ছবি : সংগৃহীত
ঢাকা : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিদ্যমান চমৎকার সম্পর্ককে ধ্বংস করতেই ঠাকুরপাড়া গ্রামের বাড়ীঘরে হামলা চালানো হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘কক্সবাজারের রামু, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর ও রংপুরের ঠাকুরপাড়ার হামলা একই সূত্রে গাঁথা। স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি প্রতিটি হামলার সাথে জড়িত। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি ও দেশকে অস্থিতিশীল করতেই তারা এ হামলা চালিয়েছে।’
ওবায়দুল কাদের রোববার রংপুর জেলার সদর উপজেলার ব্রাহ্মণপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ঠাকুরপাড়া গ্রামে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়ী-ঘরে হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আয়োজিত এক ‘সংহতি সমাবেশে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বাড়ী-ঘর পুড়ে যাওয়া ১১টি পরিবারের প্রত্যেককে ২৫ হাজার, ক্ষতিগ্রস্ত অপর সাত পরিবারকে ১০ হাজার করে এবং ক্ষতিগ্রস্ত তিনটি মন্দির কর্তৃপক্ষকে ১০ হাজার করে টাকা প্রদান করেন।
কাদের দুপুরে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে পৌঁছার পরপরই হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ঠাকুরপাড়া গ্রামের হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে কথা বলেন। পরে তিনি সেখানে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সংহতি সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, উপ-দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া ও বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট রানা দাশগুপ্ত।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন, স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি ঠাকুরপাড়া গ্রামে হামলা চালিয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজনের বাড়ীঘর ও মন্দির ধ্বংস করেছে। এ হামলার সাথে যারা জড়িত তাদের কেউই রেহাই পাবে না। হামলাকারীরা যতই শক্তিশালী হোক, আইন অনুযায়ী তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শুধু মুসলমানরাই নয়- হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ অন্যান্য সম্প্রদায়ের লোকজনও আমাদের মহান স্বাধীনতার যুদ্ধে জীবন উৎসর্গ করেছে।
আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে একটি স্বার্থান্বেষী মহল এ ধরনের হামলার চালানোর ষড়যন্ত্র করতে সক্রিয় থাকবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। এ ধরনের হামলার পুনরাবৃত্তি যেনো ঘটে সে জন্য জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেন।
ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন, ১৪-দলীয় জোট, প্রগতিশীল ও স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসীদের প্রতি আহবান জানিয়ে কাদের বলেন, হামলাকারীরাই সংখ্যালঘু, ক্ষতিগ্রস্তরা সংখ্যালঘু নয়।
তিনি বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন আসছে। ভারতের সাথে আমাদের চমৎকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান। তাই একটি স্বার্থান্বেষী মহল দেশকে অস্থিতিশীল করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার জন্য ভারতের সাথে সম্পর্ককে চিড় ধরাতেই এ ধরনের হামলা করার ষড়যন্ত্র করছে।
আগামী ২১ ডিসেম্বর রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঠাকুরপাড়ায় আয়োজিত জনসভায় ভাষণ রাখবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
সমাবেশে জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট রেজাউল করিম রাজু, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিউর রহমান শফি, সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মন্ডল, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান নাসিমা জামান ববি, পীরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র তাজিমুল ইসলাম শামীম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বাসস