Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

চৈত্র ১৩ ১৪৩০, বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪

সুনামগঞ্জে সরকারিভাবে চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রায় ধস

জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৯:৪৩, ২ জুন ২০১৭

আপডেট: ১৯:৫৪, ২ জুন ২০১৭

প্রিন্ট:

সুনামগঞ্জে সরকারিভাবে চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রায় ধস

সুনামগঞ্জ : সুনামগঞ্জ জেলা খাদ্য বিভাগ সরকারিভাবে চাল কেনার লক্ষ্য মাত্রায় ধস নেমেছে। জেলার যে সকল চালকল মালিক রয়েছে তারা প্রতি বছরের মত এবার চাল দেবার জন্য চুক্তি করে নি।

অকালে একের পর এক হাওর ডুবে যাওয়ায় জেলার ৯০শতাংশ বোরো ধান পানিতে তুলয়ে গেছে। এবার জেলার দিরাই,শাল্লা,জগন্নাথপুর,ধর্মপাশা,জামালগঞ্জ,দোয়ারা বাজার,বিশ্বম্ভরপুর ও তাহিরপুর উপজেলা সহ ১১টি উপজেলার ছোট বড় ১৪৩টি হাওর গুলোতে বোরো ধান পানিতে তলিয়ে স্বরনকালের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে হাওরপাড়ের কৃষক পরিবার গুলো। তাই এক ফসলী বোরো ধান পানিতে ডুবির কারনে অন্যান্য বছর যে সকল চালকল মালিকরা লাভের আশায় চাহিদার বাহিরেও চাল দেবার জন্য প্রতিযোগীতা করে চুক্তি করেছিল আজ তারাই হাওর পাড়ের কৃষকদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করতে না পারায় খাদ্য গোদাম থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।

এদিকে সরকারিভাবে চাল দেবার চুক্তির ৩১ মে মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। জানা গেছে, জেলার ১১টি উপজেলার ২৭০টি চালকল রয়েছে। তারাই অন্যান্য বছর চাহিদা অনুযায়ী চাল সংগ্রহ করে নিয়ম মেনে কেউ ভিন্ন পথেও প্রতিযোগীতা করে জেলা খাদ্য বিভাগ সাথে চুক্তি করেছিল। তাদের কেউ এবার খোজঁ পাওয়া যাচ্ছে না।

এবার জেলা খাদ্য বিভাগ চাল ক্রয় করার জন্য তাদের সাথে যোগাযোগ করেও সুফল পাই নি। এবার জেলা খাদ্য বিভাগ চাল ক্রয় করার লক্ষ্য মাত্র ৬৯০১মেট্রিকটন। এর মধ্যে আতব ৬হাজার ৩৬৭মেট্রিকটন ও সিদ্ধ ৫৩৪মেট্রিকটন। এবার আতব ৩৩টাকা কেজি ও সিদ্ধ ৩৪টাকা কেজি ধরে চাল কেনার কথা ছিল।

গত ৩১মে, বুধবার চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় পূর্ব পর্যন্ত ১৯০মেট্রিকটন আতব ও সিদ্ধ মিলিয়ে চাল দেবার চুক্তি করেছে জেলার ৬টি চালকলের মালিক। জেলার ২৬৪টি চালকল এবার চুক্তি করে নি। চুক্তি করা ৬টি চালকলের মধ্যে জগন্নাথপুর উপজেলার ৪টি চাল কল,দিরাই উপজেলায় ২টি চাল কল রয়েছে। খাদ্য বিভাগ সুত্রে জানাযায়,জেলার ১১টি উপজেলা গুলোতে তাহিরপুরে ১৭টি,সুনামগঞ্জ সদরে ৩৬টি,দক্ষিন সুনামগঞ্জে ৪১টি,দোয়ারা বাজারে ২৭টি,ছাতকে ২১টি,জগন্নাথপুরে ২৬টি,দিরাইয়ে ৪৬টি,শাল্লায় ৩টি,ধর্মপাশায় ২টি,জামালগঞ্জে ৩৪টি,বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় ১৫টি চাল কল রয়েছে।

এর মধ্যে যারা এবার চাল দিতে পারে নি তারা আগামী ২বছর চাল সরকারি খাদ্য গোদামে চাল দিতে পারবে না বলে সরকারী ভাবে জানানো হয়েছে। জেলার বিভিন্ন উপজেলার চালকল মালিকগন জানান,এবার জেলার এক ফসলী বোরো ধান অকাল বন্যায় হারিয়ে যাওয়া হাওর পাড়ের কৃষকদের গোলা একবারেই শূন্য। এখন নিজেদের খাবার এই নেই। ধান বিক্রি করবে কোথা থেকে। এখন এই জেলার বাহির থেকে চাল এনে বিক্রি করলে লোকসান হবে আমাদের। তাই এবার চাল বিক্রি করার চুক্তি করা হয় নি।

জেলা বিভিন্ন উপজেলার খাদ্য গোদাম কর্মকর্তারা জানান,প্রতি বছর চাল বিক্রি করার জন্য লাইন লেগে যেত চাল দেবার জন্য কিন্তু এবার ঐ সব চাল কল মালিকদের দেখা পাওয়া যায় না। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ জাকারিয়া মোস্তফা জানান, জেলার সকল চালকল মালিকদের সাথে যোগাযোগ করেও কোন লাভ হয় নি। সবাই এই বছর চাল দিতে পারবে না। হাওর ডুবে যাওয়ায় মূল সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে এবার চাল সংগ্রহে।

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer