Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ৬ ১৪৩১, শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪

এডিবি’র দায়মুক্তি বাতিলের দাবিতে সমাবেশ ও মানববন্ধন

বহুমাত্রিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৩:২৩, ৮ এপ্রিল ২০১৭

আপডেট: ০০:০০, ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯

প্রিন্ট:

এডিবি’র দায়মুক্তি বাতিলের দাবিতে সমাবেশ ও মানববন্ধন

খুলনা : এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)’র দায়মুক্তি বাতিলের দাবিতে সমাবেশ ও মানববন্ধন হয়েছে।

ঋণ প্রকল্পের নামে দুষণকারী, দানবীয় ও জনস্বার্থবিরোধী তৎপরতার সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগ এনে শুক্রবার আন্তর্জাতিক এই আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এসব কর্মসূচি পালিত হয়।

কৃষকনেতা আনোয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক, ভাষ্কর রাশা, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আলী রেজা, যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’র যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ^াস, বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রীর সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, লেখক ও গবেষক জীবনানন্দ জয়ন্ত, কৃষকনেতা জায়েদ ইকবাল খান, ক্লিন-এর হাসান মেহেদী।

উপকূলীয় জীবনযাত্রা ও পরিবেশ কর্মজোট (ক্লিন), নাগরিক সংহতি ও এনজিও ফোরাম অন এডিবি’র যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশ পরিচালনা করেন নাগরিক সংহতির শরিফুজ্জামান শরিফ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, এডিবি’র পরামর্শের কারণে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় খাত সঙ্কুচিত হয়েছে। পরিবহণ, কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পাটশিল্পের মতো সেক্টরগুলো রুগ্নতা, অতি-বাণিজ্যিকীকরণ ও নৈরাজ্য সৃষ্টির পেছনে এদের নীতিই দায়ী। তারা একহাতে ঋণ ও আরেক হাতে জনস্বার্থবিরোধী নীতি নিয়ে সরকারকে সেই নীতি বাস্তবায়নে বাধ্য করেছে। ফলে আজ বাংলাদেশের সড়ক ব্যবস্থাপনায় সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই।

বক্তারা আরও বলেন, টিসিবি দুর্বল করে দেয়ার কারণে ব্যবসায়ীদের মর্জির উপরে বাজার নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। তারা ইচ্ছেমতো পণ্যের দাম বাড়ায় বা কমায়। টিসিবি সচল না থাকায় সরকার ব্যবসায়ীদের সাথে পেরে ওঠে না। বিএডিসিকে সঙ্কুচিত করার কারণে কৃষি উপকরণের পুরো বাজার ফড়িয়াদের কব্জায় চলে গেছে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা তাদের চাপিয়ে দেয়া প্রকল্পের অনিবার্য ফল। অপরিকল্পিত চিংড়ি চাষের ফলে পরিবেশের যে বিপর্যয় তার পেছনে এডিবি’র বড়ো ভূমিকা রয়েছে। তাদের কারণে শিক্ষা-স্বাস্থ্য পুরোপুরি বাণিজ্যিক পণ্যে পরিণত হয়েছে।

অভিযোগ করে বক্তারা বলেন, বিশ^ব্যাংক, আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (আইএমএফ), ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো দায়মুক্তির সুবিধা না পেলেও এডিবিকে ১৯৭৩ সালে আইন প্রণয়ন করে দায়মুক্তি দেয়া হয়েছিলো। স্বাধীনতার পরবর্তী দুর্বল অর্থনীতির কারণে তাদের শর্ত আমরা মেনে নিতে হয়তো বাধ্য হয়েছি। কিন্তু বর্তমানে আমাদের অর্থনৈতিক ভিত্তি যথেষ্ট সুদৃঢ়। আমরা বিশ^ব্যাংকের মতো প্রতিষ্ঠানের অন্যায় চাপের কাছে নতি স্বীকার না করে পদ্মা সেতুতে নিজস্ব বিনিয়োগ করছি। আবার এই দীর্ঘ সময়ে অভিজ্ঞতাবলে এডিবি’র পরামর্শ শুনে জনগণকে বিপুল ক্ষতির মুখোমুখি হতে হয়েছে। এই দুটি কারণেই এডিবি’র দায়মুক্তি বাতিল আজ সময়ের দাবি।

তারা বলেন, এডিবি’র পরামর্শে ১৯৮০ থেকে বিকেন্দ্রীকরণের নামে জ¦ালানি ও বিদ্যুৎখাত সংস্কার শুরু হয় এবং ১৯৯৭-৯৮ অর্থবছর থেকে ব্যক্তিখাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণ শুরু হয়। বেসরকারি কোম্পানিগুলো বিদ্যুৎখাতে আসার পর থেকে একদিকে যেমন ক্রমবর্ধমান হারে ভর্তুকি প্রদান করা হচ্ছে অন্যদিকে তেমনি বিদ্যুতের মূল্যও বেড়ে যাচ্ছে। এডিবি এশিয়া এনার্জি কর্পোরেশনকে অর্থায়ন করেছিলো ফুলবাড়ি কয়লাখনি প্রকল্প বাস্তবায়নে যা স্থানীয় জনসাধারণের জীবন, জীবিকা ও পরিবেশগত অধিকারের উপর হুমকি সৃষ্টি করেছিলো। ব্যাপক গণ-আন্দোলন ও পুলিশী হত্যাকা-ের মধ্য দিয়ে এশিয়া এনার্জি তাৎক্ষণিকভাবে পিছিয়ে যায়। কিন্তু এখনও উন্মুক্ত কয়লাখনি করায় তাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।

সমাবেশ থেকে আইন সংশোধন করে এডিবি’র দায়মুক্তি বাতিল, ক্ষতিগ্রস্ত জনসাধারণকে ক্ষতিপূরণ দেয়া, এডিবি’র সিদ্ধান্ত গ্রহণে ‘একদেশ একভোট’ নীতি গ্রহণ করা ও কোনো প্রকল্পের মাধ্যমে জনগণের সামান্যতম ক্ষতি না করাসহ চারদফা দাবি তুলে ধরা হয়।

 

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer