ছবি-সংগৃহীত
ঢাকা : ব্রিটিশদের চোখে ধুলো দিয়ে মধ্যরাতে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন সুভাষচন্দ্র বসু। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এক ঐতিহাসিক ঘটনা। নেতাজির অন্তর্ধান নিয়ে প্রশ্নের উত্তর মেলেনি আজও। কিন্তু নেতাজির সেই গ্রেট এসকেপের ৭৫ বছর পার। বহুল চর্চিত তাই সেই পলায়নের সঙ্গী জার্মান গাড়িটির বিশেষ প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হচ্ছে কলকাতায়। খবর এই সময়’র
কালকা মেল ধরতে এই চার দরজার জার্মান ওয়ান্ডারার সেডানে চেপেই এলগিন রোডের বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন নেতাজি। সেই ঘটনার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে এক বিশেষ প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। গাড়িটি চালান নেতাজির নাতি তথা তৃণমূল সাংসদ সুগত বসু। আর পিছনের সিটে বসেন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। ১৯৩৭ সালে তৈরি সেই গাড়িটি চালানো প্র্যাকটিসও করতে শুরু করেন সুগত বসু।
১৯৫৭ সাল পর্যন্ত গাড়িটি নিয়মিত চালাতেন সুগত বসুর বাবা তথা নেতাজির ভাইপো শিশির কুমার বসু। নেতাজি পালানোর দিনে গাড়িতে ছিলেন তিনিও। এত পুরনো একটা লিমুজিনকে চলার উপযোগী করে তোলাটা মোটেই সহজ ছিল না। গাড়িটির প্রস্তুতকারী সংস্থা জার্মানির Auto Union বন্ধ হয়েছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরেই। কিন্তু গাড়িটি মেরামতে সাহায্য করেছে ‘অডি’। বর্তমানে নেতাজি রিসার্চ ব্যুরো মিউজিয়ামে রাখা হয়েছে। এবার থেকে সপ্তাহে একবার ওই মিউজিয়ামের চারপাশে চলতে দেখা যাবে গাড়িটি।
কোন গাড়ি নিয়ে নেতাজি পালাবেন সেটা ঠিক করা হয়েছিল খুব সন্তর্পণে। প্রথমে ঠিক করা হয় দাদা শরৎ চন্দ্র বসুর গাড়ি নিয়ে যাবেন নেতাজি। কিন্তু সেই গাড়িটি ছিল যথেষ্ট পরিচিত। পরে ঠিক হয় শিশির বোসের গাড়িটি নেওয়া হবে।
সুগত বসুর দাবি, ১৯৩৭ সালে ৪৬৮০ টাকা দিয়ে গাড়িটি কিনেছিলেন শিশির বসু। সেই গাড়িতেই মহম্মদ জিয়াউদ্দিনের ছদ্মবেশে ১৯৪১ সালের ১৬ জানুয়ারি মধ্যরাতে বাড়ি ছাড়েন নেতাজি। ২১ বছরের শিশির বসু তাঁকে পৌঁছে দেন গোমোতে।
তবে ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসাবে গ্রেট এসকেপের গাড়িটির ‘মেরামত’ নিয়ে নেতাজি গবেষকদের মাঝে বিতর্ক রয়েছে। অনেকে দাবি করে থাকেন, ঐতিহাসিক সেই গাড়ি বর্তমানে পরিচয় করিয়ে দেওয়া এই গাড়ি নয়।
নেতাজির ভাতিজা শিশির বসুর গ্রেট এসকেপের সঙ্গী হওয়ার দাবির সাথেও একমত নন অনেকে। বলা হয়ে থাকে, নেতাজি সাধুর বেশে দেশকে স্বাধীন করার জন্য বাড়ি ছাড়েন। নেতাজি পরিবারের মাঝেও এনিয়ে দ্বিধাবিভক্তি রয়েছে বলে দাবি গবেষকদের।