ছবি: বহুমাত্রিক.কম
নওগাঁ : নওগাঁর বদলগাছীতে ছোট যমুনা নদী তার যৌবন হারিয়ে যেন মরা খালে পরিণত হয়েছে। সেই নদীর বুক জুড়ে চলছে বোরো ধান চাষ। ঐতিহ্যবাহী বদলগাছী উপজেলার কোল ঘেঁষে ছোট যমুনা নদী প্রবাহিত হয়েছে। নদীর কথা ভাবতেই মনে পড়ে শৈশবে ফেলে আসা হারানো দিনের পূরানো কবিতার কথা আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে বৈশাখ মাসে তার হাঁটু জল থাকে।
কবির এই কাব্য কথার সাথে বর্তমান নদীর চিত্র একে বারে ভিন্ন। বর্ষার মৌসুমে ১/২ মাস নদীতে জোয়ার থাকে, বিগত কয়েক বছর থেকে ছোট যমুনা নদী তার আপন সত্ত্বা হারিয়ে আগাম শুকিয়ে যাওয়ায় নদীর বুকে চলতি মৌসুমে বোরো ধান চাষ করছে স্থানীয় ভূমিহীন কৃষকরা।
এই নদীই ছিল এক সময় এই এলাকার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার অন্যতম পথ। নদী ভরা যৌবন জোয়ারে পরিপূর্ণ ছিল। নদীতে এক সময় চলত পাল তোলা নৌকা, দূর থেকে ভেসে আসত মাঝি মাল্লার গান ও সূরের মূর্ছনা ’নাও ছারিয়া দেরে মাঝি পাল উড়াইয়া দে’ গা কোন গান .. .. আমার কাংখের কলসি গিয়াছে ভাসি মাঝিরে তোর নৌকার ঢেউ লাগিয়া রে।
নদীর হাঁটু জলে গরুর গাড়ি পার হওয়া, গ্রামের নব বধুর কাঁংখে করে মাটির কলসীতে নদী থেকে জল ভরে নিয়ে আসার সময় নুপুরের ঝনঝনানি শব্দ, তীব্র গরমে গ্রামের ছোট ছেলে মেয়েদের নদী জলে সাঁতার কাটা দৃশ্য, এখন নদীর জোয়ারের সেই কল কল ধ্বনী ঝর ঝর করে নেমে আসা ঝরনার আওয়াজ এখন শুধু যেন স্মৃতি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ছোট যমুনার বর্তমান গতি পথ কূল কিনারা দেখে উপজেলার সচেতন মহলের ধারণা আগামী ২০-৩০ বছর পর ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে গানের কথার মতই হয়ত বা মনে করবে এই খানে এক নদী ছিল।
বদলগাছির কাদিবাড়ি ঘাটে প্রবীন সাধু মাঝি বলেন, নদীর গতি পথ নদীর প্রাণ সেই গতি পথ যদি হয় রুদ্ধ আর ভরাট তাহলে নদীতে থাকবে না আর জল, চলবে না নৌকা,গাইবে না মাঝি গান নদী যেন নিঃস প্রাণ।তাই আমাদের এই ছোট যমুনা কে বাঁচাতে হলে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে সেই সাথে সরকারী ভাবে নদী খননের মধ্য দিয়ে আবারো ফিরিয়ে আনতে হবে নদীর সেই যৌবন।
বহুমাত্রিক.কম