Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ৬ ১৪৩১, শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪

ভূমিকম্প ভীতি : দরকার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও সচেতনতা

সাদ বিন ইসলাম

প্রকাশিত: ০২:১৫, ৫ জানুয়ারি ২০১৭

আপডেট: ০০:০০, ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯

প্রিন্ট:

ভূমিকম্প ভীতি : দরকার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও সচেতনতা

ঢাকা : বহুকাল থেকে বাংলাদেশ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে আক্রান্ত। তার মধ্যে ভূমিকম্প সাম্প্রতিক সময়ে সেই সতর্ক বার্তা দিয়েছে।

স্বাভাবিকভাবে ভূমিকম্প বলতে ভূ-আলোড়নের ফলে ভূ-পৃষ্ঠের কোনো অংশে যে কম্পনের সৃষ্টি হয় তাকেই ভূ-কম্পন বলে। লক্ষ লক্ষ বছর ধরে প্লেট টেকটনিক পৃথিবীকে আকৃতি দিয়ে আসছে। প্রচুর প্লেট আস্তে আস্তে উপরে নিচে নড়াচড়া করছে ভ-অভ্যন্তরে সৃষ্ট শক্তির কারণে। এভাবে একটি প্লেট অন্য একটি প্লেটের সাথে সংঘর্ষের মাধ্যমে প্রচন্ড ঝাঁকুনির সৃষ্টি হয়।

বাংলাদেশের উপর দিয়ে বেশ কয়েকটি ভূ-কম্পনশীল চ্যূতি রেখা রয়েছে যার মধ্যে মধুপুর এবং গাজীপুর অপরিকল্পিত, জনসংখ্যা বিষ্ফোরিত মেগাসিটি ঢাকার নিকটবর্তী স্থানে অবস্থিত। ধারণা করা হয় মাঝারি ধরনের ভূমিকম্পে যে শক্তি নির্গত হয় তা ১৮০ মিলিয়ন মেট্রিক টন টিএনটির সমান।

উদাহরণ স্বরূপ জাপানের হিরোসিমায় যে বোমা ফেলা হয়েছিল তা থেকেও ১০ হাজারগুণ শক্তিশালী এই ভূমিকম্প। একটি দেশ যতবেশি পরিকল্পনাহীনভাবে নিজেকে আর্থিক ও শিল্পগত দিক থেকে উন্নত করতে চায় সেই দেশকে সহ পার্শবর্তী দেশগুলোকেও এরকম ভয়াবহতার মুখোমুখি হতে হয়।

এ দেশে অনেক বড় আকারের ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে যার মধ্যে আসামের ভূমিকম্প টপ টেনে রয়েছে এখনো। গত বছর সহ গতকাল পর্যন্ত যে ভূমিকম্প এই কন্টিনেন্টে আঘাত হেনেছে তার উৎপত্তি স্থান বাংলাদেশ থেকে খুব একটা দূরে নয়। এটা সত্য যে ভূমিকম্প সৃষ্টি হওয়ার কোন পূর্বাভাষ নেই তারপরও ভূ-অভ্যন্তরীন, অবলা কিছু কীটপতঙ্গের চলাফেরা সতর্ক করিয়ে দেয়।

ভূমিকম্প প্রস্ততিতে এখনো আমরা সমৃদ্ধ হয়ে উঠতে পারিনি। কেননা উপযুক্ত জনবল, ইমার্জেন্সি সার্ভিসসহ ইকুইপমেন্টের অভাব রয়েছে এখানে। একটা সমীক্ষায় দেখা গেছে যদি ৭.৮ মাত্রার কোনো ভূমিকম্প ঢাকা শহরে আঘাত হানে ৭২০০০ বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন ধ্বংস হয়ে যাবে কেননা এখনো রাজউক প্লান মুখেই রয়ে আছে।

একটি বিষয় মনে রাখা দরকার কখন ভূমিকম্প আঘাত হানবে তা নিদৃষ্ট নেই, কিছু কৌশল যাকে ইনডোর, আউটডোর, ভেহিকল এবং ডেব্রিজ শেলটার  প্ল্যান বলা যায়। যা নিরাপদ রাখতে এবং কম ইনজুর হতে সহায়তা করে। সেকেন্ডারি দুর্যোগ হিসেবে বিভিন্ন রকম লাইন যেমন গ্যাস, পানি এবং বিদ্যুৎ থেকে শর্ট সার্কিট এমনকি আগুন লাগতে পারে। এই বিষয়গুলো সকলকেই জানা এবং জানানো দরকার।

এরই সহায়তাকল্পে ন্যাশনাল ইয়ুথ ইমার্জেন্সি রেসপন্স কর্পস ( এনইআরসি) সারা দেশব্যাপী চালু করেছে আর্থকুয়েক স্কুলিং প্রোগ্রাম। যেখানে ইনভিজুয়াল, প্রফেশনাল, স্কুল- কলেজ গোয়িং শিক্ষার্থীদেরকে আর্থকুয়েক সংক্রান্ত সার্চ এন্ড রেসকিউ, ফার্স্ট এইড, ট্রায়েজ, জরুরি সেবা প্রদান, ইকুইপমেন্ট অপারেশন শেখানো হবে।

এর প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী মোঃ পনির হোসেন নিরলস কাজ করে যাচ্ছি। পরিশেষে বলতে চাই, অপার সম্ভাবনার বাংলাদেশ গড়তে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি কমানো খুবই জরুরি, সেই সাথে জরুরি সবাইকে এবিষয়ে সচেতন হওয়া।

লেখক: শিক্ষার্থী ও উন্নয়নকর্মী 

[email protected] 

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer