Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ১১ ১৪৩১, বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪

রানা প্লাজা ধসের ৪ বছর : ওয়েবসাইট উদ্বোধন

বহুমাত্রিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ০১:১০, ২৩ এপ্রিল ২০১৭

আপডেট: ০০:০০, ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯

প্রিন্ট:

রানা প্লাজা ধসের ৪ বছর : ওয়েবসাইট উদ্বোধন

ঢাকা : রানা প্লাজা ধসের চার বছরপূর্তিতে ৩ দিনব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধন হয়েছে। শনিবার গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি উদ্যোগে Rana Plaza Massacre: An Anthology : www.athousancries.org নামে ওয়েবসাইটটির উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়।

দু’বছর আগে প্রকাশিত গ্রন্থ ২৪ এপ্রিল: হাজার প্রাণের চিৎকার এর ইংরেজি অনুবাদ নিয়ে ওয়েবসাইটটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার অডিটোরিয়ামে উদ্বোধন করেন রানা প্লাজার নিহত শ্রমিক সাগরিকার বোন বকুল খাতুন।

সাগরিকা ইথারটেক্স গার্মেন্টের সুইং অপারেটর ছিল। এস এসসি পরীক্ষা শেষে নাটোর থেকে পরিবারের সাথে ঢাকায় এসে রানা প্লাজায় কাজ নেয় সাগরিকা। মৃত্যুর পর তার পরীক্ষার ফলাফল বের হয় জিপিএ ৫ পেয়ে পাশ করে সাগরিকা কিন্তু জানা হয় না সেই সাফল্যের গল্প। তার এসব কথা বলেন তার ছোট বোন বকুল খাতুন।

রানা প্লাজা এবং বাংলাদেশের শ্রমিকদের জীবন ও ইতিহাস দুনিয়ার পাঠকদের কাছে তুলে ধরাই এই ওয়েবসাইটের লক্ষ্য। ২০১৫ সালে গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির উদ্যোগে প্রকাশিত গ্রন্থ ২৪ এপ্রিল : হাজার প্রাণের চিৎকার গ্রন্থের ইংরেজী অনুবাদ নিয়েই ওয়েব সাইটি করা হয়েছে।

ওয়েবসাইটে নিহত, নিখোঁজ ও আহত শ্রমিকদের জীবনের গল্প, নিহত তালিকা, এক্টিভিস্ট লেখক অর্থনীতিবিদদের লেখা, ছবি, গান , নাটক ও কার্টুন থাকবে। গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি দীর্ঘ সময় ধরে অত্যন্ত নিবীড় যোগাযোগের মাধ্যমে শ্রমিকদের জীবনের গল্প সংগ্রহ করে এবং নিরলস পরিশ্রম করে একটি বিভাগ ও জেলা অনুযায়ী নিহত নিখোঁজ তালিকা তৈরি করে। এই সব লেখা তথ্য উপাত্ত এবং ছবি নিয়েই এই ওয়েবসাইট www.athousancries.org. 

ওয়েবসাইট উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, রানা প্লাজায় নিহত রিয়াজুল খোকনের মা রাবেয়া খাতুন, নিহত শান্তার বোন সেলিনা, পঙ্গু রোজিনা আক্তার, সাদ্দাম হোসেন, ইয়ানুর, আসমা আক্তার, নিহত ফজলে রাব্বীর মা রাহেলা বেগম, নিহত বিউটি বেগমের স্বামী আলম মাতব্বর ও রানা প্লাজার আরো অনেকে। এছাড়া উপস্থিত থাকবেন বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো বক্ত্য রাখেন, অধ্যাপক আহমেদ কামাল, হামিদা হোসেন, আনু মুহাম্মদ, সারা হোসেন, সিউতি সাবুর, সামিনা লুৎফা, সুস্মিতা পৃথা, শেহজাদ আরেফীনসহ আরো অনেকে। এছাড়া লেখক, শিল্পী, সাংবাদিক, অনুবাদক, আলোকচিত্রীসহ আরো অনেকে উপস্থিত থাকবে।

বক্তারা বলেন, চার বছর পার হয়ে গেছে রানা প্লাজার মতো ঘটনা ঘটেছে। যেখানে ১১০০ এরও বেশী শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছে। আজও শাস্তি হয়নি দোষীদের বদল হয়নি ক্ষতিপুরণ আইন। আমরা সবাই যেন ভুলতে বসেছি রানা প্লাজার কথা। এই অবস্থায় Rana Plaza Massacre : An Anthology www.athousancries.org এই ওয়েবসাইটটির গুরুত্ব অপরসীম। এই ওয়েবসাইটটি আমাদের রানা প্লাজার ইতিহাস স্মরণ করিয়ে দিতে যেমন সাহায্য করবে তেমনি এই ধরনের ঘটনার বিরূদ্ধে রুখে দাঁড়াতে প্রতিবাদী করে তুলবে।

বক্তারা আরো বলেন, রানা প্লাজায় হাজারো শ্রমিকের প্রাণ হারানো ঘটনা সারা দুনিয়াকে উদ্বিগ্ন করেছে। সারা দুনিয়ার কারখানার ইতিহাসে এরকম ঘটনা বিরল। বাংলাদেশের শ্রমিকরা শুধু এই দেশের জাতীয় শিল্পের শ্রমিক নন,কাপড়ে মেইড ইন বাংলাদেশ ট্যাগ লাগিয়ে ইউরোপ আমেরিকার বাজারে পণ্য বিক্রি করে এই শ্রমিকরা গ্লোবালাইজেশনের অংশে পরিণত হয়েংছে। ফলে এই কারনেও ওয়েবসাইটটির গুরুত্বপূর্ণ। একইসাথে সারা দুনিয়ার পাঠকের কাছে বাংলাদেশের শ্রমিকদের জীবন সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরতেও এই ইংরেজি ওয়েব সাইটটি ভূমিকা রাখবে বলে তারা আশা ব্যক্ত করেন।

বক্তারাা বলেন, এই ওয়েবসাইট বাংলাদেশের ইতিহাসের সাথে আন্তর্জাতিক পাঠকের পরিচয় করিয়ে দেবে। সাধারণ আমাদের দেশে ইতিহাস সংরক্ষণ যথাযথভাবে হয় না। আর যদি সে ইতিহাস হয় পোশাক শ্যমিকের মতো শ্রমিকের জীবনের তাহলে সেই ইতিহাস আরো পাওয়া যায় না। এই ওয়েব সাইটটি বাংলাদেশের পোশাক শ্রমিকদের জীবনের ইতিহাস গুরুত্বপূর্ণ উপায়ে পাঠকের কাছে হাজির রাখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভ’মিকা রাখবে।

সংগঠনের সভাপ্রধান বলেন, রানা প্লাজার নিহত নিখোঁজ শ্রমিকরা কেবল সংখ্যা নয়। তাদেরও আর সব মানুষের মতো স্বপ্ন ও জীবন আছে। অথচ এতো বড় ঘটনার পর সরকার এবং মালিকের ভ’মিকাতে মনে হয় শ্রমিকরা কেবল মুনাফা তৈরির নাটবল্টু। তিনি অবিলম্বে দোষীদের শাস্তি ও ক্ষতিপুরণের আইন বদলের দাবি জানান।

 

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer