Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ৯ ১৪৩১, মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪

রুশ সীমান্তে সর্বাধিক সেনা মোতায়েন ন্যাটোর

বহুমাত্রিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:৪৭, ২৭ অক্টোবর ২০১৬

আপডেট: ০০:০০, ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯

প্রিন্ট:

রুশ সীমান্তে সর্বাধিক সেনা মোতায়েন ন্যাটোর

ঢাকা : দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন ও তার মিত্রদের মধ্যকার স্নায়ুযুদ্ধের অবসানের পর রুশ সীমান্তে সর্বোচ্চ সংখ্যক যুদ্ধ সেনা মোতায়েন করতে যাচ্ছে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো (নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাজেশন)।

রাশিয়ার আগ্রাসন থেকে সুরক্ষার কথা বলে আগেভাগেই বিপুল পরিমাণ সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। গতকাল বুধবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক খবরে এ তথ্য জানান হয়েছে।

সিরিয়ার উদ্দেশ্যে রাশিয়ার বিমানবাহী যুদ্ধজাহাজ পাঠানর পর গত জুলাইয়ে ন্যাটো সম্মেলনে স্বাক্ষরিত এক চুক্তি অনুসারে আগামী বছরের শুরুতে রুশ সীমান্তে সেনা মোতায়েনের কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের আগেই সেই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে চাইছে জোটটি।

প্রাথমিকভাবে রাশিয়ার সঙ্গে পোল্যান্ড, এস্তোনিয়া, লাটভিয়া ও লিথুয়ানিয়া সীমান্তে সেনা মোতায়েন করছে ন্যাটো। আর এই পদক্ষেপের মাধ্যমে জোটটি রাশিয়ার সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী বিরোধে জড়ানর প্রস্তুতি নিচ্ছে।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জোট সদস্য দেশগুলোকে এই সামরিক পদক্ষেপে সেনা পাঠানর আহবান জানিয়েছে ন্যাটো। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী চার হাজার সেনা সমাবেশের এই পদক্ষেপে যুক্তরাষ্ট্রও সাড়া দেবে বলে আশা করছে ন্যাটো। কারণ ২০১৪ সালে রাশিয়া ক্রিমিয়াকে নিজেদের সঙ্গে যুক্ত করে নেয়। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ইউরোপে সাবেক সোভিয়েত রাষ্ট্রগুলোর ক্ষেত্রেও একই কৌশল নিতে পারে রাশিয়া। তাই আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখতে চায় ন্যাটো। এই পদক্ষেপে ফ্রান্স, ডেনমার্ক, ইতালিসহ অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রও সেনা পাঠাবে বলে ন্যাটো মনে করছে। চারটি যুদ্ধ ইউনিটের নেতৃত্ব দেবে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ব্রিটেন ও কানাডা। যুদ্ধ ইউনিটগুলো সামরিক ট্যাংক থেকে ড্রোনে সজ্জিত থাকবে।

ন্যাটো’র সেক্রেটারি জেনারেল জেনস স্টোলেনবার্গ বলেছেন, এই পদক্ষেপ আটলান্টিকের দুই পারের সম্পর্কের একটি স্পষ্ট বহিঃপ্রকাশ। তবে কূটনীতিকরা বলছেন, এটা মার্কিন প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিও একটা বার্তা যিনি অভিযোগ করছেন ইউরোপীয় মিত্ররা তাদের প্রতি জোটের প্রাপ্য পরিশোধ করছে না। রয়টার্সের ওই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, এই যুদ্ধ ইউনিটগুলোকে ন্যাটোর ৪০ হাজার সেনার একটি ‘স্টং-র্যাপিড-রিঅ্যাকশন ফোর্স’ সহায়তা করবে। যুদ্ধের আশঙ্কা দেখা দিলে আরো সেনা পাঠান হবে।

মূলত রাশিয়াকে কোণঠাসা করার নতুন কৌশলের অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে যেখানে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা, আকাশ টহল ও সাইবার হামলার বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষার ব্যবস্থাও যুক্ত হবে। তবে কৃষ্ণ সাগর অঞ্চলে একই ধরনের কৌশল নিতে হিমশিম খাচ্ছে ন্যাটো। ইতোমধ্যে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপে এরদোয়ান রাশিয়ার সামরিক উপস্থিতির কারণে একে ‘রাশিয়ান লেক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। ন্যাটো আশা করছে, রোমানিয়া, বুলগেরিয়া এবং তুরস্ক নৌ ও আকাশ টহল জোরদারে নতুন পরিকল্পনা পেশ করবে।

মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের সাম্প্রতিক সামরিক উপস্থিতির কারণে ইতোমধ্যেই একটু বেগ পেতে হয়েছে রাশিয়াকে। তবে ন্যাটো প্রধান স্টোলেনবার্গ বলছেন, এটা প্রতিরক্ষা। কোনো যুদ্ধের উস্কানি নয় বরং যুদ্ধ প্রতিহত করতেই এই ব্যবস্থা।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ইউরোপ সীমান্তবর্তী কালিনিনগ্রাদ এলাকায় পরমাণু ক্ষমতাসম্পন্ন ক্ষেপণাস্ত্র ‘ইস্কান্দর’ মোতায়েন করে রাশিয়া। এ কারণে সীমান্তবর্তী ন্যাটো জোটভুক্ত দুই দেশ পোল্যান্ড ও লিথুয়ানিয়া বেশ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে। পোল্যান্ড সরকার এই ঘটনাকে ‘বিপদসংকেতপূর্ণ’ বলে জানায়। আর লিথুয়ানিয়ার কর্তৃপক্ষ বলেছে, এই ঘটনা আন্তর্জাতিক পারমাণবিক অস্ত্র চুক্তির লঙ্ঘন। যদিও রাশিয়া জানায়, সারা দেশেই সামরিক বাহিনীর জন্য নানা ধরনের প্রশিক্ষণ মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। কালিনিনগ্রাদও এর ব্যতিক্রম নয়।

স্পেনের বন্দর থেকে রুশ রণতরীর জ্বালানি সংগ্রহে উদ্বেগ ন্যাটোর

স্পেনের একটি বন্দর থেকে রুশ রণতরীকে জ্বালানি নেওয়ার অনুমতি দেওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ন্যাটো। রাশিয়ার রণতরীতে জ্বালানি সরবরাহ না করার জন্য ন্যাটো আহ্বান জানিয়েছে। তীব্র সমালোচনার মুখে উত্তর আফ্রিকার সিউটা থেকে জ্বালানি সরবরাহের অনুমতির সিদ্ধান্ত স্পেন খতিয়ে দেখছে বলে বিবিসি’র এক খবরে বলা হয়েছে। ব্রিটেন বলেছে, এমন অবস্থা চলতে থাকলে তারা সত্যিই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়বে। সিউটা বন্দরটি স্পেন-মরক্কো সীমান্তে অবস্থিত।

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer