রংপুর : বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের জন্য আনা ওষুধ সময়মত বিতরণ না করে দীর্ঘদিন উপাচার্যের বাসভবনে অবহেলায় পড়ে থাকার কারণে কয়েক লাখ টাকার ওষুধ মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে নষ্ট হয়ে গেছে।
বিষয়টি সময় বাড়ার সাথে সাথে ক্যাম্পাসে রটে যাওয়ায় ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। মেডিকেল সেন্টারের দায়িত্বরত সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বললে বেশকিছু স্যালাইন নষ্ট হয়েছে বলে জানালেও সেগুলোর পরিমাণ ও মূল্য সম্পর্কে মুখ খোলেনি কেউই।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সাবেক উপাচার্যের সময় আনা এসব ওষুধ সময়মত শিক্ষার্থীদের নিকট বিতরণ না করায় এমনটি ঘটেছে। অনেকে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. একে এম নূর-উন-নবীসহ সংশ্লিষ্টদের অবহেলার কারণে এমনটি ঘটেছে বলে অভিযোগ করছে।
তবে মেডিকেল সেন্টারের দায়িত্বরত কর্মকর্তা ও মেডিকেল অফিসার ডা: সুলতানা তারাননুম নিজামী বলেন, যেসব ওষুধ নষ্ট হওয়ার কথা বলা হচ্ছে আসলে সেগুলো ২০১২ কিংবা ২০১৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২য় উপাচার্য আব্দুল জলিল মিয়ার আমলের সময় কেনা। সদ্য বিদায়ী উপাচার্যের সময়ে নয়।
কতগুলো ওষুধ এবং আর্থিক মূল্যে কত হতে পারে প্রশ্নের করলে গত নভেম্বর মাসে জয়েন্ট করায় মেয়াদোউত্তীর্ণ ওষুধের পরিমাণ ও আর্থিক মূল্যে সম্পর্কে তার কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই বলে জানান তিনি। এক পর্যায়ে বলেন, ওষুধের কথা বলা হলেও আসলে ৫০ টির মতো স্যালাইন মেয়াদোউত্তীর্ণ হয়েছে মাত্র।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মেডিকেল সেন্টারের আরেক কর্মকর্তা বলেন, সময়মত বিতরণ না করায় বেশকিছু স্যালাইন নষ্ট হয়েছে। এগুলো সদ্য বিদায়ী উপাচার্যের সময় বিনামূল্যে আনা হয়েছিলো। এর বেশি বলতে পারব না।
সংশ্লিষ্টদের সাথে একাধিকবার যোগযোগ করেও এ বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য না মিললেও একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে বেশকিছু মেয়াদোউত্তীর্ণ ওষুধ বুধবার নাগাদ মেডিকেল সেন্টারের পাশেই মাটিতে গর্ত করে চাপা দেয়া হয়েছে।
এমনকি মেডিকেল সেন্টারের দায়িত্বরত কর্মকর্তা ওষুধগুলো ২০১২-১৩ সালের বললেও সেগুলো ২০১৫ সালের দিকে কেনা বলে জানা গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দাবি এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান প্রশাসন থেকে তদন্ত করলে সুনির্দিষ্ট তথ্য, ওষুধের পরিমাণ এবং এর আর্থিক মূল্য সম্পর্কে জানা যেতে পারে।
এ বিষয়ে বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ-এর সাথে যোগাযোগ করলে বলেন, এগুলো বিগত প্রশাসনের আমলে কেনা। আমি এসে দেখি মেয়াদোউত্তীর্ণ ওষুধ উপাচার্যের বাসভবনে তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছে। পরে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে এবং ওষুধগুলো সরিয়ে ফেলতে নির্দেশ দিয়েছি।
বহুমাত্রিক.কম