Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ১১ ১৪৩১, বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪

ভূয়া সনদে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা উত্তোলনের অভিযোগ

নওগাঁ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৭:২৫, ৩০ অক্টোবর ২০১৬

আপডেট: ১৮:৩৭, ৩০ অক্টোবর ২০১৬

প্রিন্ট:

ভূয়া সনদে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা উত্তোলনের অভিযোগ

নওগাঁ : নওগাঁর আত্রাইয়ের সাহেবগঞ্জ এলাকার এক সময়ের সার-মুদি ব্যবসায়ী মোঃ মুনছুর রহমান (কান্দুর) মুক্তিযোদ্ধার ভূয়া সনদপত্রের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধার ভাতা উত্তোলন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

তবে তিনি কিভাবে মুক্তিযোদ্ধা হল এ নিয়ে আত্রাই উপজেলার জন সাধারণের মাঝে তা প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি ১৯৭১ সালে কোন সময় আর কোন এলাকায় মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন এমনটাও জানা নেই আত্রাই এলাকাবাসীর। এমন কি মুক্তিযোদ্ধার ভূয়া সাটিফিকেট বানিয়ে পরিচয় দিয়ে মুক্তিযোদ্ধার ভাতা উত্তোলন করছে বলে জানা গেছে।

মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রালয়ে ও জেলা প্রশাসক নওগাঁ বরাবরে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আব্দুস ছামাদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ওহিদুর রহমান লিখিত অভিযোগ করলে জেলা প্রশাসক নওগাঁ আত্রাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে তদন্ত সাপেক্ষে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

তদন্ত বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মোখলেছুর রহমান উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার মোঃ আব্দুল মমিনকে তদন্ত টিমের প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। দীর্ঘ ১ মাস যাবৎ তদন্ত টিম সরেজমিনে ও সাক্ষীদের সাক্ষ্য অনুযায়ী এবং এলাকাবাসীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায় মুনছুর রহমান (কান্দুর) সে নিজে তদন্ত টিমের সম্মুখে উপস্থিত হয়ে লিখিত ও মৌখিক জবান বন্দিতে স্বীকার করেন সে মুক্তিযোদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন নাই।

পরিপত্র অনুযায়ী এলাকাবাসী ও স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সাক্ষ্য প্রমানে মোঃ মুনছুর রহমান (কান্দুর) ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা হয়েছেন বলে তদন্ত টিমের টিম লিডার ও উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার মোঃ আব্দুল মমিন, উপজেলা সহকারী মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড ও তদন্ত টিমের সদস্য মোঃ আব্দুল মালেক খাঁনের নিকট জানা যায়। এদিকে ভ’য়া মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মুনছুর রহমানের তথ্য অনুসন্ধানে বেড়িয়ে এসেছে মুনছুর রহমান (কান্দুর) প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা নয়। একাত্তরে মুক্তিযোদ্ধে অংশ নিয়েছেন এমন তথ্য কারো জানা নাই।

এ বিষয়ে মোঃ মুনছুর রহমান (কান্দুর) এর নিকট সঠিক কাগজপত্র ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি প্রধানমন্ত্রীর স্বাক্ষরিত সনদপত্র ছাড়া অন্য কোন কাগজপত্র দেখাতে পারে নাই। এভাবে আত্রাই উপজেলায় আরো বেশ কয়েকজন ভ’য়া মুক্তিযোদ্ধা আছে। কিন্তু তারা এখনো পরিপত্র অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধার স্ব-পক্ষে কোন কাগজপত্র দেখাতে পারে নাই।

স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন সরকারের আমলে নানা কৌশলে তারা মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় গ্রেজেট প্রাপ্ত হন। আর এ গ্রেজেট প্রাপ্ত হয়ে তারা বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা ভোগ করে সরকারী ভাতা গ্রহন করে আসছেন। বর্তমান সরকার এ সব ভ’য়া মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তারা মুক্তিযোদ্ধার সঠিক ইতিহাস বিকৃত করে নিজেরা যুদ্ধ না করে মুক্তিযোদ্ধা সেজে সঠিক মুক্তিযোদ্ধাদের আবেগ আঘাত করে অপমান করছেন।

সাবেক ছাত্র নেতা যুদ্ধকালীন কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সাজেদুর রহমান (দুদু শাহ্) বলেন, মুনছুর রহমান (কান্দুর) কখন কোথায় মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন তা তারা জানেন না। রণাঙ্গণে তাকে তারা কোন দিন দেখেনি এবং তিনি ভ’য়া মুক্তিযোদ্ধার শাস্তি দাবি করেন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মোখলেছুর রহমান এর সাথে আলাপ কালে তিনি বলেন, জেলা প্রশাসক নওগাঁর নির্দেশ মোতাবেক একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে এবং তদন্ত প্রতিবেদন জেলা প্রশাসকের নিকট পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া কোন মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসলে তা খতিয়ে দেখা হবে। ভূয়া মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে আইনানুগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer