ছবি : বহুমাত্রিক.কম
মৌলভীবাজার : মৌলভীবাজারের হাকালুকিসহ ছোট ছোট হাওর-বিলে নিষিদ্ধ কারেন্ট জালে ছেয়ে গেছে। হাটবাজার সমুহে অবাধে বিক্রি হচ্ছে কারেন্ট জাল। মাছ শিকারে জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার নিন্মাঞ্চল লাঘাটা ও পলক নদীতে অবৈধ বাঁশের খাঁটি স্থাপন করা হয়েছে। ফলে পানি নিস্কাশনে প্রতিবন্ধকতা এবং নানা জাতের জলজ প্রাণী ধ্বংস হচ্ছে এবং পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি বয়ে আনছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণের ফলে ভারতীয় পাহাড়ি ঢল নেমে হাওর, বিল ও নদনদীতে পানি বৃদ্ধি পায়। উজানের পাহাড়ি ছড়া, খাল-বিল উপচে পানিতে টইটুম্বুর হয়ে উঠে নদী, হাওর। পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে অসাধু মাছ শিকারী চক্রের পাতা কারেন্ট জালের ফাঁদ গোটা হাওর-বিল চেয়ে গেছে।
জেলার কুলাউড়া, ব্রাহ্মণবাজার, শ্রীমঙ্গল, শমশেরনগরসহ বিভিন্ন হাটবাজারে প্রকাশ্যে কারেন্ট জাল বিক্রির হিড়িক শুরু হয়েছে। এভাবে ফিবছর বর্ষা মৌসুমে একশ্রেণির মাছ শিকারী অসাধু চক্র হাওর, বিল ও জলাশয়কে কেন্দ্র করে শত শত কারেন্ট জাল ফেলে মাছ শিকার করছে। মাছের সাথে কারেন্ট জালে ব্যাঙ, সাপ, কুচিয়া সহ বিভিন্ন প্রজাতির জলজ প্রাণীর মৃত্যু ঘটছে। প্রশাসনের নিষ্ক্রিতার সুযোগে প্রকাশ্যে বিক্রি ও হাওর-বিলে কারেন্টজাল পোতে রাখছে সিন্ডিকেট চক্র। তাছাড়া হাটবাজার ও হাওর-বিলে অবৈধ জাল বিক্রি ও ব্যবহারের পরিমাণও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
হাওর-বিলে কারেন্টজাল ব্যবহারের পাশাপাশি কমলগঞ্জ উপজেলার নিন্মাঞ্চলে পতনঊষারে লাঘাটা নদীতে অবৈধ দু’টি বাঁশের খাঁটি (বেড়া) ও পলক নদীর উপর পাঁচটি বাঁশের খাঁটি স্থাপন করা হয়েছে। মৎস্য আইনে নিষিদ্ধ এসব বাঁশের খাঁটি স্থাপন করার ফলে পানি নিস্কাশন ও মাছের অবাধ গতিপ্রবাহে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। বাঁশের খাঁটির সাথে স্থাপিত মাছ ধরার খাঁচায়ও (পারন) কুচিয়া, সাপসহ নানা প্রজাতির জলজ প্রাণি ধরা পড়ছে এবং মারা যাচ্ছে।
পতনঊষারের সমাজকর্মী ইকবাল হোসেন তালুকদার, মাইদুল ইসলাম সহ স্থানীয়রা বলেন, গত কয়েক বছর ধরে বর্ষা মৌসুমে কেওলার হাওরে অবাধে কারেন্ট জালের ছড়াছড়ি শুরু হয়। একইভাবে লাঘাটা ও পলক নদীতে অসংখ্য বাঁশের খাঁটি স্থাপন করা হয়েছে। ফলে পানি নিস্কাশন, মাছের অবাধ প্রবাহে প্রতিবন্ধকতা দেখা দেয়ায় দীর্ঘ জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।
তবে কারেন্টজাল বিক্রি, ব্যবহার ও বাঁশের খাঁটি স্থাপন বিষয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ শাহাদাত হোসেন বলেন, অভিযোগ পেয়ে সম্প্রতি শমশেরনগর বাজারে কারেন্ট জাল বিক্রির দায়ে অভিযান চালিয়ে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন। তাছাড়া কারেন্ট জাল ও বাঁশের খাঁটি বিষয়েও শিগগির অভিযান পরিচালনা করা হবে।
বহুমাত্রিক.কম