Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

চৈত্র ১৩ ১৪৩০, শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪

মীর মশাররফ হোসেনের জন্মবার্ষিকীতে নানা আয়োজন

এস এম জামাল, কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ০৩:১৭, ১৩ নভেম্বর ২০১৬

আপডেট: ০০:০০, ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯

প্রিন্ট:

মীর মশাররফ হোসেনের জন্মবার্ষিকীতে নানা আয়োজন

কুষ্টিয়া : কারবালার বিয়োগান্ত ঘটনা নিয়ে কালজয়ী উপন্যাস ‘বিষাদসিন্ধু’র রচয়িতা সাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেনের ১৬৯তম জন্মবার্ষিকী রোববার।

এ উপলক্ষ্যে কুমারখালির লাহিনীপাড়ায় মীরের বাস্তুভিটায় এদিন ও আগামীকাল সোমবার দু’দিন ব্যাপি জেলা প্রশাসনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হবে বিভিন্ন কর্মসূচি।

এরমধ্যে রয়েছে মীর মশাররফ হোসেনের সাহিত্যকর্মের উপর জ্ঞানগর্ভ আলোচনা সভা ও তাঁর সাহিত্য নির্ভর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ গ্রামীন মেলা। আজ সন্ধ্যা ৬টায় উৎসব আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে।

প্রথম পর্বে প্রাজ্ঞ আলোচক বৃন্দের মীরের সাহিত্য ও কর্মময় জীবনের ওপর আলোচনা এবং দ্বিতীয় পর্বে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হবে হবে।

উদ্বোধনী দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী খোকসা) আসনের সংসদ সদস্য আব্দুর রউফ। সভাপতিত্ব করবেন কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো. জহির রায়হান।

মীর মশাররফ হোসেন ১৮৪৭ সালের ১৩ নভেম্বর জন্মগ্রহণ করেন কুমারখালির লাহিনীপাড়া গ্রামে। লাহিনীপাড়ায় তাঁর ঘর বাড়ির আর কোন অস্তিত্ব নেই। তবে মীরের নিজ হাতে লাগানো একটি মৃত আম গাছ তাঁর স্মৃতি ও কালের নীরব সাক্ষি।

মীরের জন্মের পর তাঁর ছেলেবেলা কেটেছে লাহিনীপাড়া গ্রামে। তাঁর বাবা মীর মোয়াজ্জেম হোসেন এলাকার সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি ছিলেন। তাঁর মায়ের নাম দৌলতুন্নেসা। মীর মশাররফ প্রথমে জগনমোহন নন্দীর পাঠশালায় পড়াশুনা করেন। এরপর তিনি কুমারখালির এমএন হাই স্কুল, কুষ্টিয়া হাই স্কুল ও রাজবাড়ি জেলার পদমদী হাই স্কুলে কিছুদিন পড়াশুনা করেন।

১৮৬০ সালে মীর মশাররফের মা দৌলতুন্নেসা মারা যান। সেই সময় মীরের বয়স ছিল মাত্র ১৩ বছর। এ বয়সেই তিনি সাহিত্য চর্চা শুরু করেন। সাহিত্যের সব ক্ষেত্রেই তাঁর উজ্জ্বল স্বাক্ষর রেখে গেছেন। গল্প, উপন্যাস, নাটক, কবিতা, আত্মজীবনী, প্রবন্ধ ও ধর্ম বিষয়ক প্রায় ৩৫টি বই রচনা করে গেছেন।

এরমধ্যে রত্নাবতী, গৌরী সেতু, বসন্তকুমারী, নাটক জমিদার দর্পণ, সঙ্গীত লহরী, উদাসীন পথিকের মনের কথা,মদীনার গৌরব,বিষাদসিন্ধু বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। সাহিত্য রচনার পাশাপাশি তিনি কিছুদিন সাংবাদিকতাও করেছিলেন।

প্রথমে তিনি কাঙাল হরিণাথ মজুমদারের সাপ্তাহিক গ্রামবার্তা প্রকাশিকা পত্রিকা ও কবি ঈশ্বরগুপ্তের সংবাদ প্রভাকর পত্রিকায় কিছুদিন কাজ করেন। এরপর ১৮৮০ সালে তিনি লাহিনীপাড়া ‘হিতকরী’ নামের একটি পাক্ষিক পত্রিকা প্রকাশ করেন।

মীর মশাররফ হোসেন অষ্টম শ্রেণীতে পড়ার সময় কলকাতায় তাঁর বাবার বন্ধু নাদির হোসেনের বাড়িতে থেকে কিছু দিন পড়াশুনা করেন। এখানে থাকাকালে নাদির হোসেনের বড় মেয়ে লতিফুন নেছার সাথে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে এবং পরে বিয়ের বন্দোবস্ত করা হয়। কিন্তু নাদির হোসেন বিয়ের সময় বড় মেয়ের পরিবর্তে মেজ মেয়ে আজিজন নেছার সাথে মীরের বিয়ে দেন। এঘটনার পর লতিফুন নেছা আত্মহত্যা করেন।

প্রথম বিয়ে সুখের না হওয়ায় মীর মশাররফ ৮ বছর পর কুমারখালির সাঁওতা গ্রামের বিধবা কুলসুম বিবির সাথে দ্বিতীয় বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন। ফলে প্রথম স্ত্রীর সাথে তাঁর মনোমালিন্য আরো তীব্র হয়। এরপর তিনি স্ত্রী কুলসুম বিবিকে নিয়ে লাহিনীপাড়া ছেড়ে টাঙ্গাইলে চলে যান এবং সেখানে বসবাস করতে থাকেন।

প্রথম স্ত্রী আজিজন নেছা কয়েক বছর নিঃসঙ্গ জীবন-যাপন করার পর লাহিনীপাড়ায় মারা যান এবং এখানেই তাকে সমাহিত করা হয়। মীরের প্রথম স্ত্রীর কোন সন্তান ছিল না। তাঁর ৫ ছেলে ও ৬ মেয়ের সকলেই দ্বিতীয় স্ত্রী কুলসুম বিবির গর্ভজাত।

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer