Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ৫ ১৪৩১, শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪

‘সন্ত্রাসী দল বিএনপির সাথে কোন আলোচনা হতে পারে না’

বহুমাত্রিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৩:৩৭, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

আপডেট: ০০:০০, ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯

প্রিন্ট:

‘সন্ত্রাসী দল বিএনপির সাথে কোন আলোচনা হতে পারে না’

ঢাকা : রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের সদস্যরা আগামী সংসদ নির্বাচন বর্তমান সরকারের অধীনে হবে উল্লেখ করে বলেছেন, নির্বাচন বিষয়ে সন্ত্রসী দল বিএনপি বা কারো সাথে কোন আলোচনা হতে পারে না।

তারা বলেন, পেট্রোল বোমা দিয়ে যানবাহনে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যাকারী সংগঠনের সাথে কোনরূপ আলোচনার প্রশ্নই আসে না।

গত ২৪ জানুয়ারি চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাব উত্থাপন করলে হুইপ মাহাবুব আরা বেগম গিনি তা সমর্থন করেন।

গত ২২ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদের চতুর্দশ অধিবেশন শুরুর দিন সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ সংসদে ভাষণ দেন।

রাষ্ট্রপতির ভাষণে আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আজ ২০তম দিনে সরকারি দলের শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম, টিপু মুন্সি, মো. আব্দুল হাই, সামসুল হক চৌধুরী, মো. নবী নেওয়াজ, মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী, গোলাম রাব্বানী, বেগম উম্মে রাজিয়া কাজল ও জাতীয় পার্টির এডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা আলোচনায় অংশ নেন।

আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, রাজনৈতিক, সামজিক ও অর্থনৈতিক সকল বিষয়ে বক্তব্য রেখেছেন। গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রেখে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তিনি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য দেশের মানুষের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতির ভাষণ সময়োপযোগী দিক-দর্শনমূলক। বিএনপি-জামায়াতের শাসনামলে দেশের অর্থনৈতিক মেরুদন্ড ভেঙ্গে দেয়া হয়েছিল। সে সময় দেশে জঙ্গি পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে আওয়ামী লীগের ২৫জন নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়। ওই হামলায় যারা নেতৃত্ব দিয়েছিল তাদের পুরস্কৃত করে জজ মিয়া নাটক সাজানো হয়। ওই দিন আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে ছিলো। তখন বিরোধী দলকে সংসদে কথা বলার সুযোগ দেয়া হয়নি।

বাংলা ভাই, শায়েখ আব্দুর রহমান বিএনপির শিষ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, এরা অস্ত্রসহ পুলিশ প্রহরায় ডিসির কাছে স্বারকলিপি দেয়। এসব জঙ্গিরা এহেন কোন অপকর্ম নেই যা তারা করেনি। অপারেশন ক্লিনহার্টের নামে বিএনপি-জামায়াত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের উপর নির্যাতন চালিয়েছে। ৫৭জনকে হত্যা করে। হত্যার বিষয়টি ইনডেমনিটি দেয়া হয়েছিল। আরেকটি হয়েছিল বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার রহিত করার জন্য জিয়াউর রহমান জারি করেছিলেন।

তিনি বলেন, বিএনপির সময় বিদ্যুৎ ৩ হাজার ২শ’ মেগাওয়াট এখন ১৬ হাজার মেগাওয়াট। ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন হবে। শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় আসবে। সরকারের কৃষিবান্ধব বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে দেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্ন। ধনী দরিদ্র বৈষম্য কমেছে। ৫ কোটি মানুষ নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্তে উঠে এসেছে। প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পেয়েছে। রপ্তানি আয় বেড়েছে। এখন বাজেট তৈরি করতে বিদেশের সহায়তা নিতে হয় না। বাঙালি এখন আত্মনির্ভরশীল জাতিতে পরিণত হয়েছে। বিশ্বমন্দার মধ্যেও সরকার ১ কোটি ৩৩ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। সরকারের দূরদর্শী নেতৃত্বে দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তব। যোগাযোগ ও অবকাঠামোগত খাতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।

শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, সংবিধানে না থাকার পরও রাষ্ট্রপতি সার্চ কমিটির মাধ্যমে একটি শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন। এই সিদ্ধান্তের ব্যাপারে কোন কথা বলার সুযোগ নেই। তারপরও বিএনপি তা নিয়ে কথা বলছে। এই কমিশন অবশ্যই সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সক্ষম। তারা আজিজ মার্কা বা সাদেক আলী মার্কা নির্বাচন করবে না। জিয়াউর রহমান হাঁ-না ভোটের মাধ্যমে নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছিলেন।

বিএনপি নেত্রীর নির্বাচনকালীন সরকারের দাবি সম্পর্কে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচন অবশ্যই বর্তমান সরকারের এবং শেখ হাসিনার অধীনেই হবে। তিনি কিছু তথাকথিত সুশীল সমাজের লোককে তার দাবির পক্ষে কথা বলার জন্য নিয়োগ করেছেন। তাদের কোন ষড়যন্ত্রই কাজে আসবে না। বিএনপি নাকে খত দিয়ে এই সরকারের অধীনেই নির্বাচনে আসতে হবে। ১৫ ফেব্রুয়ারি মার্কা নির্বাচন আর এই দেশে হবে না। আন্দোলনের নামে যদি মানুষ হত্যা বা নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করেন তাহলে গণপিটুনির জন্য প্রস্তুতি নিন। জনগণ এমন পিটুনি দেবে যাতে পাকিস্তানে পালানোরও পথ পাবেন না।

তিনি বলেন, দেশ ও বিদেশে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির কাল্পনিক অভিযোগ তুলেছিল। সম্প্রতি কানাডার আদালতে এই অভিযোগ নাকচ হয়ে যায়। এই ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িতদের অবশ্যই বিচার করতে হবে।

বিএনপি’র সাথে আলোচনা বিষয়ে শেখ সেলিম বলেন, যারা পেট্রোল বোমা দিয়ে যানবাহনে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করে তাদের মতো সন্ত্রাসী সংগঠনের সাথে কোনরূপ আলোচনা হতে পারে না। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার সন্তান মারা যাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী তার বাসায় গেলে তিনি নূন্যতম সৌজন্যটুকুও দেখাতে পারেননি। বিএনপি নেত্রীই আলোচনার সকল পথ বন্ধ করে দিয়েছেন।

বিএনপিকে বর্জনের আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, বিএনপিকে একটি সন্ত্রাসী দল হিসেবে আখ্যায়িত করে কানাডা ফেডারেল আদালত সম্প্রতি রায় দিয়েছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিএনপিকে বর্জন করা হয়েছে। দেশের মানুষের প্রতি আহবান আপনারাও এই সন্ত্রাসী সংগঠনকে বর্জন করুন।

তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া এতিমের টাকা মেরে খেয়েছেন। আদালতে তার নামে মামলা হয়েছে। কিন্তু তিনি নানা অজুহাতে দিনের পর দিন আদালতে যান না। আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। এদেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এতিমের টাকা মেরে তিনিও রেহাই পাবেন না।

সরকারি দলের সদস্য মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীরোত্তম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সকল লোভ-লালসার উর্ধ্বে উঠে বাংলাদেশকে একটি উন্নত-সমৃদ্ধশালী দেশে পরিণত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে দেশের যোগাযোগ খাতসহ বিদ্যুৎ জ্বালানি, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী খাতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। আর এসব উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে সুশাসন ও আইন-শৃংখলার উন্নয়ন।

নারী-শিশু নির্যাতনসহ বাল্যবিবাহ রোধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তিনি সরকারের প্রতি আহবান জানান।
জাতীয় পার্টির সদস্য জিয়াউল হক মৃধা এরশাদের মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে বলেন, একটি পিস্তল রাখার দায়ে যদি একজন সাবেক রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে মামলা হতে পারে তাহলে এতিমের টাকা আত্মসাৎ মামলায় কেন সাজা দেয়া হবে না।

তিনি গ্যাস ও বিদ্যুতের বর্ধিত দাম প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে দেশের সকল শিক্ষা ব্যবস্থাকে সরকারিকরণের আহবান জানান।

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer