Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

চৈত্র ১৪ ১৪৩০, শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪

নদীতে ভেঁসে আসা মৃতদেহ উদ্ধার করলো না পুলিশ

নওগাঁ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ০০:৫৩, ৫ আগস্ট ২০১৭

আপডেট: ০০:০০, ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯

প্রিন্ট:

নদীতে ভেঁসে আসা মৃতদেহ উদ্ধার করলো না পুলিশ

ছবি: বহুমাত্রিক.কম

নওগাঁ : নওগাঁর আত্রাই নদীতে ভেসে আসা অজ্ঞাত অর্ধ গলিত এক ব্যক্তি মৃতদেহ উদ্ধার না করার অভিযোগ পাওয়া গেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। পুলিশ জানিয়েছে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত, দাফন, খরচ ও ঝামেলা এড়াতে ওই অজ্ঞাত মৃতদেহ নদীর স্রোতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়।

গত বৃহস্পতিবার বিকেলে আত্রাই থানার পাশে দিয়ে বয়ে যাওয়া আত্রাই নদীতে এই ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, উপজেলার শাহাগোলা ইউনিয়নের মিরাপুর নামকস্থানে নদীতে দুপূর ১টার দিকে প্রথমে ওই অজ্ঞাত ব্যক্তির মৃতদেহ ভেঁসে থাকতে দেখতে পান এলাকাবাসী। এরপর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান থানায় জানানোপরও পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার না করায় শুটকিগাছা রাবার ড্যাম এলাকায় আত্রাই নদীতে আটকে যায়।

ঘটনাস্থালে পুলিশ আসলে মৃতদেহ উদ্ধার না করে চলে যায় পুলিশ। ড্যামে প্রায় এক ঘন্টা আটকে থাকারপর নদীর পানির মৃতদেহটি ভাসতে ভাসতে থানার পাশে সাহেবগঞ্জ এলাকায় ঘাসের সাথে আটকে যায়। এরপর স্থানীয় এলাকাবাসী থানায় আবারও সংবাদ দেন।

এ দিকে মৃতদেহটির সংবাদটি জেলায় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার কর্মরত মিডিয়া কর্মী পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার বিকেলে পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেনকে জানানো হয়। পুলিশ সুপার ইকবাল হোসেন তাৎক্ষণিক বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখার জন্যে বলেন।

কিন্তু মৃতদেহটি পুলিশ উদ্ধার করে বিকেলে আত্রাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. বদরুদ্দোজ্জার নির্দেশে আত্রাই ও রাণীনগর উপজেলার মৃতদেহ বহনকারি মো. আব্দুল লতিফ মৃতদেহটি একটি বাঁশ দিয়ে আবারও নদীর মাঝ দিয়ে ভাসিয়ে দেন।

আত্রাই (আহসানগঞ্জ) বাজার এলাকার লোকমান হাকিম, সুব্রত সরকার জানান, গলিত ওই মৃতদেহটি থানার সংলগ্ন এলাকায় নদীর ধারে থাকা ঘাসে আটকে যায়। এ সময় মৃত দেহটি দেখতে শত শত লোক নদীর পাড়ে ভিড় করেন। এরপর বিকেলে পুলিশের নির্দেশে আব্দুল লতিফ লাশটি নদীর মাঝে ঠেলে দিয়ে ভাসিয়ে দেন।

স্থানীয় ব্যবসায়ী করিম সরদার, ফরমান, সাদেকুল ইসলামসহ অন্যান্যরা জানান, মৃত দেহটি থানা পুলিশ উদ্ধার না করে দায়িত্বের পরিচয় দেননি। পুলিশের উচিত ছিল মৃত দেহটি উদ্ধার করে প্রয়োজনীয় কাজ শেষে সরকারিভাবে দাফন সম্পন্ন করা।

আব্দুল লতিফ জানান, ময়না তদন্ত, দাফন, খরচ ও ঝামেলার হাত থেকে বাঁচতে থানা পুলিশ মৃত দেহটি উদ্ধার করতে দেননি। ফলে বাঁশ দিয়ে নদীতে ভেঁসে দেয়া হয়। নদী দিয়ে ভাঁসতে ভাঁসতে চলন বিল এলাকায় চলে গেছে।

উপজেলার শাহাগোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম বাবু জানান, ঘটনাটি স্থানীয়রা তাকে জানানো পর দ্রুত থানায় জানানো হয়। এরপর আত্রাই উপজেলার নদীর পানিতে ভেসে থাকা ওই মৃত দেহটি প্রায় সাড়ে তিন ঘন্টা থাকলেও থানা পুলিশ মৃত দেহটি উদ্ধার করেনি। ফলে ওই মৃত দেহটি কোথা থেকে ভেসে এসেছে এবং কি ভাবে তার মৃত্যু হয়েছে তার কারণ জানা সম্ভব হলো না।
আত্রাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. বদরুদ্দোজ্জা সেলফোনে শুক্রবার একাধিবার যোগাযোগ করা হলেও ফোন রিসিভ করেননি।

এবাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশেদুল হক জানান, গতকাল এলাকাবাসীরা পুলিশকে খবর দিয়েছিল কি? বিষয়টি আমার জানা নেই-খোঁজ নিয়ে দেখছি।

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer