ঢাকা : ফুটবলপ্রেমীদের মতে, ২০১৮-র বিশ্বকাপ নাকি অঘটনের। অঘটন তো বটেই! কারণ, ফাইনালের দিনটা ওই দর্শকাসনে বসেই উপভোগ করতে হয়েছে মেসি-রোনাল্ডো, নেমারদের। তবে এই তালিকাটা আরও বড়।
বিশ্বকাপ হাতে নিজের দেশে ফিরতে পারেননি এমন তারকা ফুটবলারের তালিকাও কম নয়। সেই তালিকাটাই এক নজরে দেখে নেওয়া যাক।আজও বিশ্বের অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার হিসেবেই মনে করা হয় ইতালির পাওলো মালদিনিকে।
দীর্ঘ দিন এসি মিলানের হয়ে খেলেছেন পাওলো। উয়েফা চ্যাম্পিয়নশিপও জিতেছেন পাঁচ বার। কিন্তু এক বারও বিশ্বকাপ জেতা হয়নি পাওলো মালদিনির। ১৯৯০, ১৯৯৪, ১৯৯৮ আর ২০০২ এই চার বার বিশ্বকাপ খেলেছিলেন মালদিনি। আর ১৯৯৪ সালে রানার-আপও হয়েছিল ইতালি।এক বারের জন্যও বিশ্বকাপ জিততে পারেননি ব্রাজিলের তারকা ফুটবলার জ়িকো।
১৯৮২-র বিশ্বকাপে ব্রাজিল দলটিতে ছিলেন একাধিক স্টার প্লেয়ার। সেই দলে ছিলেন জ়িকোও। সে বছরে দ্বিতীয় রাউন্ডেই ইতালির কাছে হেরে যায় ব্রাজিল। জ়িকোর বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্নভঙ্গ হয়। পরে ১৯৮৬-র বিশ্বকাপ খেলেছিলেন তিনি, কিন্তু সে বারও কাপ ঘরে নিয়ে আসতে পারেনি ব্রাজিল।বিশ্বের সেরার সেরা গোলরক্ষকদের মধ্যে একজন জার্মানির অলিভার কান। গোলকিপার হিসেবে সর্বপ্রথম কানই গোল্ডেন বল পেয়েছিলেন। দেশের হয়ে অধিনায়কত্বও করেছেন কান।
কিন্তু তাঁর ভাগ্যেও বিশ্বকাপ জোটেনি। ২০০২-এর বিশ্বকাপে ফাইনাল অবধি এগিয়েও শেষে ব্রাজিলের কাছে হারতে হয়েছিল জার্মানিকে। গোল স্কোরার হিসেবে রুম্মেনিগের অবদানও কম নয়। কিন্তু তাঁর যাবতীয় রেকর্ড রয়েছে বায়ার্ন মিউনিখের হয়েই। ১৯৭৪ থেকে ১৯৯০-এর মধ্যে চার বার বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছিল জার্মানি। রুম্মেনিগে খেলেছিলেন ১৯৭৮, ১৯৮২ এবং ১৯৮৬ সালে। কিন্তু এক বারও বিশ্বকাপ জেতা হয়নি রুম্মেনিগের।
১৯৮০-’৮১ এই দু’বছরেই ব্যালন ডি’ওর পুরস্কার পেয়েছিলেন রুম্মেনিগে।ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর আগে পর্তুগালের স্টার প্লেয়ার ছিলেন একজনই। তিনি ইউসেবিও। ১৯৬৫ সালে ব্যালন ডি’ওর পুরস্কার জিতেছিলেন ইউসেবিও। জীবনে এক বারই বিশ্বকাপ খেলতে পেরেছিলেন এই তারকা ফুটবলার। ১৯৬৬-র বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ গোলদাতাও হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সে বার বিশ্বকাপ জিততে পারেনি পর্তুগাল। থার্ড প্লেসে আটকে গিয়েছিল ইউসেবিও-র দেশ।পুসকাসের সময় হাঙ্গেরি ফুটবল দলটার নামই ছিল ‘গোল্ডেন টিম’।
১৯৫৪-র বিশ্বকাপ দলে ছিলেন পুসকাস। সে বার ফাইনালে পৌঁছেছিল হাঙ্গেরি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পশ্চিম জার্মানির কাছে হারতে হয় হাঙ্গেরিকে। সেই সঙ্গে পুসকাসের বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্নও শেষ হয়ে যায়।ফুটবলে ‘ক্রুয়েফ টার্ন’-এর কথা প্রায় সকলেরই জানা। ডাচ প্লেয়ার ইয়োহান ক্রুয়েফের সেই স্কিল আজও জনপ্রিয়। নেদারল্যান্ডস দলটিকে বিশ্ব ফুটবলের দরবারে জায়গা করে নিতে সাহায্য করেছিলেন ইয়োহান ক্রুয়েফ। একবারই বিশ্বকাপ খেলেছিলেন তিনি। ১৯৭৪-র বিশ্বকাপে ক্রুয়েফ দলকে ফাইনাল পর্যন্ত টেনে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু হারতে হয় জার্মানির কাছে।লা লিগা টাইটেল দু’বার।
প্রিমিয়ার লিগ তিন বার। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ পাঁচ বার। আর ফুটবলের সেরা পুরস্কার ব্যালন ডি’ওর-ও পাঁচ বার। সি আর সেভেনের নামের পাশে খেতাবের ছড়াছড়ি। ২০১৬-য় দেশকে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ কাপ এনে দিয়েছিলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। এই নিয়ে চারটি বিশ্বকাপ হয়ে গেল ৩৩ বছরের রোনাল্ডোর। কিন্তু বিশ্বকাপ ওঠেনি তাঁর হাতে।২০১৪ সালে বিশ্বকাপ জয় প্রায় পাকা করে ফেলেছিল টিম আর্জেন্টিনা। শেষ মুহূর্তে গোল করে বিশ্বকাপ জয়ী হয় জার্মানি। ২০১৮-র বিশ্বকাপও বাড়ি নিয়ে যেতে পারলেন না মেসি। আটটি লা লিগা, চারটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এবং পাঁচ বার ব্যালন ডি’ওর-রয়েছে তাঁর রেকর্ডের তালিকায়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত বিশ্বকাপ অধরাই থেকে গিয়েছে মেসির কাছে।