করলেন, `আপনারা কি বাংলাদেশ থেকে এসেছেন, আমি বললাম জ্বী, জিগ্যেস করলেন কোথায় যাবেন? আমার স্বামী আমাদের টিকিটটা উনাকে দেখিয়ে বললেন আমরা পুরি যাবো। কিন্ত এতো লোকজন আবার এইরকম বৃষ্টিতে কামরা খুঁজে বের করতে তো বাচ্চারা ভিজে যাবে, এমনিতেই ওরা একবার ভিজে গেছে।

লোকটা বললো `চিন্তা করবেন না আপনাদের কামরার একটা কামরা পরেই আমারটা, মাত্রতো ট্রেন আসলো লোকজন নামুক তারপর আমি আপনাদের দেখিয়ে নিয়ে যাবো,` জানি না কেন লোকটাকে আমার ভালো মনে হচ্ছিলো না আমরা যতবারই বলছি এখন যাই লোকজন তো মোটামুটি নেমে গেছে-উনি ততবারই বলছেন `আর একটু অপেক্ষা করেন,মানুষ সব নেমে যাক তারপর।

আমি আমার স্বামীকে বললাম উনি যখন যায় যাক চলো আমরা যাই বলেই আমি আমার ছোট বাচ্চাকে কোলে নিয়ে হাটা শুরু করলাম অগত্যা উনিও এলেন, আমরা হাঁটছি তো হাঁটছি আমাদের কামরা আর খুঁজে পাচ্ছিনা বৃষ্টিতে বাচ্চা ভিজে একাকার। হটাৎ একটা কামরার নাম্বারের সাথে আমাদের নাম্বারের মিল মনে হলো, বৃষ্টিতে ভালো করে বোঝা যাচ্ছিলো না।

কুলির মত একজন লোক কামরার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলো-মাসুম জিগ্যেস করলো, `ভাই এটা কি এতো নাম্বার কামরা`? উনি বললো `হাঁ` আমরা তাড়াতাড়ি উঠে গেলাম, ভিতরে গিয়ে মিলিয়ে দেখি ওইটা আমাদের কামরা না।

লোকজন মাত্র উঠা শুরু করেছে তাই কামরাটা মোটামুটি খালি তাই-মাসুম বললো এক কাজ করি, এখানেই আগে বাচ্চাদের জামা কাপড় পাল্টে দিই, তারপর আমরা আস্তে আস্তে ভিতর দিয়ে হেঁটে কামরাটা খুঁজে নিবো। ও এক কর্নারে বসে বাচ্চাদের মাথা মুছাচ্ছিলো আর আমি কেবল আমার হাতের ব্যাগটা বেঞ্চ’র উপর রেখে নিচে বসে বাচ্চাদের কাপড় বের করবো-এর মধ্যেই কেউ আমার ব্যাগ নিয়ে চম্পট। কয়েক সেকেন্ডের জন্য আমরাতো হতবিহ্বল হয়ে পরেছিলাম।

তারপর আমি চিৎকার শুরু করে দিলাম, আমার ব্যাগ, আমার ব্যাগ, ওটার মধ্যে তো আমার পাসপোর্ট আছে, কি করবো কিছু বুঝতে পারছিলাম না, কাঁদতে কাঁদতে ট্রেন থেকে নেমে গেলাম, তবে সব থেকে আশ্চর্য হলাম মাসুমের কথা শুনে, যখন ও বললো `চল আমরা ঘুরেই আসি তারপর যা করার করবোনে`, আমি বললাম প্রশ্নই উঠে না।

ট্রেনটা ছেড়ে গেলো আর রেখে গেলো আমাদের জন্য দুর্বিষহ দুইটা দিন। আমরা এর ওর কাছে জিগ্যেস করছি, ভাই লাল রঙের একটা ব্যাগ হাতে কোনো লোককে কি দেখেছেন? সবাই বলছে কেউ দেখেনি-এর মধ্যে একজন লোক বললো, `এটা হাওড়া স্টেশন, এইখানে যা একবার হারায় তা আর পাওয়া যায় না, তার থেকে কাছেই থানা আছে আপনারা সেখানে চলে যান,`।

