খুলনা : দিনে রাতে সমানভাবে মশার উপদ্রবে খুলনা নগরবাসীর জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। কয়েল বা মশা মারা ওষুধ স্প্রে করেও তেমন কািজ হচ্ছে না। মশার কযেল জ্বালালে কিছুক্ষণ পরেই শুরু হয় মাথায় যন্ত্রণা। আর রাতের বেলা কয়েল জ্বালিয়ে রাখলে দেখা দেয় কাঁশি ও শ্বাস কষ্ট।
কেসিসির পক্ষ থেকে মশা নিধনের জন্য স্প্রে করা হলেও মশার বংশ বৃদ্ধি বন্ধ হচ্ছে না। কোনো সুরাহা পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। রাত বা সন্ধ্যায়ই নয় দিনের বেলায়ও এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাচ্ছেন না তারা। মশার উৎপাত থেকে রেহাই পেতে কয়েল ও এরোসল কিনএত বাড়তি অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে নগরবাসীকে।
কেসিসির সূত্র বলছে, ঋতু পরিবর্তন ও নগরবাসীর অসচেতনতার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। মশক নিধনের কাজ চলছে। আপাতত অপচয় রোধে ওষুধ কিছুটা কম প্রয়োগ হচ্ছে।
খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) কঞ্জারভেন্সি শাখা সূত্র জানায়, নগরীর মশার প্রকোপ কমিয়ে আনতে মশক নিধনে করপোরেশন প্রতিটি ওয়ার্ডে ফগার মেশিন দিয়ে লার্ভিসাইড স্প্রেকরছে। লার্ভিসাইড স্প্রের ক্ষেত্রে হুইল মাউটেন্ড মেশিনও ব্যবহার করা হচ্ছে। তাছাড়া বৃষ্টির ফরে বিভিন্ন ডোবায় আটকে থাকা পচঁনশীল পানি যেখানে মশার বংশ বিস্তার ঘটে সেখানে লার্ভিসাইড স্প্রে করা হচ্ছে। ড্রেনগুলোতে প্রতিদিন লাইট ডিজেলও (কালো তেল) স্প্র্রে করা হয়।
বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত শান্তু বিশ্বাস বলেন, দিনের অফিসে বসলে মশার কাপড়ে স্বাভাবিক ভাবে কাজ করা যায় না। টেবিলের নীচে রাখা পায়ে মশায় কামড়ায়। অভিযোগ, মশক নিধনে কেসিসি কার্যত তেমন পদক্ষেপ না নেয়ার এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে মশার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে নগর জীবন।
নগরীর নিউ মার্কেট এলাকার বাসিন্দা কলেজ শিক্ষার্থী আলভী আর্শী মীম জানান, মশার উপদ্রব অনেক বেড়েছে। স্বাভাবিকভাবে লেখা পড়া করতে পারিনা। লিখব কখন আর হাত নেড়ে মশা তাড়াব কখন। তিনি বলেন রাতের বেলায় মশা বেশি কামড়ায়। গত ছয় মাস দলে মশা উৎপাত কমাতে স্প্রে করতে দেখিনি।
মুসলমানপাড়ার বাসিন্দা আব্দুল জলিল জানান, ঘরে-বাইরে সর্বত্র মশা। দিন নেই, রাত নেই সবসময় মশার উৎপাত। ছেলেমেয়েরা মশার কারণে সঠিকভাবে লেখাপড়া করতে পারছে না। মাঝে মাঝে দেখা যায় কেসিসির পক্ষ থেকে ফগার মেশিন দিয়ে স্প্রে করে। তখন ওষুধের ধোয়ার উপরেই মশা ভন ভন করে উড়ে বেড়ায়। মশার উৎপাত কমাতে কয়েল কিনতে বাড়তি টাকাও ব্যয় হয়।
খুলনা সদর (জেনারেল) হাসপাতালের জনৈক শিশু বিশেষজ্ঞ জানান, মশার কামড়ে ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গুজ্বরসহ বিভিন্ন রোগ হতে পারে। এজন্য সকলকে সচেতন হতে হবে। মশক নিধনে মুখ্য ভূমিকা রাখতে হবে সংশ্লিষ্ট সংস্থার। সর্বত্র মশা নিধন ও বংশ বিস্তারে বন্ধে স্প্রের ব্যবস্থা করতে হবে।
কেসিসি`র কঞ্জারভেন্সি অফিসার মো. আনিসুর রহমান জানান, ঋতু পরিবর্তন, সেফটি ট্যাংকের আউটলেট উন্মুক্ত রাখা, ড্রেনের পানি ঠিকমত নিষ্কাশনে ব্যবস্থা না থাকায় ও ঝোপঝাড় বা ফুলের বাগান পরিষ্কার না করার কারণে মশার উপদ্রব বেড়েছে। এ ছাড়া শহরের আশপাশ থেকেও মশা আসছে। তিনি বলেন, মশক নিধনের কাজ চলছে। প্রতিদিন প্রায়ই বর্ষা হচ্ছে। তাই আপাতত অপচয় রোধে ওষুধ কিছুটা কম প্রয়োগ করা হচ্ছে। সঠিক সময়ে সঠিকভাবে ওষুধ প্রয়োগ করলে মশা কমে যাবে। মশা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সকলকে সচেতন হতে হবে। ড্রেনে বর্জ্য ফেলা যাবে না, ঝোঁপঝাড়, ফুলের বাগান ও খাল বা পুকুরের কচুরিপানা পরিষ্কার রাখতে আহ্বান জানান তিনি।
বহুমাত্রিক.কম