Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ৫ ১৪৩১, শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪

শোনামাত্র মদের গ্লাসটা ছুড়ে দিই : অমিতাভ

বহুমাত্রিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ২০:৫৭, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬

আপডেট: ০০:০০, ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯

প্রিন্ট:

শোনামাত্র মদের গ্লাসটা ছুড়ে দিই : অমিতাভ

• মিস্টার বচ্চন, আচমকা আপনি আবির্ভূত হয়েছেন নারীবাদী মানসিকতার ধ্বজা উড়িয়ে।

অমিতাভ: দাঁড়ান, দাঁড়ান। ‘পিঙ্ক’ মোটেও নারীর ক্ষমতায়ন-য়ের বৃত্তান্ত নয়। এটা নিছক ধর্ষণের অত্যাচারিত কাহিনি নয়। এটা এমন কোনও বার্তা নিয়ে আসছে না যে, সবাই শুনুন, নারীর নিরাপত্তা সংক্রান্ত যাবতীয় আইনের খোলনলচে বদলে দিন। আমরা সমাজকে কোনও জ্ঞান দেওয়ার জন্যও পর্দায় আসছি না। যদি এই ফিল্ম দেখার পর নতুন করে কোনও বিতর্ক বা আলোচনা তৈরি হয় তাহলেই আমাদের উদ্দেশ্য সফল।

• ফিল্মের ক্যাচ লাইন কিন্তু খুব স্ট্রং। ইট উইল চেঞ্জ দ্য ওয়ে ইউ হ্যাভ ফেল্ট সো ফার। এই ছবি আপনার এত কালের ভাবনাকে চুরমার করে দেবে।

অমিতাভ: হ্যাঁ, এটা আমি লিখেছি ব্লগ-য়ে। অভিনয় করতে করতেই আমার মনে হয়েছিল এই ফিল্ম মানুষের ধারণা বদলাবে। ‘পিঙ্ক’-য়ে আমার যা সব সংলাপ আছে সেগুলো আমার সাধারণ জীবনে নিজের মনের কথা। হামেশাই এগুলো আমি বলে থাকি।

• রিপিট করছি প্রশ্নটা। হঠাৎ করে আপনি স্ট্রং ফেমিনিস্ট হিসেবে উদয় হয়েছেন।

অমিতাভ: এক্সকিউজ মি। হঠাৎ করে নয়। আগে হয়তো এই বিষয়টা নিয়ে প্রকাশ্যে আমার কথা বলার সুযোগ হয়নি। বলিনি। কোথাও কিছু নেই আমি তো ছাদ থেকে চিৎকার করে বলতে পারি না যে শোনো ভাই, সবাই শোনো, আমি নারীর সমান অধিকারে বিশ্বাসী। কিন্তু এ যাবৎ আমার কাজকর্মের দিকে এক ঝলক তাকালেই বক্তব্যটা পরিষ্কার হয়ে যাবে। আমি হলাম ইউ এন অ্যাম্বাসাডর ফর গার্ল চাইল্ড মিশন। বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও — দুটো আন্দোলনের সঙ্গেও আমি যুক্ত।

• এই যে হঠাৎ দুই নাতনিকে আপনি অনুপ্রেরণামূলক চিঠি লিখলেন। তারপর আপনার মতো প্রাইভেট মানুষ ফেসবুক পোস্ট করে সেটা পাবলিক করে দিলেন। সেটাও তো একই লাইনে।

অমিতাভ: আমি জানতাম এই প্রশ্নটা আসছে। ইয়েস, আমার মনের মধ্যে বহু বছর এই বিশ্বাসগুলো খেলা করছে। ফিল্মটা করতে করতে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ে মনে হতে থাকে, এটাকে প্রকাশ্যে আকার দেওয়া যেতে পারে। এখন আপনার মতো সাংবাদিকদের যদি মনে হয় বকলমে এটা ফিল্মের প্রচার। দ্যাট ইজ ফাইন। ভাবুন না। যা ইচ্ছে ভাবুন। আমার কোনও সমস্যা নেই।

• আপনি বারবার বলছেন, ‘পিঙ্ক’ শ্যুটিংয়ের অভিজ্ঞতা সাংঘাতিক স্পর্শ করেছে। আর কোনও ফিল্ম মনে করতে পারেন, যা তীব্র হ্যাংওভার রেখে গিয়েছিল আপনার জীবনে?