আমরা থানায় গেলাম, বিভিন্ন রকম কোয়ারিজের পর রিপোর্ট লিখায়ে যখন হোটেলে আসলাম তখন রাত ১ টা, সব শুনে হোটেলের রিসিপসনিস্টt বললো যেহেতু আপনাদের পাসপোর্ট নাই আপনাদের রুম দেয়া যাবে না। মাসুম বললো আমরা তো কয়েকঘন্টা আগেই এখন থেকে গেলাম আর তাছাড়া আপনারাতো আমাদের চিনেন কিন্ত উনি বললো, কিছু মনে করবেন না আমাদের হোটেলের রুলস-ই এমন আমার কিছু করার নাই বলে আমাদের লাগেজগুলো বের করে দিলো।

কী করবো বুঝতে পারছিলাম না। একেতো এতো রাত আর আমাদের কথা না হয় বাদ দিলাম বাচ্চারা খুবই টায়ার্ড হয়ে পড়েছিলো, ওই হোটেলের এক কর্মচারী বললো আপনারা চাইলে আমি আপনাদের এক জায়গায় নিয়ে যেতে পারি ওটা এখানকার মতো এতো বড় হোটেল না তবে আপনারা আজকের রাত থাকতে পারবেন, আমাদের কিছুই করার ছিল না, আমরা ওর পিছু নিলাম।

গলির মধ্যে কেমন একটা অন্ধকার কাঠের একটা বাড়ি, আমরা সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠলাম, খুব সম্ভবত তিনটা রুমই ছিল, মালিকের সাথে কথা বলে আমাদেরকে একটা রুমে নিয়ে গেলো। অন্য দুই রুম থেকে খুব জোরে জোরে কথার আওয়াজ আসছিলো, আমার খুবই কান্না পাচ্ছিলো। নিজেকে এতো অসহায় বোধহয় জীবনে আর কখনো বোধ করিনি।

আমরা দুজনেই এতো ভয় পেয়েছিলাম কিন্তু কোনো উপায় ছিলো না সকাল হওয়ার অপেক্ষা করা ছাড়া। মাসুম আর আমি সারারাত জেগে ছিলাম, একটু ভোর হতেই মাসুম বলল ফিলিপাইনে ফোন করে দুলাভাইকে সব বলি তাহলে বোধহয় আমাদের সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে(আমার ননদ মানে মাসুমের ছোটো বোনের স্বামী তখন এম্বাসি চাকরি করতেন, তখন উনার পোস্টিং ছিল ফিলিপাইনে)।

আমরা বাইরে এসে প্রথমে আমার শ্বশুরবাড়ি ফোন করে আমার শ্বাশুড়িকে সব বললাম আর ফিলিপাইনে দুলাভাই এর নাম্বারটা নিলাম। দুলাভাইকে ফোন করতেই উনি বললেন তোমরা কোন চিন্তা করো না, আমি এখনই কোলকাতা এম্বাসিতে যিনি আছেন উনার সাথে কথা বলছি। তোমরা আবার আধাঘন্টা পরে ফোন দাও।

আমরা আধাঘন্টা পরে আবার ফোন দেয়ার সাথে সাথে দুলাভাই বললেন, আমি কথা বলেছি, `তোমরা যত তাড়াতাড়ি পারো এম্বাসিতে চলে যাও, উনি বলেছেন যা করার উনি করবেন। `আমরা খুবই আশ্বানিত হলাম, তাড়াতাড়ি করে অল্প কিছু নাস্তা করে এম্বাসিতে দিকে রওনা হলাম। ওখানে গিয়ে আমাদের পরিচয় দিলাম, একজন বললেন উনিতো এখনো অফিসে আসেননি আপনার ওয়েটিং রুমে বসেন। উনি আসলেই আপনাদেরকে ডেকে দিবো, আমরা অপেক্ষা করছি তো করছি কোনোই খবর নাই।

আমরা একটু পর পর গিয়ে বলছি, ভাই আপনি আমাদের পরিচয়টা বলেছেন তো উনাকে, উনি কিন্ত আমাদের আসতে বলেছেন। অপেক্ষা করতে করতে সকাল ৯ টা থেকে ১২টা বেজে গেছে, কিন্তু উনার কোনো খবরই নাই। এদিকে বাচ্চারা কান্নাকাটি শুরু করে দিয়েছে, তাড়াহুড়া করে আসাতে ওদের জন্য কোনো খাবার দাবারি কিনে আনিনি। এতোটা সময় যে লাগবে আমরা তো কল্পনায় করিনি।

হঠাৎ করে সাড়ে ১২টার দিকে হবে একজন ভদ্র লোক এসে বললেন, ভাই এখানে অপেক্ষা করে আপনাদের কোনো লাভ হবে না তার থেকে বরঞ্চ আপনারা আবার বেনাপোলে যান, আপনারা যেদিন এন্ট্রি করেছেন ওটার একটা প্রুভ নিয়ে তারপর কি যেন একটা অফিসের নাম বললো ওখানে যান, উনি ইশারা ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, যেহেতু আমরা একটা রেফারেন্সে এসেছি, খুব সম্ভবত আমাদের কাছে কিছু পাওয়ার আশা নাই, তাই......

যাদেরকে আমাদের দেশ থেকে বিভিন্ন দেশের এম্বাসিতে কাড়ি কাড়ি টাকা বেতন আর রাজকীয় সুযোগ সুবিধা দিয়ে পাঠানো হয়, যাতে বিদেশে যে সব বাংলাদেশীরা আছেন তাঁদের যে কোনো অসুবিধায় উনারা যেন সহযোগিতা করতে পারেন, কিন্ত সেই দিনই বুঝেছিলাম কতজন উনাদের দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করেছেন, এটা দেখার বোধহয় কেউ নেই।

আমরা বুঝে গিয়েছিলাম ওইখানে আমাদের কোনো আশা নাই। আমরা চলে এলাম আমাদের হোটেলের সেই ছোট্ট রুমে কিন্তু ঐখানে থাকা অসম্ভব। আমরা আবার আমাদের পুরানো হোটেলে এলাম আবার ওদের অনুরোধ করলাম কিন্তু ওরা কিছুতেই রাজি হলো না। পাশের হোটেলের এক মালিক বোধ হয় আমাদের কথা শুনছিলেন উনি উনার হোটেলের জন্য আমাদেরকে অফার করলেন,এই জন্যই বোধহয় সবাই বলে, ` আল্লাহ এক দরজা বন্ধ করলে অন্য এক দরজা খুলে দেন`। মাসুম আমাদেকে নতুন হোটেলের রুমে রেখে বেনাপোলে গেলো আমরা যেদিন এন্ট্রি করেছিলাম ওটার প্রুভ আনতে। ও যখন ফিরে আসলো তখন রাত।

পরের দিন সকালে আমাদের নতুন এক যুদ্ধ শুরু হলো, আমাদের কাগজপত্র নিয়ে গেলাম ওখানকার সরকারি এক অফিসে, একজনের স্বাক্ষর তাড়াতাড়িই হয়ে গেলো আর একজনের স্বাক্ষর দরকার।

শুনলাম উনি একটা মিটিংয়ে আছেন আসতে দেরি হবে। আমরা অপেক্ষা করতে থাকলাম, আমার মেয়েটা হঠাৎ করে পানি খেতে চাইলো এক ভদ্র মহিলার টেবিলে দেখলাম জগে পানি, আমি গিয়ে বললাম `আপু আমার মেয়েটা পানি খেতে চাচ্ছে একটু পানি দেয়া যাবে ?` উনি বললেন এই অফিসের পাশেই একটা পানির কল আছে, ওখানে যান`।

কোলকাতার মানুষ কৃপণ সেটাতো আমি জানতামই কিন্ত এতটা কৃপণ, এতটা অমানবিক জানতাম না। আমরা থাকলাম, মাসুম গিয়ে কিছু খাবার আর পানি নিয়ে আসলো কারণ কোনো ভাবেই ঐ ভদ্র লোককে মিস করতে চাচ্ছিলাম না। যে করেই হোক আমাদেরকে ঐদিন কাগজপত্র রেডি করে ফেলতে হবে।

বাংলাদেশ থেকে আমার শ্বাশুড়ি বাসের টিকিট কেটে দিয়েছেন পরেরদিন ভোরের, কারণ আমাদের টাকা পয়সা শেষ হয়ে আসছিল, আমরা যা টাকা নিয়ে গিয়েছিলাম তার অর্ধেক ছিল মাসুমের কাছে, অর্ধেক ছিল আমি যে ব্যাগটা হারিয়েছি ওটাতে। এক পাসপোর্ট যে কতো কিছু শিখায়ে দিলো। যাহোক দুপুরের পর ওই ভদ্রলোক আসলেন এবং আমাদের কাগজপত্র স্বাক্ষর করে দিলেন।

আমার ছেলেটা খুব খুশি, কারণ ততক্ষণে সে বুঝে গিয়েছে পাসপোর্ট না হলে আমরা আর দেশে ফিরতে পারবো না। তারপর ওখান থেকে যেতে হলো থানায়। পুলিশের দিয়েও কাগজপত্র স্বাক্ষর করাতে হবে, আবারও অপেক্ষার পালা কারণ যে অফিসার স্বাক্ষর করবেন উনি বাইরে গিয়েছেন অন্য একটা কাজে।
আমরা ওখানকার কেন্টিনে লুচি আর আলুরদম খেলাম, আমার ছেলেটা বার বার ঐ অফিসার রুমে গিয়ে দেখছিলো উনি আসছেন কি না, এদিকে দুপুর গড়িয়ে বিকাল হয়ে গেলো তখন উনি আসলেন, মাসুম গেল কাগজপত্র নিয়ে, ছেলেটা গেল বাবার পিছনে পিছনে।

একটু পরে দেখি আমার ছেলে দৌড়াতে দৌড়াতে আসছে, `মামনি সাইন হয়ে গেছে আমরা এখন বাসায় চলে যেতে পারবো`। ওর মনটা বোধ হয় নিজের বাসায় যাওয়ার জন্য অস্থির হয়ে ছিলো। মাসুম যখন কাগজগুলো আমার হাতে দিলো, আমি কাগজগুলো ধরে আর আমার বাচ্চাদের ধরে কান্না শুরু করে দিলাম। বুকের ভিতর থেকে যেন একটা পাথর নেমে যাচ্ছিলো। আমরা যখন ওখান থেকে বেড়িয়ে হোটেলের দিকে রওনা দিলাম তখন প্রায় সন্ধ্যা।

মাসুম ট্যাক্সি ডাকতে যাচ্ছিলো আমি না করলাম,বললাম চলো আমরা কিছুক্ষণ হাঁটি, ততক্ষণে রাস্তার সন্ধ্যার লাইটগুলো জ্বলে উঠেছে, আমরা চারজন হাতধরাধরি করে হাটছি, কী যে আনন্দ হচ্ছিলো। মনে হচ্ছিলো আমরা বোধহয় কোনো রাক্ষসপুরিতে আটক ছিলাম। স্বাধীনতার এমন স্বাদ জীবনে কখনো পাইনি। দুদিন পর যেন প্রাণ ভোরে নিশ্বাস নিলাম।

এর তিন চার মাস পরে আমরা যখন লন্ডনে চলে আসবো, আর একটা হলো পুরিতে না যেতে পারার শোক সব কিছু মিলিয়ে ঠিক করলাম কয় একটা দিন সেন্টমার্টিনে কাটিয়ে আসবো। যাওয়ার আগেরদিন আমার ফুফু আমার ছেলেকে দুষ্টুমি করে বলেছিলেন` ফারদিন (আমার ছেলে)আমি তোমাদের সঙ্গে যাবো, আমাকে নিবা?` আমার ছেলে বলেছিলো, `তোমার কি পাসপোর্ট আছে, পাসপোর্ট ছাড়া কিন্তু কোথাও যাওয়া যায় না।’ আমার ছেলে বুঝে গিয়েছিলো, নিজের গন্ডির বাইরে পাসপোর্ট কতটা জরুরি।

[email protected] 

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer