ফাইল ছবি
যশোর : বহিরাগত এক যুবক যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের একটি কক্ষ ব্যবহার করছেন। কয়েকমাস ধরে এ কার্যক্রম চললেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নেয়নি। আর ব্যবহারকারী বলছেন, দলের সেক্রেটারি তত্ত্বাবধায়ককে বলে কক্ষ ব্যবহারের ব্যবস্থা করেছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, যশোর ২৫০ শয্যা বিশিস্ট জেনারেল হাসপাতালের করোনারি বিভাগের পিছন সাইডের সিড়ির পাশে একটি কক্ষ ব্যবহার করছেন মো. আবু তারেক। কয়েকমাস ধরে ওই কক্ষ তিনি ব্যবহার করছেন। কক্ষে একটি টেবিল, কয়েকটি চেয়ার এবং একটি ফ্যান রয়েছে। দিনের বেশিরভাগ সময় কক্ষের তালা খোলা থাকে।
বহিরাগত কয়েকজন যুবকও আবু তারেকের সাথে বসেন। মাঝে মধ্যে তারেক না থাকলে অন্যান্য বহিরাগত (হাসপাতালের দালাল হিসেবে পরিচিত ব্যক্তিরা) বসেন ওই কক্ষে। হাসপাতালে কয়েকজন স্টাফ জানিয়েছেন, তারেক যশোর পৌরসভায় চাকরি করেন। তিনি কয়েক মাস ধরে ওই কক্ষের তালা খুলে ভিতরে বসেন। হাসপাতালের প্রশাসনের কারও কাছে ওই কক্ষের তালার চাবি নেই।
জানা গেছে, আবু তারেক যশোর পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী বিভাগে এম এল এস এস চাকুরি করেন। বর্তমানে তিনি পৌরসভার স্বাস্থ্যপরিদর্শক বিভাগে কর্মরত আছেন। যোগাযোগ করা হলে পৌরসভার স্বাস্থ পরিদর্শক মো. ওয়াহিদুজ্জামান জানান, আবু তারেক আগে আমার দপ্তরে ছিলেন। এখন তিনি প্রকৌশলী বিভাগে আছেন। পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী শরীফ হাসান জানান, আবু তারেক প্রকৌশলী বিভাগে চাকুরী করেন। বর্তমানে তিনি স্বাস্থ পরিদর্শক বিভাগে রয়েছেন।
জানতে চাইলে আবু তারেক জানান, পৌরসভার মেয়র জহিরুল ইসলাম চাকলাদার রেন্টু দলীয় লোকজন চিকিৎসার ব্যাপারে খোজ খবর নেয়ার জন্য বর্তমানে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়োগ দিয়েছেন। কোন লিখিত ভাবে অনুমোদন আছে কি না তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ব্যস্ততার কারণে মেয়র সাহেব দিতে পারেননি। বর্তমানে তিনি ঢাকায় আছেন। আসলেই তিনি নিয়োগপত্র দেবেন।
বহিরাগত হিসেবে কিভাবে হাসপাতালের কক্ষ ব্যবহার করছেন সে ব্যাপারে মো. আবু তারেক জানান, ‘দলের সেক্রেটারি ভাই যশোর ২৫০ শয্যা বিশিস্ট জেনারেল হাসপাতালের ৪০টি ফ্যান দেন। ফ্যান বিতরণ অনুষ্ঠানে সেক্রেটারি ভাই সাবেক তত্ত্বাবধায়ক কামরুল ইসলাম বেনুকে আমাকে একটি কক্ষ ব্যবহার করার ব্যবস্থা করতে বললে তিনি এ কক্ষটি ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছেন’। অনুমতি কি লিখিত না মৌখিক সে ব্যাপারে তিনি বলেন মৌখিক ভাবে ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেন।
বহিরাগতরা কি ভাবে হাসপাতালে কক্ষ ব্যবহার করছেন সে ব্যাপারে যশোর ২৫০ শয্যা বিশিস্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. অহিদুজ্জামান ডিটু জানান, বিষয়টি আমার নলেজে এসেছে। খোঁজ খবর নিয়েছি। অফিসিয়াল ভাবে কোন বরাদ্ধ দেয়া হয়নি। অফিসের কেউ কোন কিছু জানেন না। শুধুমাত্র তারেক সাহেব এবং সাবেক তত্ত¡াবধায়ক ডা. কামরুল ইসলাম বেনু বিষয়টি ভাল জানেন।
হাসপাতালের সহকারি পরিচালক ডা. আব্দুর রউফ বহিরাগত কক্ষ ব্যবহারের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান। তিনি তত্ত্বাবধায়কের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন।
যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা. আব্দুর রহিম মোড়লের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি জানেন না বলে জানান। তিনি বলেন, খোঁজ নিয়ে দেখছি। প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে তিনি জানান।
যোগাযোগ করা হয় সাবেক তত্ত¡াবধায়ক ডা. কামরুল ইসলাম বেনুর সাথে। দুপুরে ব্যস্ত আছেন সন্ধ্যার পর কথা বলতে বলেন, সন্ধ্যার পর মোবাইলে যোগাযোগ করলে অন্য একজন ফোন রিসিভি করে বলেন,স্যার ব্যস্ত আছেন। পরে যোগাযোগ করেন। পরে তাকে ফোন দিলে আর তিনি ফোন রিসিভি করেননি।
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যশোর জেলা শাখার সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, দলীয় ভাবে যশোর জেনারেল হাসপাতালে কাউকে নিয়োগ দেয়া হয়নি।
বহুমাত্রিক.কম