ছবি : বহুমাত্রিক.কম
সাভার : শখের বসে টার্কি পালন শুরু করে এখন সফলতার মুখ দেখছেন আশুলিয়ার টেঙ্গুরী কোনাপাড়া এলাকার আহাদ নূর। টার্কি খামার গড়ে তুলে তিনি এখন আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।
আশুলিয়ার শিমুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের টেঙ্গুরী কোনাপাড়া এলাকার আজিজ ব্যবপারী ছেলে আহাদ নূর।
কথা হয় তার সাথে। তিনি জানান, সামিাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ইউটিউভ এবং বিভিন্ন চ্যানেলে টার্কি সম্পর্কিত প্রোগ্রাম দেখে টার্কি পালনের আগ্রহ বাড়ে। পরে তিনি শখের বসে ৩৪টি প্যারেন্টস টার্কি কিনে লালন পালন শুরু করেন। এ থেকে প্রতি মাসে তার ৩/৪’শ উৎপাদন হতে থাকে। একপর্যায়ে তিনি রাজধানীর উত্তরার উত্তরা হ্যাচারি নামের একটি হ্যাচারির সাথে যোগাযোগ করেন ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানোর জন্য। পরে ডিম থেকে বাচ্চা ফুটিয়ে তিনি বিক্রয় করতে থাকেন। এখন তিনি সফল একজন টার্কি ব্যাবসায়ী।
বর্তমানে তার খামারে ২ থেকে ৩ মাস বয়সের ২৫০টি টার্কি বাচ্চা রয়েছে। এছাড়া আরো ৩৪টি রয়েছে প্যারেন্টস টার্কি। সব মিলিয়ে তিনি প্রতিমাসে ৫’শর মত ডিম উৎপাদন করে থাকেন। সেখান থেকে প্রায় প্রতি মাসে ৪ শতাধিক বাচ্চা উৎপাদন করে থাকেন এবং সেগুলো বাজারজাত করে থাকেন। এ থেকে তিনি প্রতি মাসে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা আয় করে থাকেন।
তিনি জানান, টার্কির রোগ-বালাই তুলনামূলকভাবে থেকে কম। ফলে সহজেই এ টার্কি পালন করতে পারছেন তিনি। তবে কোন রোগ বালাই দেখা দিলে উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসে যোগাযোগ করে তার ভ্যাকসিন সংগ্রহ করে থাকেন। এছাড়া উপজেলা থেকে ডাক্তার এসে পর্যবেক্ষণ করে যান।
টার্কি পালন করতে তেমন খরচ লাখে না জানিয়ে তিনি বলেন, প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত নরম ঘাস (যেমন- হেচি/হ্যালেন্সা ও কলমি শাক), লেয়ার বা ব্রয়লার ফিড ইত্যাদি।
শুধু আহাদ নূর নয়। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের মত সাভার ও আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় অনেকেই এখন টার্কি ব্যবসা করে লাভবান হচ্ছেন। বেকারত্ব দূর করে সেই সাথে হচ্ছেন স্বাবলম্ভীও। তবে সরকারি পৃষ্ঠপোশকতা পেলে বিদেশে রপ্তানী করে বৈদেশীক মুদ্রা অর্জন করতে পারবেন এমনটি প্রত্যাশা টার্কি চাষীদের।
টার্কি উদ্যোক্তা এবং বাংলাদেশ টার্কি বার্ড ডেভলপমেন্ট এসোসিয়েশন এর সিনিয়র সহ-সভাপতি শাকিল মাহমুদ জানান, বাংলাদেশে টার্কি পালনের উজ্জল সম্ভাবনা রয়েছে। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের বেকার যুবকেরা টার্কি পালন করে তাদের ভাগ্য বদল করেছেন। দেশের প্রত্যেকটা অঞ্চলে ব্রয়লার মুরগীর মত টার্কি এক সময় বাজার দখল করবে এবং ব্রয়লার মুরগীর মত সকলেই এটা গ্রহণ করবেন বলে আশাবাদী।
তিনি জানান, গত বছর আমরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের টার্কি চাষী/খামারীদের নিয়ে গাজীপুরে আমরা দেশের প্রথম টার্কি উৎসব উদযাপন করেছি। সেখানে আমরা খামারীদের ব্যাপক সারা পেয়েছি।
তিনি আরো জানান, আগামী সেপ্টেম্বরে রাজধানীর খামার বাড়িতে এ শিল্পের প্রচার ও প্রসারের জন্য সারা দেশের খামারিদের নিয়ে একটি মিলন মেলার আয়োজন করা করতে যাচ্ছি। যে মিলন মেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে মাননীয় প্রানী সম্পদ মন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ উপস্থিত থাকবেন।
উল্লেখ্য, ১৭শ সালে যুক্তরাজ্য ক্রস ব্রিডিংয়ের মাধ্যমে টার্কি মুরগীর জাত উৎপাদন করা হয়। উত্তর আমেরিকা টার্কির উৎপত্তিস্থল। ইউরোপসহ পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই টার্কি পালন করা হচ্ছে। অনেকটা খাসির মাংসের মতই মাংসের স্বাদ। এ মাংসে অধিক পরিমানে প্রোটিন ও কম পরিমানে চর্বি রয়েছে। সুস্বাদু এই মুরগীর রোগ বালাইও কম।
বহুমাত্রিক.কম