ছবি-পিআইডি
ঢাকা : বেসরকারি খাতে অধিক বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে সফররত বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম বলেছেন, এজন্য ব্যবসা বণিজ্যের পরিবেশ সংক্রান্ত নীতি সংস্কার ও সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে। সামনে বাংলাদেশের জনগণের জন্য উজ্জল ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে বলেও অভিমত তাঁর।
মঙ্গলবার বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বাতিল সংক্রান্ত সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম এ কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশকে আগামী তিন বছরের জন্য জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ২০০ কোটি মার্কিন ডলার সহায়তা ঘোষণাও দেন বিশ্বব্যাংক প্রধান।
বিশ্বব্যাংক প্রেসিডেন্ট বলেন, প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের জন্য বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ দরকার। আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে দারিদ্রমুক্ত করবে। এর আগে নিম্ন আয়ের দেশ থেকে মধ্য আয়ে যেতে বাংলাদেশ অনেক কিছু মোকাবেলা করছে। সামনে বাংলাদেশের জনগণের জন্য উজ্জল ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে।
জিম ইয়ং কিম বলেন, আমরা তিনটি বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। এর প্রথমটি হচ্ছে, বাণিজ্য পরিবেশ উন্নয়নে নীতির সংশোধন করা। বর্তমান পাশ্ববর্তী দেশের তুলনায় বিদেশী বিনিয়োগ বাংলাদেশে কম আসছে। বেসরকারি খাতে যদি বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে হয়, সেক্ষেত্রে অবকাঠামো সংক্রান্ত প্রকল্পে অর্থায়ন বেশি করতে হবে। দ্বিতীয়ত, সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়াতে হবে। তৃতীয়ত হচ্ছে, সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা সাইক্লোন ও বন্যাকে হুমকি মনে করছে। জলবায়ু পরিবর্তনের দিক থেকে বাংলাদেশ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এই ঝুঁকি মোকাবেলায় বিশ্বব্যাংক সহায়তা করবে।
এক প্রশ্নের জবাবে জিম ইয়ং কিম বলেন, মধ্যম আয়ের দেশের জন্য উচ্চ সুদ এবং নিম্ন আয়ের দেশগুলোর জন্য কোন কোন ক্ষেত্রে শূণ্য সুদেও ঋণ দেয়া হয়। সেক্ষেত্রে সুদের হার সমন্বয় করা হবে। তবে বাংলাদেশের ঋণ পরিশোধের রেকর্ড ভাল। সুদ সমন্বয় করা হলেও সেটি ২ শতাংশের বেশি হবে না।
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বিনিয়োগে বিশ্বব্যাংক ঝুঁকি মনে করছে জানিয়ে তিনি বলেন, নিরাপত্তা বিষয়ে আমি খুবই সন্তুষ্ট। তবে বিশ্বের কোন দেশেই সন্ত্রাসের ঝুঁকি মুক্ত নয়। ফ্রান্স, বেলজিমান ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত দেশগুলোও সম্প্রতি ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক আঞ্চলিক ভাইস প্রেসিডেন্ট এ্যানেট ডিক্সন, ঢাকায় নিযুক্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফান, আইএফআইসি’র পরিচালক মিনজিতসু আলামায়েতু উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সোমবার অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অপুষ্টি রোধে অতিরিক্ত ১০০ কোটি ডলার সহয়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। মোট ৩০০ কোটি ডলারের সহায়তা চুক্তি আগামী ডিসেম্বরে হবে আশা করছেন তিনি।
বিকালে সংবাদ সম্মেলনের আগে জিম ইয়ং কিম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সকালে তিনি বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্প পরিদর্শনে বরিশাল সফর করেন।
বহুমাত্রিক.কম