ঢাকা : বিশ্বখ্যাত লেনেভো (Lenovo) ব্র্যান্ডের নামে বিক্রিত দু’টি ল্যাপটপ কিনে চরম ভোগান্তির শিকার দুই ক্রেতা ক্ষতিপূরণের জন্য উকিল নোটিস করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। গাজীপুরের বাসিন্দা সাংবাদিক সৈয়দ মোকছেদুল আলম (সৈয়দ লিটন) ও কাজী মোসাদ্দেক হোসেন এ বিষয়ে তাদের ভোগান্তি সম্পর্কে ওই তথ্য জানান। তাদের কাছে বিক্রিত ল্যাপটপ চায়নায় তৈরি নিন্মমানের পণ্য বলে বদ্ধমূল ধারণা।
তারা অভিযোগ করেন, কেনার দুই আড়াই মাস পর থেকেই তাদের ল্যাপটপের কীবোর্ড অকার্যকর হয়ে যায়। এর আগে কাজ করতে গেলেই স্টার্ট না হওয়া, হঠাৎ পাওয়ার অফ হয়ে যাওয়ার সমস্যা দেখা দেয়। সৈয়দ লিটন তার ক্রয় ভাউচার দেখিয়ে বলেন, গত ৩ মার্চ গাজীপুর শিববাড়িতে অবস্থিত ভাওয়াল কম্পিউটার এন্ড ইলেক্ট্রনিক্স থেকে বিশ্ব বিখ্যাত লিনোভো ব্র্যান্ডের একটি ল্যাপটপ (LENOVO IP310 INTEL CORE I3-6100U) কিনেন তিনি। চায়নায় তৈরি ওই ল্যাপটপটি কাজের সময় নানা বিঘ্ন ঘটতে থাকে।
এ কারণে সপ্তাহে অন্তত দুই-একবার সার্ভিসিং করিয়ে কাজ করতে হতো। মাস দুই পর কীবোর্ডের বিভিন্ন কী অকেজো হয়ে আবার ঠিক হয়ে যেতো। এভাবে চলার সপ্তাহ দুই পর থেকে কীবোর্ডের বিভিন্ন কী সম্পূর্ণ অকার্যকর হয়ে পড়ে। এবং পাওয়ার অন করলেই ক্যাপলক কী স্বয়ংক্রিয়ভাবে লক কানেক্ট হয়ে থাকতো। ফলে ল্যাপটপটি প্রকৃত অর্থে অকার্যকর হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় ওয়ারেন্টি থাকায় বিক্রেতাকে ওই বিষয়ে অভিযোগ করেন ক্রেতা সৈয়দ লিটন। ভাওয়াল কম্পিউটার থেকে তাকে ল্যাপটপটির সরবরাহকারী বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান রাজধানী ঢাকার উত্তরা রাজ-লক্ষ্মী কমপ্লেক্স এর পাশে আর কে ভবনের তিন তলায় অবস্থিত গ্লোবাল ব্র্যান্ড প্রাইভেট লিমিটেড-এ যোগাযোগ করতে বলেন।
গত ১৩ জুলাই সেখানে গেলে ‘সার্ভিসিং কম্লেইন-ওয়ারেন্টি/সার্ভিসিং প্রোডাক্ট রিসিভ’Ñশাখায় ল্যাপটপটি সার্ভিসিং এর জন্য রেখে দেয়। সেখান থেকে ৫-৭ দিনের মধ্যে ল্যাপটপটি ঠিক করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেয়। কিন্তু এক মাসের অধিক সময় ধরে ‘আজ না কাল’ বলে কেবল সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান। ওয়ারেন্টির নামে চরম ভোগান্তিতে ফেলেন তারা। ফোনে যোগাযোগ করলে একেক সময় একেক লোক ধরেন এবং পরে খবর জানাচ্ছি বলেও সময় ক্ষেপণ করতে থাকে। চলতি ১৯ আগস্ট পর্যন্ত ল্যাপটপটি ঠিক করে দেয়নি সরবরাহকারী বিক্রেতা ওই প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। তিনি আরো অভিযোগ করেন, এভাবে হয়রানি ও প্রতারণা করায় পেশাগত ও আর্থিকভাবে অপূরণীয় ক্ষতির শিকার হয়েছেন তিনি। এ জন্য ক্ষতিপূরণ দাবি করে উকিল নোটিস পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি।
এদিকে, ডেইলি অবজারভার পত্রিকার গাজীপুর প্রতিনিধি কাজী মোসাদ্দেক হোসেন একই অভিযোগ করেন। তিনি জানান, গাজীপুর শিববাড়িতে অবস্থিত ডিকো নামক স্থানীয় দোকান থেকে লিনোভো ব্র্যান্ডের নামে বিক্রিত একটি ল্যাপটপ কিনে একই রকম প্রতারণা ও নানা রকম হয়রানির শিকার হন তিনি। কেনার দুই মাস পরেই কীপ্যাড অকেজো হয়ে যায়।
ওয়ারেন্টির সার্ভিসিং সেন্টারে দিলে সারাই করতে এক সপ্তাহের সময় লাগবে জানায় তারা। কিন্ত সরবরাহকারী বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান দেড় মাসের অধিক সময় ঘুরিয়ে নানাভাবে হয়রানি করেন এবং তারপর ল্যাপটপ সার্ভিসিং করে পাঠান। এ কারণে তিনি পেশাগতভাবে অপূরণীয় আর্থিক ক্ষতির শিাকার হয়েছেন। তাই এর ক্ষতিপূরণ চেয়ে তিনিও সংশ্লিষ্ট ডিলার, লিনোভো কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ও বিক্রেতাকে উকিল নোটিস পাঠাবেন।