অমিতাভ: ‘পিকু’। অতি অবশ্যই ‘পিকু’। বাবা-মেয়ের সম্পর্কটা এমন ভাবে ছবিতে দেখানো হয়েছে যে, আবেগের চোরা স্রোত কোথাও না কোথাও গিয়ে ধাক্কা মারবেই।

সুজিত: আমি যে কত মহিলাকে মিট করেছি যারা এগিয়ে এসে বলেছেন, আপনি তো অবিকল আমার গল্প বানিয়েছেন। আমার বাবাও ঠিক এরকম।

অমিতাভ: আমি অনেক দিন পর সে দিন নেটফ্লিক্স দেখছিলাম। দেখি ‘পিকু’। পুরো সিনেমাটা দেখলাম। এক বছর বাদে। আজও দু’তিনটে মুহূর্ত ধাক্কা মারল।

• কোন মুহূর্তগুলো?

অমিতাভ: একটা ওই সরোদ বাজানোর সময়। তার পর বৃদ্ধের অসুস্থতার সময় মেয়ে এসে বসছে। নানান টুকরো টাকরা মুহূর্ত আছে, যেগুলো মনে থেকে যায়। আমার ‘কেবিসি’‌ হোস্ট করতে গিয়ে এ রকম এক্সপেরিয়েন্স হয়েছিল। এমন সব মানুষকে মিট করেছি, তাদের এমন বিচিত্র অভিজ্ঞতা আর ব্যাকগ্রাউন্ড জেনেছি যে রুদ্ধশ্বাস হয়ে যাওয়ার মতো। আর একটা শো হোস্ট করেছিলাম, ‘আজ কী রাত হ্যায় জিন্দেগি’। সেখানেও এমন সব চরিত্রের সঙ্গে দেখা হয়, যাদের অভিজ্ঞতাগুলো জাস্ট হা করিয়ে দেবে। ‘ব্ল্যাক’‌য়ের শ্যুটিং ছিল আর একটা অসম্ভব ইমোশনাল এক্সপেরিয়েন্স। আমরা পুরো কাস্ট এত আবেগ-বিহ্বল হয়ে পড়ছিলাম যে, সঞ্জয় লীলা বনশালি বুঝে যায় এক একদিন যত তাড়াতাড়ি শ্যুটিং শেষ করা যায় তত ভাল। ‘পিঙ্ক’‌য়ে তাই হয়েছে।

গল্পের ইনটেনসিটি এত তীব্র যে চরিত্ররা অভিনয় করতে গিয়ে নিজেরাই আবেগের হাঁটুজল ভেঙেছে। একটা কথা আপনাকে জানাতে পারি, ফিল্মে যে ক’জনকে কাঁদতে দেখবেন, একটাও কৃত্রিম চোখের জল নয়। সবাই জেনুইনলি কেঁদেছে। আরও একটা কথা বলি, ইয়ং ছেলেমেয়েগুলো যা অভিনয় করেছে না, ওরাই ফিল্মটার শ্বাসপ্রশ্বাস। আর কারও দিকে চোখ যাবে না।

সুজিত: হাঃ হাঃ হাঃ।

অমিতাভ: আমি সত্যি বলছি। লোকে বলে, আপনি বড় বিনয়ী হয়ে যান।

• ঠিক বলে।

অমিতাভ: সত্যিই ওরা জাস্ট ফাটিয়ে দিয়েছে।

সুজিত: আমি এগ্রি করি ওরা দারুণ করেছে।

• মিস্টার বচ্চনের সঙ্গে এক ফ্রেমে দাঁড়াতে অনেক বাঘা বাঘা অভিনেতাও তাদের নার্ভাসনেস ব্যক্ত করে ফেলেন। এদের অসুবিধে হল না কেন?

সুজিত: (হাসি) আমি তো এদের প্রথমে ল’ইয়ারের রোল কে করছে জানাইনি। যখন ওরা চরিত্রের মধ্যে অনেকটা ঢুকে গিয়েছে, তখন প্রথম বলি। তা ছাড়া স্যর নিজের লেভেল থেকে নীচে নেমে এসে এত সহজভাবে এদের বয়সি হয়ে গেলেন যে ব্যাপারটা ঠিক দাঁড়িয়ে গেল।

অমিতাভ: অ্যাই নীচে নেমে আসা মানে কী? আমি এমন কী হনু যে উচ্চতর লেভেলে রয়েছি? ক্যামেরার সামনে সবাই সমান। সবাই একে অপরের সহকর্মী।

সুজিত: ঠিক। লেভেল কথাটা ব্যবহার না করে আমার অন্য কিছু বলা উচিত ছিল।

• সুজিত ভুল তো কিছু বলেনি। ও স্টেচারের কথা বোঝাতে চেয়েছে।

অমিতাভ: স্টেচার আবার কী। লট অব রাবিশ। আমার কি কোনও স্পেশাল পাখনা আছে নাকি, যে আমি ওদের চেয়ে আলাদা?

• আচ্ছা, এটা কোনও বিশ্বাসযোগ্য কথা হল যে আপনার আর বাকিদের উচ্চতা এক।
অমিতাভ: এটা বিশ্বাস করতেই হবে।

• আপনি যদি এ রকম করেন তা হলে বাকি প্রশ্নগুলো জাস্ট গুলিয়ে যাবে।

সুজিত: হাঃ হাঃ হাঃ

অমিতাভ: (মৃদু হাসি)

• সাধারণত আপনি বিতর্ক বা ঝামেলা-ঝঞ্ঝাট থেকে শতহস্ত দূরে থাকেন। কিন্তু ইদানীং লুজ বল পেলে দেখা যাচ্ছে বেশ আক্রমণাত্মক।

অমিতাভ: যেমন?

• যেমন, মুম্বইয়ের একটা কাগজকে নিজের ব্লগে কঠোর প্রতি-আক্রমণ করলেন। তারপর তাদের আবার ব্যঙ্গ করে টুইট। শোভা দে-র টুইট নিয়ে সহবাগ তীব্র ব্যঙ্গের পর তাঁর পোস্টটা রিটুইট করলেন। এর পর নিজেও কিছু জুড়লেন। এটা কিন্তু সেই অ্যাংগ্রি বচ্চন।

অমিতাভ: ‘মুম্বই মিরর’‌য়ের ঘটনাটায় রিঅ্যাক্ট করতে বাধ্য হই। ওরা খুব অন্যায় করেছে ওই ছবি আর তার সঙ্গে মিথ্যে খবরটা ছাপিয়ে যে, আমার সঙ্গে সেলফি নিতে চাওয়া এক মহিলাকে রিফিউজ করেছি। সত্যিটা মোটেও তা নয়। সত্যি হল, আমার ভ্যানে কস্টিউম বদলাতে যাচ্ছিলাম। মেয়েটিকে বলি অপেক্ষা করতে। তারপর তার সঙ্গে সেলফিও তুলি। আমার টিম এখন সব সময় সঙ্গে ঘোরে। ওদের কাছে ছবিটা ছিল। সেটা দ্রুত আপলোড করে দেখিয়ে দিই, অভিযোগটা কত মিথ্যে।

• আপনি শুধু সেখানেই থামেননি। এরপর টুইট করেন ‘‘T 2358 -@MumbaiMirror .. !!!! BBBAAAAAADDUU UMMMMMBAAAAAA !!’’ বাড়ুম্বা মানে কী?
অমিতাভ ও সুজিত: (হাসি)

অমিতাভ: বড়ুম্বা। বড়ুম্বা। জাস্ট লাইক দ্যাট।

• বোঝা গেল। কিন্তু মানেটা কী?

সুজিত: স্যারের নিজস্ব (বিজয়ী) এক্সপ্রেশন (হাসি)।

অমিতাভ: মিডিয়ার সঙ্গে আর একটা গণ্ডগোল হল সুজিতের ডিরেক্ট করা একটা অ্যাড ফিল্ম শ্যুট করতে গিয়ে। টাটা স্কাই-য়ের বিজ্ঞাপনী শ্যুট। ওটা ছিল মেহবুব স্টুডিয়োতে। মিডিয়া জানত না যে, আমি স্টুডিয়োতে সে দিন যাব। ওরা অন্য কোনও কারণে গিয়েছিল। আমি আছি জেনে এ দিকটা চলে আসে। আমি তখন অ্যাড-এর ড্রেসে মেক আপ ভ্যান থেকে বেরোচ্ছি। ওরা ছবি তুলতে শুরু করে দিল। আমি হাত তুলে বারণ করে বলি, প্লিজ এই লুকটা এখন দেখানো যাবে না। ক্লায়েন্টের বারণ রয়েছে। বিজ্ঞাপন টিভিতে না আসা পর্যন্ত এই লুক বার করা যাবে না। আমি বরং আপনাদের অন্য ছবি দেব। একটু ওয়েট করুন। ফোটোগ্রাফাররা মেনে নেন। তারপর আমি ড্রেসট্রেস চেঞ্জ করে ভ্যান থেকে বেরিয়ে ওঁদের অন্য ছবি দিই। ওঁরা সানন্দে চলেও যান।

অথচ স্তম্ভিত হয়ে যাই, পরের দিন সকালে একটা ওয়েবসাইটে — পিঙ্ক ভিলা বা এ রকম কোনও নাম — তারা দিব্যি ওই বিজ্ঞাপনী ড্রেসেই আমার ছবিটা আপলোড করে দিয়েছে। এত জনের মধ্যে আর কেউ কথার খেলাপ করেনি। কিন্তু এরা করেছে। পরের দিন আমি একটা স্ট্রং মেল লিখি যে, কোথায় আমার সঙ্গত অনুরোধে সাড়া দেবেন, তা নয়, ক্লায়েন্টের সঙ্গে আমার বিশ্বাসের পারস্পরিক সম্পর্ক ভেঙে দিচ্ছেন! এটা কী ধরনের জার্নালিস্টিক এথিক্স?

ক্ষমা চেয়ে এর পর ওদের উত্তর আসে। খুবই সশ্রদ্ধ, গালভরা দুঃখপ্রকাশ। আমি সেই অ্যাপলজি নোটটা ঠিক করি, আমার ব্লগে আপলোড করে দেব। কারণ মিডিয়া থেকে অ্যাপলজি নোট পাওয়াটাই তো একটা দুর্লভ ব্যাপার। কালেভদ্রে কেউ পায়। তাই এমন ব্যতিক্রমী ব্যাপার প্রকাশ করাই উচিত।

• সোশ্যাল মিডিয়াতে আপনি এত অ্যাক্টিভ যে, অনেকে নতুন নাম দিয়েছে, ডিজিটাল বচ্চন। যত দূর জানি, আপনার ফলোয়ার সংখ্যা দু’কোটি ছাড়িয়ে গিয়েছে।

অমিতাভ: অ্যাকচুয়ালি নাউ ওটা পাঁচ কোটি ছাড়িয়ে গিয়েছে। ফেসবুক, টুইটার, ব্লগ, ইন্সটাগ্রাম — সব যোগটোগ করে।

• ভারতের সবচেয়ে বেশি সার্কুলেটেড নামী কয়েকটা কাগজ যদি ধরি — আনন্দবাজার। টাইমস অব ইন্ডিয়া। মালয়ালা মনোরমা। হিন্দু — এগুলো যোগ করেও পাঁচ কোটি হবে না। আপনার সোশ্যাল মিডিয়া রিচ তো তা হলে বিশাল।

অমিতাভ: আমার আজও মনে হয়, খবরের কাগজটা খবরের কাগজই। কোনও ব্লগ বা ফেসবুক তার বিকল্প হতে পারে না। ওই যে একটা তোড়ার মধ্যে সব কিছু পেয়ে যাওয়া, ওটা সবার খুব মনঃপূত। একটা কাগজ ধরে আছেন তার ভেতর সব ক’টা বিভাগ রয়েছে — পলিটিক্স, ফরেন অ্যাফেয়ার্স, এডিটোরিয়াল, স্পোর্টস, এন্টারটেনমেন্ট। তার আকর্ষণই আলাদা। আমি এখনও নিউজ পেপারের অকৃত্রিম ভক্ত।

• আমি জিজ্ঞেস করছিলাম টপ লেভেল পারফর্মারদের ক্ষেত্রে এত বেশি ফলোয়ার থাকা তো আধুনিক সময়ে বুলেট প্রুফ জ্যাকেটের মতো হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বড় কাগজ তার নিজস্ব আয়তন অনুযায়ী যদি আপনাকে আক্রমণও করে। আরও বড় জমিদারির অধিকারী আপনি সেটা প্রতিহত করতে পারবেন। অতীতে যে সুযোগ ছিল না। এখনকার দিনে আপনার ব্লগ বা টুইটার বা ফেসবুক আপনি দিনে যত বার ইচ্ছে ব্যবহার করতে পারেন।

অমিতাভ: ইয়েস, এই প্ল্যাটফর্ম সে দিক থেকে খুব গুরুত্বপূর্ণ। এমন প্ল্যাটফর্ম যেখানে নিজেই নিজের এডিটিং করার মালিক হওয়া যায়। কাগজের অফিসের নিউজরুমের মর্জির ওপর আমায় বসে থাকতে হয় না, যে তারা কোনটা কাটল? কী রাখল? কেউ মিসকোট করলে পরের দিন করিজেন্ডাম সত্যিই দেবে কি না, সেই অসহ্য অপেক্ষায় না থেকে পরের দশ মিনিটে আমি নিজের কারেকশনটা দিয়ে দিতে পারি যে একজ্যাক্ট আমার উদ্ধৃতি কী ছিল। আর কোথায় তার ইচ্ছাকৃত বিকৃতি ঘটানো হয়েছে।

• অতীতের চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা।

অমিতাভ: ইয়েস। আগে হত কী, এডিটরকে ফোন করা হত। তিনি যদি সমস্যাটার গভীরতা বুঝে একমত হলেন তো তাতেও রফা নেই। কারণ সংশোধনটা যে টাইপ এবং যে ফন্টে যাবে, তার আকার অরিজিনাল স্টোরির তুলনায় অনেক ছোট। সে দিক থেকে কারেন্ট ব্যবস্থাটা অনেক বেটার। যাবতীয় ফলোয়ার দ্রুত জেনে যেতে পারে রিয়্যাল পরিস্থিতি কী।

• আপনার হালফিলের আক্রমণাত্মক মনোভাবের আরও একটা প্রকাশ পাওয়া গেল অলিম্পিক্সের সময়। যখন শোভা দে-র অলিম্পিক্সের যাওয়া ভারতীয় প্রতিযোগীদের উদ্দেশে করা তাচ্ছিল্যভরা টুইটে পাল্টা টুইট করলেন বীরেন্দ্র সহবাগ। আপনি সহবাগের মন্তব্যটা শুধু রিটুইটের মাধ্যমে সমর্থনই নয়, নিজেও ব্যঙ্গশাণিত একটা টুইট করলেন। চাঁদমারি অবশ্যই শোভা দে!

অমিতাভ: হ্যাঁ। সহবাগেরটা রিটুইট করি কারণ ইট ওয়াজ টু ফানি। আর মন্তব্যটা খুব উপযুক্তও ছিল। ইট ওয়াজ অ্যাপ্ট।

• সহবাগের টুইটগুলোয় কি আপনি নিয়মিত চোখ রাখেন?

অমিতাভ: নিয়মিত দেখি।

• একটা কথা জিজ্ঞেস করি। কিছু মনে করবেন না। কোন ইস্যুতে রিঅ্যাক্ট করবেন আর কোনটায় করবেন না সেটা সম্পূর্ণ আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু খুব অবাক লাগল যখন রাজেশ খন্না এবং বলিউডের মূল স্রোতকে নাসিরউদ্দিন শাহ তীব্র আক্রমণের পরেও আপনি মুখ খুললেন না।

অমিতাভ: তার কারণ নাসিরকে আমি অভিনেতা হিসেবে খুব শ্রদ্ধা করি। আমি মনে করি, আমাদের যারা আছেটাছে তাদের ভেতর নাসির অবশ্যই একজন গ্রেট অ্যাক্টর। এখন নাসিরের একটা নিজস্ব মত থাকতেই পারে। তার মধ্যে অন্যায়ের কিছু নেই। দেয়ার ইজ নাথিং রং। আর আমার ব্যাপারে ও যা বলেছিল সেটা তো ভুল নয়। হি ওয়াজ রাইট। আমি মোটেও দারুণ অভিনেতা নই। আই অ্যাম নট আ গ্রেট অ্যাক্টর (কাষ্ঠহাসি)।

সুজিত: (মুখচোখে তীব্র অস্বস্তি)

• সুজিত, এই ফিল্মটা কি মিস্টার বচ্চনকে আগাম বার্থ ডে গিফ্ট? ১১ অক্টোবর তো এসে গেল।

সুজিত: ইটস নট আ গিফ্ট। বাট ইট ইজ আ ভেরি ভেরি ইম্পর্ট্যান্ট ফিল্ম, আমি এটুকু বলতে পারি। জীবনে আর কোনও ছবি বানাতে গিয়ে এত পরিশ্রম করতে হয়নি।

অমিতাভ: কিছু ছবি এমন হয় যেখানে দুর্ধর্ষ এনটারটেনমেন্ট। লোকে ভরপুর বিনোদন পেয়ে বাড়ি ফেরে। কিন্তু বিনোদন পেয়েই ছবির সঙ্গে তার যোগসূত্র শেষ হয়ে যায়। আর এক ধরনের ছবি আছে। যার বিউটি হল, প্রচণ্ড বিনোদন দেয়। আবার হল থেকে বেরিয়েও ভাবায়। মনকে অসাড় করে রাখে। ‘পিঙ্ক’ এই গোত্রের ছবি।

• লাস্ট প্রশ্ন। এ বারের বার্থ ডে রেজলিউশন কী? মানে কেটেছেঁটে যতটুকু বলা যায়।

অমিতাভ: আমি জানি না লোককে কেন বিশেষ বিশেষ দিনে রেজলিউশন করতে হয়। কেউ বার্থডে-তে করে। কেউ ইয়ার এন্ডিংয়ে। ভাই, আমার কথা হল, তোমার যদি কিছু সমস্যার সমাধান করতে হয়, সেটার জন্য এত ওয়েট করা কেন? বছরের মধ্যিখানেও তো করতে পারো।

• আপনি প্রয়োজনমতো বছরে যখন ইচ্ছে রেজলিউশন তৈরি করেন?

অমিতাভ: আমার আর রেজলিউশন করার মতো কীই বা গোধূলিবেলায় পড়ে রয়েছে? সব তো প্রায় শেষ। একটা সময় আমি স্মোক করতাম। ড্রিঙ্ক করতাম। তা একটা পার্টির মধ্যিখানে কেউ টিটকিরি দিয়েছিল, তুমি সিগারেট আর ড্রিঙ্কসে এত আসক্ত যে কোনও দিন ছাড়তে পারবে না। শোনামাত্র স্থির করে ফেলি, কী করব। এর পর মদের গ্লাসটা ছুড়ে দিই।

সিগারেটটা উড়িয়ে দিই। সেই শেষ। তারপর থেকে আজ পর্যন্ত দীর্ঘ চল্লিশ বছর মদ-সিগারেট কিছুই ছুঁইনি। কাজেই মোদ্দা কথা হল, রেজলিউশন করতে দিনক্ষণ লাগে না।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer