ছবি: সংগৃহীত
ঢাকা : দক্ষিণ আফ্রিকার মাঠে বিরাটের এই যে দাদাগিরি দেখল ক্রিকেট দুনিয়া তার পুরো কৃতিত্বই নাকি স্ত্রী অনুস্কার। যতই ক্রিকেট লিখিয়েরা বলুন ভিকে’র একাগ্রতাই তাঁকে সাফল্য এনে দিয়েছে কিংবা ওঁর দাপুটে মনোভাবের জন্য বিদেশের মাঠে এমন দাদাগিরি, কিং কোহলি অবশ্য অন্য কথাই বলছেন। সদ্য বিবাহিত ভারত অধিনায়কের দাবি সবই নাকি অনুস্কার ‘মায়া’।
‘লেডি লাক’ কথাটা বিরাটের ক্ষেত্রে বরাবর নেগেটিভ হয়েই দেখা দিয়েছে। ভাগ্যের ফেরে অনুস্কা মাঠে থাকা অবস্থায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বিরাট ভুল শট খেলে আউট হয়েছেন। সেই তালিকায় ২০১৫ বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর শুরুর প্রথম টেস্ট ম্যাচের প্রথম ইনিংসের আউট।
ব্যর্থ হয়েছেন বিরাট, ভারতবাসীর রোষ গিয়ে পড়েছে অনুষ্কার উপর। সেটা এক এক সময়ে এমন চরম জায়গায় গিয়ে পৌঁছয় যে রীতিমত বিরাটকে মুখ খুলতে হয়েছে অনুস্কাকে আড়াল করতে। অবশেষে দুঃসময় বুঝি কেটেছে অনুস্কার।
ওয়ান্ডারার্সে সিরিজের শেষ টেস্ট জেতার পর থেকেই ছবিটা বদলেছে। আর সদ্য সমাপ্ত একদিনের সিরিজে মাঠে প্রত্যেক দিন বিরাটের লাঞ্চ টু ডিনার একটাই খাবার হাজির ছিল। আফ্রিকান সিংহের কোর্মা। একদিনের সিরিজে সাড়ে পাঁচশোর উপর রান করে রেকর্ড বুকে নাম তুলে তিনিই সিরিজ সেরা।
দুই ভারতীয় রিষ্ট স্পিনারের ভেল্কির পরেও স্বমহিমায় উজ্জ্বল কোহলি। ষষ্ঠ একদিনের ম্যাচ জিতে উঠে সবাই যখন বিশ্লেষণে বসেছেন কোহলির আফ্রিকান সাফারিতে এমন সাফল্যের রহস্য কোথায় লুকিয়ে, তখনই উত্তরের ডালি নিয়ে হাজির হয়েছে স্বয়ং বিরাট।
কোহলি জানিয়েছেন, এ সবই আসলে অনুস্কার কৃতিত্ব। ম্যাচের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘মাঠের মধ্যে অনেকের কৃতিত্ব রয়েছে এই সাফল্যের জন্য, মাঠের বাইরেও কিছু মানুষের পাশে থাকা আমার সাফল্যের অন্যতম কারণ। এরপর আর রাখঢাক না করে অধিনায়ক স্পষ্ট বলেন, ‘এই কৃতিত্বে বেশির ভাগটাই আমার স্ত্রী’র। মাঠে আমার ব্যর্থতার জন্য মাঠের বাইরে ওকে অনেক অকারণ সমালোচনা শুনতে হয়েছে। কিন্তু ও আমার পাশে ছিল বলেই এই সাফল্য৷’
প্রসঙ্গত, এই সিরিজ চলাকালীনই বিরাট-অনুস্কার পোষ্টার মাঠে দেখা গিয়েছে সেই ফ্যানাদের হাতেই যারা একদিন বিরুষ্কার সমালোচনায় মুখর হয়েছিল। আসলে ভারতীয় ক্রিকেট ভক্তরা এমনই। আজ তারা এই পোষ্টার নিয়ে নাচছেন কারণ বিরাট রান করছেন৷
এক ম্যাচে না খেলতে পারলেই ওই পোস্টারেই চুনকালি মাখিয়ে ‘নেত্য’ করতে সময় লাগবে না। এমন কাণ্ড প্রত্যেক ভারতীয় ক্রিকেটার সম্মুখীন হয়েছেন, কিন্তু তাঁদের স্ত্রী’দের নিয়ে এমন অভব্যতা হয়নি, যেটা কোহলির ক্ষেত্রে হয়েছে। সুপারস্পোর্ট পার্কে জিতে উঠে বিরাট সেই ‘পচা’ ফ্যানেদের জন্যই এমন মন্তব্য করেন। এখন আর গার্লফ্রেন্ড নয়, অনুস্কা যে তাঁর সহধর্মিণী। কতক্ষণ বা সহ্য করা যায়!