Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ১১ ১৪৩১, বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪

নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে মতবিনিময়

বহুমাত্রিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৩:২৪, ৭ ডিসেম্বর ২০১৬

আপডেট: ০০:০০, ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯

প্রিন্ট:

নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে মতবিনিময়

ছবি-সংগৃহীত

ঢাকা : ‘আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ’১৬ ও বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষ্যে নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে প্রশাসন ও নাগরিক সমাজের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের উদ্যোগে বুধবার বিকালে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সুফিয়া কামাল ভবনের আনোয়ারা বেগম, মুনিরা খান মিলনায়তনে এ মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আয়শা খানম। কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ হতে লিখিত বক্তব্য উপস্থান করেন পরিচালক লিগ্যাল অ্যাডভোকেসি এন্ড লবি মাকছুদা আখতার।

সভায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মালিক আব্দুল্লাহ আল আমিন, পরিচালক, জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা; জামিল আহমেদ, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।

প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডিএমপির উইমেন সাপোর্ট এন্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের উপ-পুলিশ কমিশনার ফরিদা ইয়াসমিন, ডিবিসি নিউজের এডিটর প্রণব সাহা।

উল্লেখ্য “পরিবার ও জনজীবনের সকল ক্ষেত্রে নারী ও কন্যার প্রতি উত্ত্যক্তকরণ, যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ ও নির্মূল কর” এই শ্লোগানকে সামনে রেখে এবছর বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ১৫ দিনব্যাপি আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ পালন করছে।

সভায় সংগঠনের সভাপতি আয়শা খানম বলেন আমরা সবাই অবগত আছি ১৯৯৩/৯৪ সাল থেকে বাংলাদেশে বেসরকারী সংগঠনগুলো নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ পালন শুরু করে । জাতিসংঘের মেম্বার স্টেটগুলো ১৫-নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ পালন করছে। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ এই পক্ষ পালন করে যাচ্ছে ৮০’র দশক থেকে।

তিনি বলেন, নারী আন্দোলনের অর্জন হলো সরকারের সহায়তায় ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার ও ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা। নারী ও কন্যা শিশুর উন্নয়নের জন্য সরকার, নারী সংগঠন অনেক ইতিবাচক পদক্ষেপ নিলেও এবং অনেক ইতিবাচক অর্জন থাকলেও নারী ও কন্যা শিশুর প্রতি সহিংসতার মাত্রা আমাদের দেশে বেড়েই চলেছে। কেন বেড়ে চলছে তা নিয়ে একটি গবেষণা করতে হবে। কাজেই নারী ও কন্যা শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে সকালকে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

অতিথির বক্তব্যে ঢাকা মেট্রোাপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার জামিল আহমেদ বলেন, বর্তমানে আমাদের দেশের নারী ও কন্যাশিশুদের জন্য ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার বাড়ানো প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, নারীর প্রতি সহিংসতা বৃদ্ধির কারণগুলো নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে তার জন্য কাজ করতে হবে। যে নির্যাতনকারী সে কেন এই অপরাধগুলো করছে তাও আমাদের দেখতে হবে। সহিংসতা প্রতিরোধে আইনগুলো সবার জানা প্রয়োজন বলেও তিনি মন্তব্য করেন। নারী এখন সাইবার ক্রাইমের শিকার হচ্ছে। নারীদের সতর্কতা ও সাবধানতার অভাবও এর একটি কারণ বলে তিনি মন্তব্য করেন। নারী ও কন্যা শিশুর নির্যাতন প্রতিরোধে সকলকে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান।

জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার পরিচালক মালিক আব্দুল্লাহ আল আমিন সাদী বলেন, সারকার ২০০০ সালে এই কার্যক্রম শুরু করে। এই আইনটি সরকার যখন প্রথম শুরু করেন তখন আইনগত সাহয়তা দেয়া হচ্ছিল। বর্তমানে এখানে আরো কিছু কাজ করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ১৬৪৩০ এই নাম্বারে একটি হটলাইন এই সংস্থার আছে। কাজেই আইনগত পরামর্শের জন্য যে কেউ এখানে ফোন করে সহায়তা পাবেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি আরো বলেন বেসরকারী সংস্থাগুলোর গ্রাম পর্যায় থেকে কাজ করলে তা আরো বেশি উপযোগী হবে।

প্যানেল আলোচক ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উইমেন সাপোর্ট এন্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের উপ-পুলিশ কমিশনার ফরিদা ইয়াসমিন বলেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ স্টেশনে অনেক নারী শিশুসহ অনেকেই আসেন তাদের সমস্যা নিয়ে। ১০টি বেসরকারী সংগঠন এখানে কাজ করেন। এখানে আইনগত সেবার পাশাপাশি কাউন্সিলিং করা হয় বলেও তিনি উল্লেখ করেন। ৪৯ টি পুলিশ স্টেশন থেকে কোন না কোন নারী বা শিশু এখানে আসে। প্রতিদিন অনেক হারিয়ে যাওয়া নারী ও কন্যাশিশু তাদের কাছে আসে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, এমন অনেক শিশু বা নারী আছে কর্মক্ষেত্রে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সহিংসতার শিকার হয় কিন্তু তারা কিছু বলতে পারে না। তারা এখানে যোগাযোগ করে এই বিষয়গুলো শেয়ার করে যার মাধ্যমে পরবর্তীতে পদক্ষেপ নেয়া হয়। তিনি বলেন শুধু মাত্র লএনফোর্স এজেন্সি নয় পরিবার থেকে শুরু করে সমাজের সকল স্তরের মানুষকে নারী ও কন্যা শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে এগিয় আসতে হবে।

ডিবিসি নিউজ এডিটর প্রণব সাহা বলেন, গত বছরও আমরা নারী ুরর্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ পালন করেছি। কিন্তু এই এক বছর পর আমরা বলছি ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টার বাড়াতে বলছি। তার মানেই হচ্ছে আমাদের দেশে নির্যাতনের শিকার নারীর সংখ্যা বেড়েছে।

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer