ফাইল ছবি
ঢাকা : মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বর্বর নির্যাতনের মুখে দেশ ছেড়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে চুক্তি সাক্ষর হয়েছে।
বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের রাজধানী নেইপিদোতে এ চুক্তি সাক্ষর করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী ও মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলরের দফতরের মন্ত্রী খিও তিন্ত সোয়ে। চুক্তি স্বাক্ষরের আগে এদিন সকালে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চির সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বৈঠক করেন।
‘অ্যারেঞ্জমেন্ট অন রিটার্ন অব ডিসপ্লেসড পারসন্স ফ্রম রাখাইন স্টেট’ শীর্ষক এ চুক্তি সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘চুক্তিতে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের প্রস্তাব ছিল-জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআরসহ সব উন্নয়ন সহযোগীর অন্তর্ভুক্ত করার। মিয়ানমার শুধু ইউএনএইচসিআরকে প্রয়োজনমতো কাজে লাগাতে সম্মত হয়েছে।’
ওই কর্মকর্তা জানান, ‘চুক্তি সাক্ষরের ২ মাসের মধ্যে প্রত্যাবাসন শুরুর বিষয়টি সুস্পষ্ট থাকলেও কবে নাগাদ প্রত্যাবাসন শেষ হবে-এমন সময়সীমা দিতে রাজি হয়নি। গত বছরের অক্টোবরের পর আসা রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার বিষয়টিই এখণ গুরুত্ব পাবে।’
এদিকে, চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলী বলেন, শিগগির রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করবে মিয়ানমার। এই চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে প্রথম ধাপের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
কতদিন লাগবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, কাজটা শুরু করাই বড় কথা। কতদিন লাগবে তা এখনই নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না। কারণ রাখাইনে যেখান থেকে রোহিঙ্গারা পালিয়ে এসেছেন তাদের বাড়িঘর সব জ্বালিয়ে দেওয়া, সেগুলো তৈরি করতে হবে।
আগামী শনিবার ২৫ নভেম্বর এ বিষয়ে ঢাকায় সাংবাদিকদের বিস্তারিত তুলে ধরা হবে বলে জানান মন্ত্রী।
রোহিঙ্গাদের ফেরতের ইস্যু ছাড়াও নাফ নদীর সীমানা রেখা বিনিময় বিষয়ক আরো একটি স্মারক সই হয়েছে বলে জানিয়েছেন মাহমুদ আলী। এ ছাড়া তারা ১৯৯৮ সালের সীমান্ত নির্ধারণী চুক্তি নবায়নে স্মারক বিনিময় করেন।
নিরাপত্তা চৌকিতে জঙ্গি হামলার ঘটনায় গত ২৫ আগস্ট থেকে সহিংসতার শিকার হয়ে এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ছয় লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। তবে এ সংখ্যা এখন পর্যন্ত ১০ লাখ ছাড়িয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।