Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ১১ ১৪৩১, শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪

বিয়ে নয়-পতিতাবৃত্তিতেই আগ্রহী যে গ্রামের মেয়েরা

বহুমাত্রিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ০০:৪০, ২৮ মে ২০১৬

আপডেট: ০০:৫৬, ২৮ মে ২০১৬

প্রিন্ট:

বিয়ে নয়-পতিতাবৃত্তিতেই আগ্রহী যে গ্রামের মেয়েরা

ঢাকা : একটা ভালো বর আর সেইসঙ্গে ভালো ঘর। এই স্বপ্ন নিয়েই সাধারণত জীবন শুরু করেন ভারতীয় নারী। কিন্তু বৈচিত্র্যময় দেশ ভারতেই রয়েছে এর ব্যতিক্রম। জাতীয় রাজধানী দিল্লি থেকে ২০০ কিমি দূরে রাজস্থানের ভরতপুরের খাকরানাগলা গ্রামের মেয়েরা বিয়ে করতে আগ্রহ দেখান না। কারণ বিয়ে হলেই বন্ধ হয়ে যাবে জীবন ধারণের একমাত্র পেশা ‘দেহব্যবসা’। বন্ধ হয়ে যাবে দু’বেলার অন্ন সংস্থান।

দীর্ঘদিন ধরেই এভাবে দিন কাটাচ্ছে বেদিয়া বংশের লোকেরা। জয়পুর রাজপ্রাসাদের পাশেই বসবাস এই বেদিয়া সম্প্রদায়ের। জানা গিয়েছে, অনেককাল আগে থেকেই বেদিয়া এবং নাট উপজাতির মেয়েরা ছিলেন রাজস্থানের নর্তকী।

রাজা‚ সামন্তপ্রভু এবং অভিজাতদের মনোরঞ্জন করতে হতো তাঁদের। কালের আবর্তে লোপ পেয়েছে রাজতন্ত্র এবং জমিদারি প্রথা। পেশাদার নর্তকীর কাজ হারিয়েছেন অতীতের ‘নাচনেওয়ালিরা’। কিন্তু সম্মান ফিরে আসেনি তাঁদের জীবনে। বদলেছে শুধু পেশার নাম। কিন্তু অলিখিতভাবে দেহ বেচাই যেন হয়ে দাঁড়িয়েছে তাঁদের নিয়তি। আর কালের পথপরিক্রমায় সেদিনের নর্তকীরা আজ ‘যৌনকর্মী’।

বেদিয়া সমাজের অলিখিত নিয়ম হলো খকরানাগলা গ্রামে বেদিয়াদের মেয়েদের দেহ ব্যবসা করতেই হবে। আর সেই অনুযায়ী কিশোরীবেলা থেকেই শুরু হয়ে যায় এর প্রস্তুতিপর্ব। বেদিয়া সম্প্রদায়ের মেয়েরা রাজস্থানে স্থানীয়ভাবে এই পেশায় নিয়োজিত থাকেন। অনেকে আবার চলে যান দিল্লি-মুম্বাইয়ে। দিল্লির বিভিন্ন পতিতাপল্লীতে হামেশাই দেখা যায় রাজস্থানি বেদিয়া মেয়েদের। যাদের পারিবারিক ঐতিহ্য মেনে বিক্রি করতে হয় নিজের শরীর!

বেদিয়া সম্প্রদায়ের গোত্রপ্রধান হরেকৃষ্ণের মতে, বেদিয়া নারীদের কারণেই এখনো তাঁদের গ্রামের লোকজন পেট পুরে খেতে পারছে। যেসব মেয়ে বিভিন্ন রাজ্যে যৌনকর্মে নিয়োজিত থাকেন, তাঁদের হাত ধরে খকরানাগলা গ্রামে সচ্ছলতা এসেছে ঠিকই কিন্তু বেড়েছে সামাজিক লাঞ্ছনা। আর এই লাঞ্ছনার শিকার হয়ে হামেশাই নির্যাতিত হন বেদিয়া নারীরা।

হরেকৃষ্ণ অভিযোগ করে বলেন, নামের পাশে ‘বেদিয়া’ পদবি দেখলেই সামাজিক যে কোনো অনুষ্ঠানে তাঁদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ হয়ে যায়। খকরানাগলা গ্রামের কেউ এখনো পর্যন্ত সরকারি চাকরি পাননি। পাবেন কী করে, গ্রামে নেই একটি স্কুলও। আর তাই সমাজের মূলধারা থেকে বিচ্যুত বেদিয়াদের কাছে অধরাই থেকে যাচ্ছে শিক্ষার আলো।

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer