ছবি: বহুমাত্রিক.কম
ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) : বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৬তম জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষ্যে ২২মে সোমবার জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গাহি সাম্যের গান মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে আলোচনা করেন লেখক-অভিনেতা-নির্দেশক মঞ্চসারথি আতাউর রহমান। প্রধান অতিথি বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন বহুমাত্রিক কবি। সাহিত্যের সকল দিক নিয়েই তিনি লিখেছেন। একইসাথে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন দেশপ্রেমিক। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে রবীন্দ্রনাথ হিসেবে পরিপূর্ণ করেছে বাংলার কাদা, মাটি, জল।’ তিনি আরও বলেন, ‘সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কবি নজরুল চর্চা খুবই জরুরি।’
অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে বক্তব্যে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহীত উল আলম বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমার কাছে পুরো একটি আকাশ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং কবি নজরুলের মধ্যে এক বিরাট মেলবন্ধন রয়েছে। তাদের দুজনেরই জন্ম মে মাসে।’
তিনি বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একজন বিরাট দার্শনিক ছিলেন। জমিদারির মাধ্যমে তিনি মানুষকে শোষণ করেন নি, বরং তিনি মানুষের দুঃখ, কষ্ট বুঝতেন। একইসাথে তিনি ছিলেন একজন আধুনিক মানুষ। যেকোন মুহূর্তের জন্য প্রস্তুত থাকাই আধুনিকতা, যার উদাহরণ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। নিত্য বিজ্ঞান, বৈপরীত্য, আকর্ষণ ও বিকর্ষণের এক বিরল আধার বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।’
উপাচার্য আরও বলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে আমরা যদি সংকীর্ণতার মধ্যে বেঁধে ফেলি তবে তাঁর কোন ক্ষতি হবে না, ক্ষতি হবে আমাদের। রবীন্দ্রনাথকে আমাদের বুকে ধারণ করে চর্চা করতে হবে। তবেই আমরা আমাদের জীবনকে মূল্যায়ণ করতে পারব।’
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক এ এম এম শামসুর রহমান, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো: নজরুল ইসলাম এবং কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মুশাররাত শবনম।
আলোচনা সভায় ‘রবীন্দ্রনাথের রাজা: দার্শনিক শিল্পভাষ্য’ শীর্ষক প্রবন্ধ পাঠ করেন বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মার্জিয়া আক্তার। প্রবন্ধটি আলোচনা করেন বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. মো: মাহবুব হোসেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. মো: হুমায়ুন কবীর। অন্যান্যের মধ্যে আলোচনা করেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি, চারুকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তপন কুমার সরকার। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রায়হানা আক্তার এবং থিয়েটার এন্ড পারফরমেন্স স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক মো: মাজহারুল হোসেন তোকদার।
আলোচনা সভার পরেই শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শুরুতে মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহীত উল আলম। এরপর সূচনা সংগীতসহ সংগীত পরিবেশন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগ।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত, আতাউর রহমান নির্দেশিত নাটক ‘রক্তকরবী’ (অংশ বিশেষ) পরিবেশন করে ঢাকার নাগরিক নাট্যসম্প্রদায়। এছাড়া থিয়েটার এন্ড পারফরমেন্স স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক ড. মো: কামালউদ্দীন’র নির্দেশনায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত কাব্যনাট্য ‘নরকবাস’ পরিবেশিত হয়। ফিল্ম এন্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ কর্তৃক চলচ্চিত্র পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় দিনব্যাপী রবীন্দ্র জয়ন্তীর আয়োজন।
বহুমাত্রিক.কম