ছবি: বহুমাত্রিক.কম
সাভার : মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে আজ সোমবার তৃতীয় দিনের মতো আমরণ অনশন অব্যাহত রেখেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
অনশনরতরা শিক্ষার্থীরা হলেন, ইংরেজি বিভাগের ৪২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তাহমিনা জাহান, একই বিভাগের সরদার জাহিদুল ইসলাম, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী পূজা বিশ্বাস এবং আইন ও বিচার বিভাগের ৪৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী খান মুনতাসির আরমান।
চলমান কর্মসূচিতে গতকাল রোববার রাতে দর্শন বিভাগের ফয়সাল আহমেদ নামের এক শিক্ষার্থী যোগ দিয়েছেন। এ নিয়ে অনশনকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা দাঁড়াল পাঁচ।
অনশনরত পাঁচ শিক্ষার্থীদের মধ্যে জাহিদুল ও পূজার বিরুদ্ধে মামলা আছে। বাকি তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা নেই। আজ সকালে অনশনস্থলে গিয়ে দেখা যায়, জাহিদুল, পূজা ও তাহমিনাকে স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে। তাঁরা শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের খন্ডকালীন চিকিৎসক আনিছুর রহমান বলেন, অনশনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে তিনজনের রক্তচাপ কমে গেছে। কিছু না খাওয়ায় তাঁদের শরীরে শর্করাসহ অন্যান্য উপাদান কমে গেছে। এ কারণে তাদের স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে।
অনশনরত শিক্ষার্থীরা জানান, মামলা প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা অনশন চালিয়ে যাবেন। শিক্ষার্থীদের অনশনের মুখে গতকাল দুপুরে জরুরি সিন্ডিকেট সভা বসে। সভায় শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট জানায়, মামলা প্রত্যাহার করা সম্ভব নয়।
উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম বলেন, ‘মামলার বাদী রাষ্ট্র। আমাদের পক্ষে মামলা প্রত্যাহার করা সম্ভব নয়।’
এদিকে, জাবি শিক্ষার্থীদের অনশনের তৃতীয় দিন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ২৭ জুন উপাচার্যের বাসভবন ভাঙচুর ও শিক্ষকদের উপর হামলা কারীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবিতে মৌন মিছিল করেছে জাবি শিক্ষকরা।
সোমবার দুপুরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ^াসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের ব্যানারে এ মৌন মিছিল বের করা হয়। মৌন মিছিলটি বিশ^বিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের সামনে থেকে শুরু হয়ে পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের সামনে গিয়ে শেষ হয়। মৌন মিছিল থেকে এসময় শিক্ষকরা অবিলম্বে উপাচার্যের বাসভবন ভাঙচুর ও শিক্ষকদের উপর হামলা কারীদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি জানান বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে।
এছাড়া যেকোন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে উপাচার্য প্রফেসর ড. ফারজানা ইসলামের বাসার সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৬ মে ভোরে ক্যাম্পাস-সংলগ্ন সিঅ্যান্ডবি এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে সড়ক দুর্ঘটনায় নাজমুল হাসান ও মেহেদি হাসান নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী নিহত হন। দুই শিক্ষার্থীর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ, চালকের শাস্তির দাবিতে পরদিন ২৭ মে বেলা পৌনে ১১টা থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।
অবরোধ তুলে দিতে বিকেল ৫টার দিকে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। এতে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা উপাচার্যে বাসভবন ভাংচুর করে। এ ঘটনায় ওই দিন রাতেই ৫৪ জনের বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় মামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বহুমাত্রিক.কম