Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ৬ ১৪৩১, শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪

মেয়র পদে খালেকের অনাগ্রহ, বিএনপিতে মনিই বহাল!

শেখ হেদায়েতুল্লাহ, নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০১:০৪, ১০ আগস্ট ২০১৭

আপডেট: ০১:৫৯, ১০ আগস্ট ২০১৭

প্রিন্ট:

মেয়র পদে খালেকের অনাগ্রহ, বিএনপিতে মনিই বহাল!

খুলনা : খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রার্থীর জয় পরাজয়ের উপর নির্ধারিত হতে পারে আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিটির অভ্যন্তরের ২টি সংসদীয় আসনের। এ দুটি আসন বরাবরই আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বাইরের প্রঅর্থীরা জয় লাভ করে থাকে।

খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের বাইরের প্রার্থীরাই বেশির ভাগ সময়ে মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। আগামী বছরের প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। আর বছরের শেষ দিকে বা ২০১৯ সালের প্রথম দিকে অনুষ্ঠিত হবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। দেশের বৃহৎ দুটি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থী মনোনয়নও জয় পরাজয়ের প্রধান হয়ে দেখা দিতে পারে।

সূত্রমতে, নির্বাচন কমিশন (ইসি) রোডম্যাপ ঘোষণার পর রাজনৈতিক দলগুলো ইলেকশন পলিসি নির্ধারণে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে। কেন্দ্র থেকে দফায় দফায় তৃণমুলের নানা ধরণের তথ্য সংগ্রহ ও নির্বাচনের মাঠ পরিস্থিতির খবর নেওয়া হচ্ছে অনেকটা প্রতিমূহূর্তে। কেন্দ্র আর তৃণমূল নেতা ও কর্মীরা এখন একেবারে কাছাকাছি চলে এসেছে। যোগাযোগ বেড়ে গেছে বহুমাত্রায়।

প্রধান দু’টি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের যশোর-খুলনায় রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ, দিকনির্দেশনা নির্বাচনী আবহের গতি বাড়িয়ে দিয়েছে। ইসির রোডম্যাপ নিয়ে মঞ্চে ময়দানে রাজনৈতিক বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে। ব্যক্তিগত আলাপচারিতা ও ভাব বিনিময়ে তাই জোরালোভাবে নির্বাচনী প্রস্তুতির ইঙ্গিত এবং রাজনীতির মাঠে নানামুখী তোড়জোড় জানান দিচ্ছে এখন চারিদিকে ইলেকশন ট্রেনের হুইসেল।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, আসন্ন একাদশ সংসদ নির্বাচনে প্রধান বিরোধীদল বিএনপিসহ সকল রাজনৈতিক দল নিশ্চিত নির্বাচনী মাঠে নামছে। এবারের নির্বাচনে বদলে যেতে পারে অনেক কিছুই। ইতোমধ্যে মাঠ, ঘাট, অফিস আদালত, চায়ের টেবিলে বিভিন্ন আড্ডায় বেশ জোরেসোরেই আলোচনা হচ্ছে জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে। পাশাপাশি খুলনা সিটি কর্পোরেশন নিবাচন নিয়েও আলোচনা কম হচ্ছে না। রাজনীতির বাতাবরণে সবক’টি জানালা খুলে গেছে। সবদলের অংশগ্রহণের ঘোষনায় তৈরী হয়েছে খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের ক্ষেত্র।

খুলনা মহানগরীর চারিদিকে খুব জোরালোভাবেই চলছে নির্বাচনী আলোচনা। খুলনা সিটির নির্বাচনী অংক গোটা দক্ষিণ-পশ্চিমের ১০ জেলার একাদশ জাতীয় সংসদের হিসাব-নিকাশে অনেকটাই প্রভাব ফেলবে এমন মন্তব্য করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। একাধিক সুত্র জানায়, প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের দুর্বল করতে জাতীয় ইস্যু ছাড়াও এলাকা এবং আসনভিত্তিক কোন মারণাস্ত্র কিভাবে ব্যবহার করা যাবে তার ছক আঁটছে।

খুলনা বিভাগের ৩৬টি সংসদীয় আসন এলাকায় কোন দলের কে প্রার্থী হচ্ছেন এটি আলোচনায় আসছে। কার কি অবস্থান হতে পারে তারও হিসাব চলছে। সাধারণ ভোটারদের ভাবনায় এসে গেছে নির্বাচন। সাম্প্রতিক রাজনীতিতে অতীত বর্তমান ও ভবিষ্যত নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ হচ্ছে। কেন্দ্রীয় জেলা ও উপজেলার এমনকি ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতা যারা মাঠে নামতেন না এখন কর্মী ও সমর্থকদের খোঁজ খবর নিচ্ছেন।

খুলনা সিটি অভ্যন্তরে জাতীয় সংসদের দুটি আসন রয়েছে। যার মধ্যে খালিশপুর, দৌলতপুর ও খানজাহান আলী থানার একাংশ) নিয়ে খুলনা- ৩ আসন। এ আসনটিতে আওয়ামী লীগের বাইরের প্রার্থীরা জয়ী হয়। যদিও ২০০৮ সালের বিএনপি তথা চারদরীয় জোটের ভরাডুবির সময়ে মন্নুজান সুফিয়ান সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়। ২০১৪ সালেও মন্নুজান সুফিয়ান জয়ী হন। এ নির্বাচনে বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি জোট অংশ নেয়নি।

এর আগে ১৯৯৬ সালে বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগদানকারী কাজী সেকেন্দার আলী ডালিম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। খুলনা সদর ও সোনাডাঙ্গা থানা নিয়ে খুলনা-২ আসন । এ আসনটিতে ১৯৭৩ সালে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আব্দুল বারী জয়ী হন। এরপর প্রতিটি সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বাইরের প্রার্থী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপিজোট অংশ নেয়নি। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের খুলনা মহানগর সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে শুধুমাত্র ২০০৮ সালে তত্বাবধায়ক সরকার আমলে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের খুলনা মহানগর শাখার সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেক মেয়র নির্বাচিত হন। ২০১৩ সালের নির্বাচনে তালুকদার আব্দুল খালেক বিএনপি প্রার্থী মনিরুজ্জামান মনির নিকট ৬২ হাজার ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন।

এদিকে খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বৃহৎ দুটি রাজনৈতিক দলের প্রার্থী নিয়ে সাধারন মানুষের মাঝে যেমন আলোচনা চলছে তেমনি রাজনৈতিক নেতারাও বিষয়টি নিয়ে তৎপর। সিটিতে সাবেক মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা সংসদ সদস্য তালুকদার আব্দুল খালেক অংম নিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, আমি নির্বাচিত সংসদ সদস্য। ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত সংসদ সদস্য হিসেবে মেযাদ রয়েছে। সংসদ সদস্য থেকে পদত্যাগ করে মেয়র পদে নির্বাচন করব না। তাছাড়া বর্তমানে খুলনার মেয়র পদটি সংসদ সদস্য পদমর্যাদার নীচে। তবে তিনি বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা যদি চান মেযর পদে আমাকে নির্বাচন করতে হবে। তখন সে সিদ্ধান্ত আমাকে মেনে নিতে হবে।

অপরদিকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে বর্তমান মেয়র ও নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শেখ মনিরুজ্জামান মনিই বহাল থাকছেন। বিএনপির কেন্দ্রিয় সাংগঠণিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম মঞ্জু বলেন, বিএনটি জোটের প্রার্থী হিসেবে মনিরুজ্জামান মনিই থাকছেন। কোন পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে তিনি জানান। অন্যদিকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে মুশফিকুর রহমান মাঠে রযেছেন। তাকে জাপা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন।

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer