ছবি : সংগৃহীত
খুলনা : খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে সোমবার এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের উচ্চশিক্ষা মানোন্নয়ন প্রকল্প (হেকেপ) কর্তৃক আয়োজিত ‘ফসলের রোগ নির্ণয় ও তার প্রতিকার’ শীর্ষক এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মশালায় বক্তারা বলেন, দেশে প্রতিবছর মোট উৎপাদিত শস্যের ১০-১৫ ভাগ বিনষ্ট হয় কেবলমাত্র নানা রোগে। বর্তমানে ফসলের ডাইভার্সিটি, পর্যায়ক্রম ও নিবিড়তা বেড়ে যাওয়ায় ১৯৭২ সালের তুলনায় ফসলের রোগের সংখ্যা ৩-৫ গুণ বেড়েছে। এবছর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ধানের ব্লাস্ট রোগের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলা হয় রোগ সনাক্তকরণ ও কৃষকের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে কিছুটা বিলম্বের কারণে ক্ষতির মাত্রা বেশি হয়েছে। রোগবালাই সম্পর্কে কৃষকদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি এবং প্রতিরোধ ব্যবস্থায় সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ রোগ নির্ণয় ও প্রতিকারেও জোর দেন বক্তারা।
এতে বলা হয়, দেশে উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য সরকারি বেসরকারি এবং আমদানিকৃত শস্যবীজের বহুমাত্রিক ব্যবহারে মাটির উর্বরা ও প্রতিরোধ শক্তি হ্রাস পাচ্ছে। ফলে রোগের প্রকোপ ও ঝুঁকি বাড়ছে। ফসলকে রোগবালইমুক্ত রাখতে রাসায়নিক ওষুধের চেয়ে প্রকৃতিক উপায়ে প্রতিরোধ ও প্রতিষেধকের ওপর জোর দিতে হবে। রোগের আক্রমণের সাথে সাথে উপুযক্ত ব্যবস্থা নিতে পারলে ক্ষতির মাত্রা সীমিত রাখার পাশাপাশি তা ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকিও রোধ করা সম্ভব। তবে ভবিষ্যত নিরিখে প্রতি উপজেলায় প্লান্ট প্যাথলজি ক্লিনিক স্থাপনেরও দাবি জানান বিশেষজ্ঞরা।
আর তা হলে দেশে ১০-১৫ শতাংশ ফসলকে রোগের হাত থেকে রক্ষা সম্ভব হবে। পরে টেকনিক্যাল সেশনে বিভিন্ন রোগ, তার নির্ণয় ও প্রতিকার কৌশল সম্পর্কে নিবন্ধ উপস্থাপন করা হয়। কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ডিসিপ্লিন প্রধান ও কৃষি সম্প্রসারণ, বীজ প্রত্যায়ন এজেন্সিসহ সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিনের শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
কর্মশালায় ৪০ জন কৃষক, ৬ জন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা, ৩ জন কীটনাশকের ডিলার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ল্যাব টেকনিশিয়ান ও হেলপারবৃন্দ ফসলের রোগ চেনা ও তার দমনের বিষয়ে হাতে কলমে শিক্ষা লাভ করেন।
প্রকল্পের উপ-প্রকল্প ব্যবস্থাপক প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস এর সভাপতিত্বে উক্ত কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের শিক্ষক প্লান্ট প্যাথোলজিষ্ট মোসাঃ সাবিহা সুলতানা। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জীববিজ্ঞান স্কুলের ডিন অধ্যাপক এ কে ফজলুল হক, এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের প্রধান অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ বশীর আহমেদ এবং ডিসিপ্লিনের জেষ্ঠ্যতম শিক্ষক অধ্যাপক ড. সঞ্জয় কুমার অধিকারী।
কর্মশালার মূখ্য আলোচক ছিলেন এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক প্লান্ট প্যাথোলজিষ্ট মোঃ রেজাউল ইসলাম।
বহুমাত্রিক.কম