ছবি-বহুমাত্রিক.কম
বগুড়া : বৃটিশ আমলে নির্মিত মেয়াদ উত্তীর্ণ বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার রেলওয়ে জংশন ষ্টেশনের কয়েকটি ভবন যেকোনো মুহুর্তে ধ্বসে পড়তে পারে। এ সব ভবনের দেওয়ালে ফাটল ধরেছে, খুলে পড়ছে চুন সুরকির তৈরী করা ছাদের বিভিন্ন অংশ, বর্ষায় ভবনের ছাদ চুইয়ে পানি পড়ার কারণে বন্ধ রাখতে হয় দাপ্তরিক কার্যক্রম।
ঝুঁকিপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ষ্টেশনের পুরাতন ভবনগুলো ভেঙে ফেলে নতুন ভবন তৈরী করা বা সংস্কারের কোন উদ্যেগ গ্রহণ না করার কারনে যে কোন সময় ভবনগুলো ভেঙে পড়ে ঘটতে পারে বড় ধরণের দুর্ঘটনা।
সান্তাহার ষ্টেশন কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, ষ্টেশনের তিন ও চর নম্বর প্লাটফর্মে রয়েছে ষ্টেশন মাস্টার, সহকারী ষ্টেশন মাস্টার, পার্সেল অফিস, টিসি, টিটিই’দের কার্যালয়, পার্সেল গুদাম, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর বিশ্রামাগার সহ জিআরপি থানা ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর চৌকি। একশ’ বছরের বেশী সময় ধরে এই কার্যালয় গুলোতে চলছে সকল প্রকার দাপ্তরিক কার্যক্রম। দীর্ঘ দিন থেকে চূন সুরকির তৈরী পুরাতন এই ভবনগুলোর কোন প্রকার সংস্কার না করার কারনে ছাদের নিচের অংশ ও দেওয়ালের পলেস্তার উঠে গিয়ে একাধিক অংশে দেখা দিয়েছে একাধিক ছোট বড় অসংখ্য ফাটল।
সান্তাহার ষ্টেশন মাস্টার রেজাউল করিম বলেন, বৃষ্টি শুরু হলে ভবনের ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে। এত করে অফিসের গুরুত্বপূর্ন কাগজপত্র ভিজে যায়। তিনি বলেন, ষ্টেশনের সবগুলো ভবনের এক অবস্থা। তিনি আশাংকা প্রকাশ করে বলেন, ঝকিঁপূর্ন ভবনগুলো যে কোন মুহুর্তে ধ্বসে পড়ে বড় দুর্ঘটনা ও প্রাণহানী ঘটতে পারে। এ বিষয়ে একাধিক বার রেলওয়ের সংশিষ্ট বিভাগে চিঠি দিয়ে ও কোন ফল পাওয়া যায় নি।
ষ্টেশনের হেড পার্সেল ক্লার্ক রেজাউল ইসলাম জানান, ষ্টেশনের প্রতিটি ভবনে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জীবনের ঝুঁিক নিয়ে চাকরী করে যাচ্ছে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, রেলওয়ের অনেক ষ্টেশনের পুরাতন ভবন ভেঙ্গে নতুন ভবন নির্মান করা হলেও অজ্ঞাত কারনে সান্তাহার জংশন ষ্টেশনের মত গুরুত্বপূর্ন ষ্টেশনের কোন পরিবর্তন হয়নি। তিনি বলেন, বৃষ্টি হলে পার্সেল গুদামের মেঝে পানিতে ভরে যায়, ফলে গুদামে রাখা বিভিন্ন মালামাল পানিতে ভিজে নষ্ট হয়ে যায়।
সান্তাহার রেলওয়ে জিআরপি থানার ওসি সাজু মিয়া জানান, ষ্টেশনের অন্যান্য ভবনের মত জিআরপি থানা ভবনের একই অবস্থা। দেওয়াল ও ছাদের বিভিন্ন অংশ লোনা ধরে পলেস্তার উঠে গেছে। ট্রেন যাত্রীরা তাদের অভিযোগে বলেন, বর্তমানে ঢাকার সাথে একাধিক আন্তঃনগর ট্রেন চালু হলেও সান্তাহার জংশন ষ্টেশনে যাত্রীদের সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়নি। ষ্টেশনে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর যাত্রীদের বিশ্রামের জন্য চারটি বিশ্রামাগার রয়েছে কিন্তু ঝুকিপূর্ণ হওয়ার কারণে যাত্রীরা বিশ্রামাগারে অবস্থান করতে চান না।
এ বিষয়টি নিয়ে রেলওয়ের পাকশী বিভাগের বিভাগীয় প্রকৌশলী (ডি ইএন-২) আসাদুল হকের সাথে তার যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, অচিরেই ষ্টেশনের ভবনগুলো সংস্কারের কাজ শুরু করা হবে। তবে নতুন করে ভবন তৈরীর বিষয়টি মন্ত্রনালয়ে বিবেচনাধীন রয়েছে।
বহুমাত্রিক.কম