ছবি : বহুমাত্রিক.কম
সাভার : একটু বৃষ্টি হলেই শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ার ভাদাইল এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত। চলাচলের অযোগ্য হয়ে পরে এবং চলাচলরত সড়কসহ বাসা-বাড়িতে বসবাস করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। অপরিকল্পিত সড়ক ও বাড়ি নির্মাণ এবং পানি নিষ্কাষণের জন্য কোন প্রকার ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকা ফলেই মূলত এরকম অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে আশুলিয়ার ডিইপিজেড এর বিপরীত পাশে পরমানু গবেষণা কেন্দ্রের দক্ষিণপাশের সীমানা প্রাচীর ঘেষে ভাদাইল সড়কে এ দৃশ্য দেখা যায়।
এ ব্যাপারে ভাদাইল এলাকার বাসিন্দারা জানান, ডিইপিজেড কাছে থাকায় এ এলাকায় প্রায় লক্ষাধিক লোকের বসবাস। এদের মধ্যে বেশির ভাগই পোশাক শ্রমিক। যদিও গ্রীষ্মকাল, বিগত বছরে এ সময় খড়া দেখা যেত। এ বছর কয়েকদফা ভারী বৃষ্টিপাতে ভাদাইল এলাকায় প্রবেশের একমাত্র সড়কটির ওপর হাটু সমানেরও বেশি পানি জমে রয়েছে।
ডিইপিজেড থেকে ভাদাইল এলাকার এ সড়কটি প্রায় দেড় কিলোমিটার। পুরো রাস্তা এবং পার্শ্ববর্তী বাড়ি-ঘর এখন পানিতে তলিয়ে গেছে। অবর্ণনীয় দূর্ভোগের শিকার শ্রমিক অধ্যূষিত এ এলাকাটি।
সারাদিন কর্মস্থলে কাজ শেষে বাসায় ফিরতেই নারী-পুরুষ সকলকে এ বিড়ম্বনায় পড়ে বসবাস করতে হয়। ফলে প্রতিদিন ঘটছে এ রাস্তাটিতে নানা ধরণের ছোট-বড় দূর্ঘটনা।
ডিইপিজেডে কর্মরত সাবিনা আক্তার নামের এক নারী শ্রমিক জানান, চাল-আটা নিয়ে বাসায় ফেরার পথে গর্তে পড়ে তার চাল আটা ভিজে একাকার হয়েছে। যা কোন ক্রমেই ব্যবহার ও খাওয়ার যোগ্য নেই। বর্ষা আসতে না আসতেই এ অবস্থায় তারা বাসা পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
জান্নাতুল মাওয়া আদিয়া ও আল-রাফিউ জিহাদ সহ কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, বৃষ্টির কারণে রাস্তায় পানি জমে থাকে। আমাদের প্রতিদিনই স্কুলে যেতে সমস্যা হয়। অনেক সময় ব্যাগ হাত থেকে পড়ে যায়। এতে বই-খাতা পানিতে ভিজে যায়। আমরা অতি কষ্টে এ রাস্তা পার হতে হয়।
একাধিক বাড়ির মালিকরা জানিয়েছেন বৃষ্টি হলেই পানিতে তলিয়ে যায় রাস্তাঘাট এবং বাসা বাড়ি। ফলে তাদের একমাত্র বাড়ি ভাড়ায় আয় কমে যাচ্ছে। ভাড়াটিয়ারা এ পরিবেশে থাকতে চায় না। তারা প্রতিনিয়তই চলে যাচ্ছে। তাদের ধরে রাখা সম্ভব হয় না। এছাড়া রান্না-বান্নায় চলছে অনেক সঙ্কট। অনেকের রান্না ঘর পানিতে তলিয়ে গেছে। এ এলাকায় পানি নিষ্কাষনের কোন ব্যবস্থা নেই। ইউনিয়ন পরিষদ সড়ক উচুঁ করায় বাড়ি ঘর নিচে রয়েছে। সেই উঁচু রাস্তাই পানির তলে। এ অবস্থায় ভাদাইল এলাকাটি বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অটোরিকশা চালক জানান, পানির নিচে রাস্তা থাকায় অনেক সময় কিছু বুঝা যায় না। ফলে ভাঙ্গা রাস্তায় অটো উল্টে যায়। অনেকেই এর কারণে অটোতে উঠতে চায়না। বিষয়টি সমাধান করার দাবী জানান তিনি।
এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা জানান, রাস্তায় পানি থাকায় এবং অনেক দোকানের অভ্যন্তরে পানি থাকায় তাদের বেচা-বিক্রি নেই বললেই চলে। এ অবস্থায় তারা মারাত্মক ক্ষতিতে পড়েছেন। এ অবস্থায় তাদেরকে কে উত্তরণ করবে? এ প্রশ্ন এখন সকলের মুখে মুখে।
এছাড়াও একই চিত্র জামগড়া, চিত্রশাইল, ইউনিক ও বাইপাইল, জিরাবো এলাকায়। বিষয়টির আশু সমস্যা সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন এলাকাবাসী।
বহুমাত্রিক.কম