ঢাকা : মুক্তিযুদ্ধে নবম সেক্টরের সুন্দরবন সাব সেক্টর কমান্ডার মেজর (অব.) জিয়া উদ্দিন আহম্মেদকে মঙ্গলবার পিরোজপুর শহরের পারিবারিক কবরস্থানে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে।
দুপুর ১২টায় শহরের পাড়েরহাট সড়কে পারিবারিক কবরস্থানে পিতা আফতাব উদ্দিন আহমেদ ও মাতা শাহিদা বেগমের কবরের পাশে তাঁকে দাফন করা হয়।
যশোর সেনা নিবাসের ৫৫ ডিভিশনের ২১ পদাতিক ব্রিগ্রেডের ব্রিগ্রেড কামান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাইনুর রহমান দাফন শেষে সেনা বাহিনীর পক্ষ থেকে মেজর (অব.) জিয়াউদ্দিন আহমেদকে শেষ শ্রদ্ধা জানান। পরে সেনা বাহিনীর পক্ষ থেকে তিনি কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এর আগে আজ সকাল ৯ টায় তার প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আফতাবউদ্দিন কলেজে ও পরে সকাল ১০ টায় শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য তার মরদেহ রাখা হয়।
সেখানে মুক্তিযোদ্ধা সহ সর্বস্তরের হাজার হাজার মানুষ তাদের প্রিয় নেতাকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
সোমবার বিকালে তার মরদেহ পিরোজপুর নিয়ে আসার পর সন্ধ্যা সোয়া ৬ টায় পিরোজপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
জানাজার আগে জেলা প্রশাসক মো: খায়রুল আলম সেখের উপস্থিতিতে রাষ্ট্রীয় সম্মান জানানো হয়। পরে মেজর জিয়াউদ্দিনের কফিনে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি-জেপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায়।
নামাজে জানাজায় উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ ও বন মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু, বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য মীর শওকত আলী বাদশা, পিরোজপুর পৌরসভার মেয়র মো: হাবিবুর রহমান মালেক, বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাষ্টের সদস্য সচিব শেখ হাফিজুর রহমান খোকন, জেলা উদীচী সভাপতি এম এ মান্নান, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান খালেক, জেলা শিল্পকলা একডেমীর সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল আহসান গাজীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ।
এই বীর মুক্তিযোদ্ধার নামাজে জানাজায় অংশ নিতে সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, মংলা, শরণখোলা, বরগুনা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠী ও গোপালগঞ্জসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা থেকে মুক্তিযোদ্ধাসহ কয়েক হাজার মানুষ পিরোজপুরে উপস্থিত হয়।
শুক্রবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। জিয়াউদ্দিনের মরদেহ শনিবার রাতে ঢাকায় এসে পৌঁছায়।
রোববার বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা শেষে বিকাল ৩টায় জিয়াউদ্দিনের কফিন সর্বস্তরের জনগণের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য নেয়া হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে।
উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধে ৯ নম্বর সেক্টরে সেক্টর কমান্ডার মেজর এম এ জলিলের অধীনে সাব-সেক্টর কমান্ডার হিসেবে সুন্দরবন অঞ্চলে মুক্তিবাহিনীর নেতৃত্ব দেন মেজর জিয়াউদ্দিন।