Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ১১ ১৪৩১, শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪

‘সম্প্রসারণ বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় বেড়েছে কৃষি গবেষণার ’

আশরাফুল ইসলাম

প্রকাশিত: ০৪:০২, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭

আপডেট: ০৪:১৫, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭

প্রিন্ট:

‘সম্প্রসারণ বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় বেড়েছে কৃষি গবেষণার ’

ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা : বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি)’র সাবেক নির্বাহী চেয়ারম্যান কৃষিবিদ ড. মোহাম্মদ জালাল উদ্দীন বলেছেন, বর্তমানে সম্প্রসারণ বিভাগের সঙ্গে গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর চমৎকার আন্তঃসংযোগ রয়েছে।

তিনি মনে করেন, কৃষি গবেষণা, সম্প্রসারণ বিভাগ ও বিএডিসি এখন এক প্ল্যাটফর্মে চলে এসেছে। কৃষি গবেষণায় সমন্বয় অনেক বেড়েছে। এই সমন্বয় সার্বিকভাবে কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থাকে বেগবান করবে।

বিএআরসি’র নির্বাহী চেয়ারম্যান হিসাবে অবসরে যাওয়ার প্রাক্কালে বহুমাত্রিক.কম-কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা জানিয়েছেন কৃষিবিদ ড. মোহাম্মদ জালাল উদ্দীন। কথা বলেছেন আশরাফুল ইসলাম।

বহুমাত্রিক.কম : জলবায়ু পরিবর্তণের প্রেক্ষাপটে কৃষি উৎপাদনে অঞ্চলভিত্তিক পুনর্বিন্যাসে কতটা জোর দিয়েছেন?

ড. মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন : আমারা নেচারকে কোনোভাবেই ডিস্টার্ব করতে চাইনা। আমরা নেচারকে ঠিক রেখেইে ম্যাক্সিমাম আউপুট অর্জন করতে চাই। এখন আমাদের চিন্তা হচ্ছে, যেহেতু ধান উৎপাদনের একটি বিপুল সম্ভাবনাকে আমরা কাজে লাগিয়েছি-সেই ধান উৎপাদনকে আমরা নর্থ থেকে সাউথে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। আর নর্থের আবাদি জমিতে শাকসবজি-ফলমূল উৎপাদন বৃদ্ধির চিন্তা করা হচ্ছে। দক্ষিণ পশ্চিামঞ্চলে লবনাক্ততা আছে। সেখানে প্রাকৃতিকভাবেও লবনাক্ততা আছে আবার সমুদ্রের জোয়ারভাটাতেও তা বৃদ্ধি পায়। এ অবস্থাকেও আমরা কাজে লাগাতে চাচ্ছি। দেখা হচ্ছে-প্রাকৃতিকভাবেই কোন কোন ফসল সেখানে ভাল হবে। প্রধান প্রধান খাদ্যশষ্যগুলোর লবনাক্ত সহনীয় জাত উন্নয়ন করে সেখানে কৃষি উৎপাদন আমরা করছি। আমরা নর্থে সাকসেসফুল, এখন আমাদের ব্রেইন কাজ করছে সাউথে।

বহুমাত্রিক.কম : কৃষি উৎপাদনে দেশের আর কোন এলাকাকে সম্ভাবনাময় হিসাবে দেখছেন?

ড. মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন : পাহাড় হচ্ছে কৃষিতে সম্ভাবনার আর এক নতুন দিগন্ত। সেখানে প্রচুর জায়গা পড়ে আছে। সেগুলোকে কিভাবে কৃষি উৎপাদনে নিয়ে আসা যায়-তা প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। তবে প্রকৃতির যথেচ্ছা ব্যবহারের ফল কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, বিশেষ করে এবছর পাহাড় ধসে বহু মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। এটা হয়েছে নেচারকে ডিস্টার্ব করার কারণেই। মাটি কেটে নিয়ে গেছে-ভারী বর্ষণে ধসে পড়েছে। জুম চাষ-চা চাষের মাধ্যমে এ জায়গাগুলোকে যথাযথ ব্যবাহার করতে হবে। এরই মধ্যে পাহাড়ের অনেক এলাকায় আম বাগান করেছি। সেখানে আমাদের কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের দুটি মেগা প্রজেক্ট অনুমোদন হয়েছে। এ প্রকল্পে সাপ্লাই চেইন ও ক্রপ প্রোডাকশন-দুটিরই উন্নয়ন করা হবে। ফল উৎপাদন-বিশেষ করে কলা ও আমে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

ইতিমধ্যেই পাহাড়ের ফল উৎপাদনের প্রভাব বাজারে পড়ছে। এবছরও সেটা দেখা গেছে। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় প্রচুর আম আসছে। কারণ পাহাড়ে আমের গবেষণা করার পর আমরা যখন বাণিজ্যিক উৎপাদনে চলে গেছি তখন কয়েক হাজার হেক্টর আমের বাগান তৈরী হয়ে গেছে। কৃষকরা ঝোঁপঝাড় কেটে আমের বাগান তৈরি করেছে। আমাদের বারি আম৩, ল্যাংড়া, ফজলি, বারি আম৪ সেখানে উৎপাদন হচ্ছে-আগে তো এগুলো কল্পনাই করা যেতো না। রাজশাহীতে যেভাবে আমের পোকা ও ফাঙ্গাস দমন করি পাহাড়েও সেভাবে দমন করা হয়-কৃষকরা ইতিমধ্যেই তা শিখে গেছেন।

এরপর আবার ব্যাগিং টেকনোলজি এনেছি। পাহাড়ের এই আম উৎপাদন অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকলে এখান থেকেই বিদেশে আম রপ্তানি করে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন করতে পারি আমরা।
এবছর হাটহাজারির একজন ব্যবসায়ি আমাকে ফোন করেন-আম কেনার জন্য। কোনো এক সময় আমি সেখানে কর্মরত ছিলাম। তিনি জেনেছেন কৃষি গবেষণা আম উৎপাদন করছে। আমি তাকে আমাদের ভেল্যুচেইনের কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিই। এর মানে বাজারও তৈরী হয়ে গেছে।
বহুমাত্রিক.কম : কৃষি উৎপাদনে ক্রমাগত উন্নতি করলেও আমাদের বাজার ব্যবস্থাপনা এখনো সেভাবে উন্নত হয়নি। এনিয়ে কোনো গবেষণা হচ্ছে কী?

ড. মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন : এক্ষেত্র্যে আমাদের দু’টি লক্ষ্য-পোস্ট হার্ভেস্টকে বিজ্ঞানভিত্তিক করা। ১০-১৫ ভাগ ফলন কম হচ্ছে এজন্য প্রসেসিংটা ঠিক না হওয়ার কারণে। আমরা চেষ্টা করছি পোস্ট হার্ভেস্ট লস কিভাবে কমানো যায়। আমরা আমের জন্য হট ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট বানিয়েছি। যার প্রতিটি প্ল্যান্টের দাম দেড়-দু’লাখ টাকা। তার ভিতরে পানি কুসুম গরম করে রেখে দেবে, ১৫-২০ মিনিট রাখার পরে তখন ওপর গায়ে আর ফাঙ্গাস-ব্যাকটেরিয়া কিছু থাকবে না।

এভাবে ধরেন বাজারে যেসব শাকসবজি আসছে-সেগুলো কৃষকরা ক্ষেত থেকে নিয়ে গিয়ে হয়ত খালে-নর্দমার পানিতে ধুয়ে নিয়ে আসছে। এবং শিল্পবর্জে যেগুলো নদী-খালে আসছে সেসব পানিতে ধুয়ে এনে বাজারে বিক্রি করছে-ভোক্তারা তো তা বুঝতে পারছেন না। সেক্ষেত্রে আমরা মেশিনারিজ ডেভেলপ করেছি। গাজর-মুলা আর হাত দিয়ে পরিষ্কার করা লাগবে না। এভাবে ফসল হার্ভেস্ট থেকে স্টোরেজ পর্যন্ত প্রতিটি স্তর নিয়ে গবেষণা করে সর্বোত্তম উপায় বের করেছেন আমাদের গবেষকরা, যাতে ফলন ঘাটতি থেকে শুরু করে সবক্ষেত্রে কৃষকরা লাভবান হতে পারেন।

বহুমাত্রিক.কম : খামার যাত্রিকীকরণের পথে কতদূর এগিয়েছি আমরা-

ড. মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন : আপনি দেখে থাকবেন পাওয়ার টিলারের ব্যবহার এখন অনেক বেড়েছে। অদূর ভবিষ্যতে সেই সব প্রযুক্তি আসবে যাতে মেশিনই সব করতে পারে। আমাদের যেসব ছেলে-মেয়েরা পড়ালেখা শেষ করে বেকার বসে আছে, যান্ত্রিকীকরণের সুবিধার কারণে তারা নিজেরাই উদ্যোগ নিয়ে আত্মকর্মসংস্থানের পাশাপাশি কৃষিতে অবদান রাখতে পারেন।

বহুমাত্রিক.কম : খাদ্যের বৈচিত্র্যকরণ বা প্রধান খাদ্যে নির্ভরতা কমাতে কোনো গবেষণা হচ্ছে কী?

ড. মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন : আমাদের চিন্তা আছে। সেটা হচ্ছে খাদ্য উৎপাদনে চালে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ। আলুতে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এই আলুকে কিভাবে খাদ্যতালিকায় বেশি করে আনা যায়-সেই চিন্তা করা হচ্ছে। ভুট্টার কিছু ব্যবহার আছে গমের সঙ্গে মিশ্রণ করে ফুড ইন্ড্রাষ্ট্রিতে ব্যববহার হচ্ছে। আলু মূরত সবজি হিসাবে খাই। পৃথিবীতে অনেক দেশ আছে আলু প্রধান খাদ্য। সেক্ষেত্রে বেকারিতে যদি আমরা সেধরণের প্রোডাক্ট করতে পারি তাহলে নিউ জেনারেশন আগ্রহী হবে এতে। এভাবে সময়ের সঙ্গে খাদ্য বৈচিত্র্য আনতে কৃষি বিজ্ঞানীরা কাজ করে যাচ্ছেন।

বহুমাত্রিক.কম : নদী ভাঙ্গনে চর জাগছে। সেইসব ভূমিকে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কোনো গবেষণা আছে কী?

ড. মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন : চরে সেচ ও যোগাযোগ সমস্যা আছে। সেখানকার বাস্তবতা মাথায় রেখে নির্বাচিত কিছু খাদ্যশষ্য সেখানে নিয়ে যেতে চাই আমরা। গম, ভুট্টা সেখানে নিয়ে গেছি, যেহেতু এগুলোতে ধানের চেয়ে কম পানি লাগে। তিনবার সেচ দিলেই ভুট্টা আবাদ করা যায়। তারপর আমরা খরা সহিষ্ণু ভুট্টার জাতও উদ্ভাবন করেছি বারি হাইব্রিড ভুট্টা১৩, যা একটি সেচ দিয়ে উৎপাদন করা সম্ভব। সেই ভুট্টার রঙটি সাদা, যার কারণে ক্যারেটিনের একটু ঘাটতি আছে কিন্তু অন্যসব খাদ্য উপাদান ঠিক আছে। গমের সাথে মিশিয়ে এটি খেতে পারি আমরা।

সেদিক থেকে চরাঞ্চলে যেখানের সেচ সুবিধা অপ্রতুল সেখানে এই ভুট্টা আবাদ করা যেতে পারে। মুগ-মশুরসহ গোটা রবিশষ্যই চরে করা যাবে। কারণ এগুলো স্বল্প সেচেই করা সম্ভব। সবজির মধ্যে টমেটো করতে পারবে, কুমড়া করতে পারবে, বেগুন করতে পারবে। এখন খরিপ মৌসুমেও পেয়াজ উৎপাদন হয় চরে। পূর্বে পেয়াজ নিয়ে যে রাজনীতি ছিল-তা কিন্তু এখন আর নেই। দাম সাধ্যের মধ্যে।

বহুমাত্রিক.কম : গবেষণা প্রতিষ্ঠান সমূহে বিষয়ভিত্তিক গবেষণা বেড়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে আন্তসংযোগ কতটা বেড়েছে-

ড. মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন : বর্তমানে সম্প্রসারণ বিভাগের সঙ্গে গবেষণা প্রতিষ্ঠানের চমৎকার আন্তঃসংযোগ রয়েছে। আমরা কোনো ভ্যারাইটি ডেভেলপ করার সঙ্গে সঙ্গে ডিএই-কে (কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর) দিয়ে দিই। সফল ডেমনস্ট্রেশনের পর বিএডিসিকে দিয়ে দেওয়া হয় বীজ উৎপাদনের জন্য। আমার তো মনে হয়, এখন রিসার্চ, এক্সটেনেশন ও বিএডিসি এক প্ল্যাটফর্মে চলে এসেছে। এখন সমন্বয় অনেক বেড়েছে।

বহুমাত্রিক.কম : সাম্প্রতিক সময়ে ধান ও গমে ব্লাস্ট রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এনিয়ে গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো কী করছে?

ড. মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন : গত বছর প্রথম দেশে গমে ব্লাস্ট পাই আমরা। মূলত আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণেই ঘটনাগুলেঅ ঘটছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে। আগে যেমন শীতকালে বৃষ্টি একেবারেই হতো না। গত বছর হঠাৎ করেই গমের ফ্লাওয়ারিং স্টেজে বৃষ্টি হয়। বৃষ্টি হলেই তাপমাত্রা বাড়ে, বাতাসে হিমিডিটিও বাড়ে। সেকারণে গতবছর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে পেতে থাকলো। আর ব্লাস্ট ফাঙ্গাসটা বিস্তারের উপযোগী পরিবেশ পেয়ে গেল। যেটা অন্য বছর বৃষ্টি না হওয়ার কারণে ফাঙ্গাসটা নেচারে থাকলেও তা ফসলকে আক্রান্ত করে না। এবছর একই সময়ে আবার হয়েছে। এই রোগটার সঙ্গে আমরা অতোটা পরিচিত না। আমরা অতি সতর্কতার সঙ্গে গবষণা করছি। যখনই আক্রমণ হয়েছে তখনি স্প্রে করে দেওয়া হয়েছে। সেকারণে গমের ব্লাস্টে এবছর এত ক্ষতি হয়নি। এবছর ধানেও ব্লাস্টের সংক্রমণ হয়েছে। খুব বেশি যে ক্ষতি হয়েছে তা কিন্তু না। ব্লাস্ট সহনীয় জাত পৃথিবীর কোথাও নাই। তবে আশার কথা গমের ক্ষেত্রে ব্লাস্ট প্রতিরোধী গমের তিনটি জাত আমরা চূড়ান্ত করে ফেলেছি।

বহুমাত্রিক.কম : একটি কথা চালু আছে ব্রাজিল থেকে পচা-মানহীন গম আমদানি করার ফলে সেখান থেকে এ রোগের জীবাণু বিস্তার লাভ করেছে। আপনি কী মনে করেন?

ড. মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন : এই তথ্যাটি মোটেও সঠিক নয়। আমি তখন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এর পরিচালক(গবেষণা)ও দায়িত্বে। তখন দেড় কেজি স্যাম্পল আমার কাছে পাঠানো হয়েছিল। আমি ঘন্টা মধ্যে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রিপোর্ট পাঠিয়ে দিয়েছি। কোনো কিছু পাওয়া যায়নি।

ব্লাস্টের ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীদের অভিমত, ব্রাজিল থেকে আনা গমে যদি জীবাণূ থেকে থাকে-তাহলে বলতে হবে সেই গমটা তো কেবল বাংলাদেশেই আমদানি হয়নি-পৃথিবীর বহু দেশেই আমদানি হয়েছে। এই রোগের জীবাণু প্রকৃতিতে আছে কিন্তু বিস্তার লাভের সুযোগ সব সময় পায়না। খুব যে মারাত্মক মনে করছি না। বলতে পারি আমরা এ রোগ মোকাবেলায় সক্ষম। গমের ব্লাস্ট সহনশীন জাত অচিরেই অবমুক্ত হয়ে যাবে মাঠে। উদ্ভাবিত জাত সমূহ আমরা বলিভিয়াতে মাঠ সমীক্ষা চালিয়েছিলাম পর পর দু’বছর। যেখানে বছরে তিনবার ব্লাস্ট হয়। আমাদের জাত ভাল পারফর্ম করেছে। কৃষকদের সচেতনতাও বেড়েছে।

বহুমাত্রিক.কম : আমাদের প্রাণিসম্পদ গবেষণা কতদূর এগিয়েছে?

ড. মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন : লাইভস্টক ও ফিশারিজ যেহেতু আমাদের পার্ট তাই আমরা এসংক্রান্ত জোরদারে বিভিন্ন প্রকল্প নিচ্ছি। ভিয়েতনামের কই মাছে মড়ক দেখা দিয়েছিল, তখন আমাদের একজন বিজ্ঞানী একটি ইঞ্জেকশন বের করেন তা দেওয়ার পর আর কোনো সমস্যা হয়নি। আমাদের গরু-ছাগল-মহিষ-ভেড়ার দেশি জাত উন্নয়ন ও তা সম্প্রসারণ জরুরি।

বহুমাত্রিক.কম : কৃষি গবেষণায় এখন কোন বিষয়গুলো অগ্রাধিকার পাচ্ছে?

ড. মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন : মূলত খাদ্যশষ্যে। আমরা ধান ও গমের নতুন জাত অবমুক্ত করছি অচিরেই। যে ধানে চাল অপেক্ষাকৃত বেশি হবে। সেটা কাটারিভোগের মত সুগন্ধী না হলেও ঝরঝরে হবে।

বহুমাত্রিক.কম : জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় কৃষি গবেষণায় কী অগ্রাধিকার পাচ্ছে?

ড. মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন : আমরা এক্ষেত্রে সমন্বিত গবেষণায় জোর দিচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণা প্রতিষ্ঠান একযোগে গবেষণা পরিচালনা করলে বেশি ফল পাওয়া যাবে। গবেষণার ক্ষেত্রে লবনাক্ত সহনশীল যেকোনো ফসলের জাত আমরা শনাক্ত করছি। যেমন মোটর লবনাক্ত সহনশীল। গবেষকরা চেষ্টা করছেন এসব উপাদান ধানে কিভাবে ঢুকিয়ে দেওয়া যায়।

বহুমাত্রিক.কম : গবেষক হিসাবে বিশেষ কোনো ইচ্ছা বা পরিকল্পনা-

ড. মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন : আমার একটি ইচ্ছা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের সঙ্গে বিএআরসিকে ট্যাগ করা। মানে তারা আমরা যৌথভাবে গবেষণা করা। আমাদের ক্রপ আছে, টেকনোলজি আছে, তাদের আছে ল্যাব। একযোগে কাজ করলে কৃষির অনেক সম্ভাবনায় আমরা দ্রুত অগ্রসর হতে পারবো। ভবিষ্যতে এমন প্রকল্প থাকতে পারে সেখানে তারা থাকলো আমরাও থাকলাম। তাতে কাজটা সুন্দর হবে। আমাদের পুষ্টিতে অনেক ঘাটতি আছে।

তিন লক্ষ্য অর্জনে অগ্রাধিকার দিচ্ছে বিএআরসি : নির্বাহী চেয়ারম্যান

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer