Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ১১ ১৪৩১, শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪

রাঙ্গামাটিতে নবান্নকে ঘিরে নানা আয়োজন

বহুমাত্রিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৯:২৪, ১৪ নভেম্বর ২০১৬

আপডেট: ০২:১৩, ১৫ নভেম্বর ২০১৬

প্রিন্ট:

রাঙ্গামাটিতে নবান্নকে ঘিরে নানা আয়োজন

ছবি-সংগৃহীত

ঢাকা : নবান্ন উৎসব ঘিরে এ বছর রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে।

মঙ্গলবার পহেলা অগ্রাহায়ণ, দিনটিকে ঘিরে সুন্দর ও নবান্ন উৎসব পালনের জন্য জেলা প্রশাসন যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।

এ উপলক্ষে সকাল ৯টায় একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হবে। রাঙ্গামাটি পৌর প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে র‌্যালিটি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গিয়ে শেষ হবে। সেখানে অনুষ্ঠিত হবে পিঠা উৎসব। সকাল সাড়ে ৯টায় পিঠা উৎসব শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, পিঠা উৎসবের পাশাপাশি একই সময় অনুষ্ঠিত হবে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে স্থানীয় শিল্পীবৃন্দ নৃত্য ও সঙ্গীত পরিবেশন করবেন।

নবান্ন আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী শস্যোৎসব। বাংলার কৃষিজীবী সমাজে শস্য উৎপাদনের বিভিন্ন পর্যায়ে যে সকল আচার-অনুষ্ঠান ও উৎসব পালিত হয়, নবান্ন তার মধ্যে অন্যতম। ‘নবান্ন’ শব্দের অর্থ ‘নতুন অন্ন’। নবান্ন উৎসব হলো নতুন আমন ধান কাটার পর সেই ধান থেকে প্রস্তুত চালের প্রথম রান্না উপলক্ষে আয়োজিত উৎসব। সাধারণত অগ্রহায়ণ মাসে আমন ধান পাকার পর এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। কোথাও কোথাও মাঘ মাসেও নবান্ন উদযাপনের প্রথা রয়েছে।

বিশ্বের প্রায় সকল সংস্কৃতিতেই নতুন শস্য ঘরে তোলার সময় উৎসব পালনের রেওয়াজ রয়েছে।
নবান্ন উপলক্ষে পুরো বাংলাজুড়ে প্রচলিত আছে অনেক আচার অনুষ্ঠান। পাহাড়ের নবান্ন অবশ্য একটু আগেভাগেই পালিত হয়। জুমের ফসল ঘরে উঠে কার্তিকের শুরুতেই। তখন কোনো এক জুম পাহাড়ে আমন্ত্রিত হয় গাঁয়ের সকল জুমিয়ারা। সেখানে অনেক হাড়িতে একসাথে রান্না হয়। কার রান্না কত ভালো সে প্রতিযোগিতাও চলে। চলে পিঠা উৎসব। সেখানে আনন্দে উদ্বেল হয়ে উঠে খেটে খাওয়া মানুষ।

চিরায়ত বাংলার কায়স্ত সনাতনী তথা হিন্দু পরিবারগুলো এ দেশে হাজার বছর ধরেই নবান্ন উৎসব পালন করে এসেছে। আত্মীয়-স্বজনকে পরিবেশন করার পর গৃহকর্তা ও পরিবারবর্গ নতুন গুড়সহ নতুন অন্ন গ্রহণ করেন।

এক সময় বাংলার ঘরে ঘরে অত্যন্ত সাড়ম্ব^রে নবান্ন উৎসব উদযাপিত হত, সকল মানুষের সবচেয়ে অসাম্প্রদায়িক উৎসব হিসেবে নবান্ন উৎসব সমাদৃত ছিল।

উত্তরের জেলাগুলোতে এ সময় জামাইকে নিমন্ত্রণ করে পিঠা-পায়েস খাওয়ানো হয়। নাইওর আনা হয় মেয়েকে। খুলনা ও সাতক্ষীরা অঞ্চলে কৃষকরা মইয়না শাইল ধানের চাল দিয়ে এই উৎসব পালন করে। নেত্রকোনার হাজংরা হাতিবান্দা ধান দিয়ে ও মান্দিরা মিদিম ধানের চাল দিয়ে নবান্ন করে। এছাড়াও শেরপুর অঞ্চলের কোচ জনগোষ্ঠী পুরাবিনি ধান দিয়ে নবান্ন উৎসব করে।

এ ঐতিহ্য ধরে রাখতেই ১৯৯৮ সন থেকে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরে আনুষ্ঠানিকভাবে নবান্ন উৎসব উদযাপন শুরু হয়। জাতীয় নবান্নোৎসব উদযাপন পর্ষদ প্রতিবছর পহেলা অগ্রাহায়ণ তারিখে নবান্ন উৎসব উদযাপন করে। এরই ধারাবাহিকতায় দেশজুড়ে বর্তমানে শহরে সমাজেও ঘটা করে নবান্ন উৎসব পালনের রেওয়াজ চালু হয়েছে।

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer