ছবি: বহুমাত্রিক.কম
ঢাকা : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে এলাকায় জীবনের যৌবনের উজ্জ্বল সময়গুলো পার করেছেন, সেখানে শেষবারের মতো এসেছেন তিনি। তবে দৃপ্তপায়ে বলিষ্ঠমূর্তিতে চিরচেনা মধুর হাসিতে নয়, এসেছেন সাদা কাফনে জড়িয়ে স্বজন-অনুরাগীদের চোখের পানিতে সিক্ত হয়ে।
বলছিলাম সদ্য প্রয়াত প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও কবি মাহবুবুল হক শাকিলের প্রিয় রাজধানী-প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিরবিদায়ের ক্ষণের কথা।
বুধবার বেলা এগারটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হয় প্রয়াত শাকিলের প্রথম জানাজা। জানাজা শেষে মাহবুবুল হক শাকিলের মরদেহ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ময়মনসিংহের পথে রওনা করে। ময়মনসিংহের বাগমারায় নিজ বাড়িতে তার মরদেহ পৌঁছলে সেখানে দ্বিতীয় জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে শাকিলের জানাজায় এসেছিলেন তাঁর রাজনৈতিক দল আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নেতা, সরকারের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী, ছাত্রলীগের নেতাকর্মী, জনপ্রশাসনের কর্মকর্তা, লেখক-সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার হাজারো মানুষ।
এসময় জানাজায় আসা শাকিল অনুরাগীদের চোখে-মুখে ছিল অভিন্ন অভিব্যাক্তি, কেন এত তাড়াতাড়ি চলে গেলেন তিনি-দেশকে যে তার আরও অনেক কিছু দেওয়ার ছিল। জানাজায় আসা মানুষদের মাঝে কেউ কেউ ব্যাক্তিগতভাবে তাঁর দ্বারা উপকৃত হয়েছিলেন। তাদের অনেকে স্মৃতি হাতড়ে ফিরছিলেন। বলছিলেন কখনো তিনি কখনো কিছু করে দেওয়ার বিনিময় গ্রহণ করেননি, এরকম উদার মনের মানুষ এসময়ে বিরল।
তারা আরও বলছিলেন, মাহবুবুল হক শাকিল হয়ত তাঁর প্রিয় শহর ছেড়ে চিরদিনের মতো বিদায় নিচ্ছেন, তবে যে মানুষগুলো তাঁর ভালোবাসা-সহযোগিতা পেয়েছেন তাদের অন্তরে চিরকাল বেঁচে থাকবেন তিনি।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টায় রাজধানীর গুলশান-২ এর হোটেল সামদাদো থেকে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
সামদাদো হোটেল কর্তৃপক্ষ জানায়, সোমবার রাতে মাহবুবুল হক শাকিল ওই হোটেলের একটি কক্ষে ছিলেন। কিন্তু মঙ্গলবার সকাল থেকে কোনো সাড়া শব্দ না পাওয়ায় দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হোটেল কর্মকর্তারা কক্ষটিতে গিয়ে শাকিলের মরদেহ দেখতে পান।
মাহবুবুল হক শাকিল অতিরিক্ত সচিব মর্যাদায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ সহকারীর দায়িত্বে পালন করছিলেন। ১৯৬৮ সালে ময়মনসিংহে জন্মগ্রহণ করা শাকিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজ বিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাস করেন।
তিনি ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন তিনি। প্রয়াত শাকিলের বাবা ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। আর মা পেশায় শিক্ষক। তাঁর আইনজীবী স্ত্রী ও একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে।
ভিডিও:
বহুমাত্রিক.কম