গাজীপুর : গাজীপুর গোয়েন্দা পুলিশ বৃহস্পতিবার ভোর রাতে কামাল খানকে কালীগঞ্জ উপজেলার উলুখোলা রায়েরদিয়া গাইনীপাড়ার ভাড়াবাসা থেকে তুলে আনার সময় বড় ভাই আকবর খানকেও (৩৩) সাথে আনে।
কামাল কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হলেও পরিবার আকবরের কোন খোঁজ পাচ্ছিল না। পরে পরিবার জানতে পারে আকবরকে পুলিশ ২ শ’ পিছ ইয়াবা উদ্ধারের মামলা দিয়ে আদালতো মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে।
নিহত কামালের স্ত্রী আছমা বেগম জানান, ২০ দিন আগে তার স্বামীর বড় ভাই আকবর খান (৩৩) নিজ বাড়ি লক্ষীপুরের রায়পুর থানার পূর্ব দেবীপুর থেকে ছোট ভাইয়ের বাসায় বেড়াতে আসেন। বাড়ি নির্মাণের কাজ চলায় তার স্বামী বড় ভাই আকবর খানকে নির্মাণকাজ দেখাশোনার অনুরোধ করেন। গত রোববার তারা জানতে পারেন ইয়াবা উদ্ধারের মামলায় আকবর কারাগারে আছেন।
প্রসঙ্গত বৃহস্পতিবার ভোরে গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার উলুখোলা রায়েরদিয়া গ্রামের গাইনীপাড়ার বাসা থেকে পুলিশ দুই ভাই কামাল খান ও আকবর খানকে তুলে নিয়ে আসে। ওই দিবাগত গভীর রাতেই গাজীপুর নগরীর ভাদুন এলাকায় পুলিশের কথিত বন্দুকযুদ্ধে কামাল নিহত হন।
শুক্রবার দুপুরে গোয়েন্দা পুলিশ সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানান ১৪ মামলার আসামি এরশাদ নগরের কামরুল ইসলাম ওরফে কামাল খান ওরফে কামু বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। বিজ্ঞপ্তিতে যে মামলাগুলোর উল্লেখ করা হয় তা যাচাই করে দেখা যায় প্রকৃতপক্ষে সেগুলোর আসামি এরশাদ নগরের কামরুল ইসলাম কামু। সেই কামু গত দুই বছর যাবত কাশিমপুর কারাগারে বন্দি রয়েছেন। ঘটনার পর থেকে নিহতের পরিবার দাবি করে আসছেন ভুল তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ কামাল খানকে বাড়ি থেকে তুলে এনে বন্দুকযুদ্ধের নামে হত্যা করেছে।
নিহতের নাম ঠিকানা ও মামলা নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হলে পরে পুলিশ অবশ্য নিহত ব্যক্তির ব্যাপারে ভিন্ন তথ্য দেয়। পুলিশ জানায় ১৪টি নয় নিহতের বিরুদ্ধে ৩টি মামলা আছে।
এসব ব্যাপারে জানতে চাইলে গাজীপুর জেলা গোয়েন্দা শাখার পরিদর্শক (ডিবি) আমীর হোসেন সাংবাদিকদের জানান, আকবর হোসেন জাহিদ নামে এক ব্যক্তিকে ২’শ পিছ ইয়াবাসহ ধীরাশ্রম থেকে শুক্রবার ভোরে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সে নিহত কামাল খানের ভাই কী-না জানা নেই। তবে সে একজন মাদক ব্যবসায়ী। ইয়াবা বিক্রির সময় হাতেনাতে ডিবি পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে এবং ২’শ পিস ইয়াবা তার পরনের লুঙ্গির কোছা থেকে উদ্ধার করা হয়। পরে ১জুন জয়দেবপুর থানায় মাদক আইনে মামলা (নং ০৪ তারিখ ০১.০৬.২০১৮ইং) দিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। নিহত কামালের স্ত্রী আছমা বেগমের অভিযোগ সঠিক নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।
মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়েছে, আকবর হোসেন জাহিদ জয়দেবপুর থানা এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। ১জুন সকাল আনুমানিক পৌণে সাতটার দিকে জয়দেবপুরের ধীরাশ্রম রেলক্রসিং চৌরাস্তা এলাকায় মাদক কেনাবেচার সময় পুলিশ গোপনে সংবাদে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে আকবর হোসেন জাহিদ ও তার সহযোগীরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এসময় ২/৩ সহযোগী পালিয়ে গেলেও আকবর হোসেন জাহিদকে ২’শ পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করা হয়। গাজীপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক মাহবুব আলম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
বহুমাত্রিক.কম