Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ৬ ১৪৩১, শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪

তাহিরপুরের নয়নাভিরাম শিমুল বাগান

জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া, তাহিরপুরের শিমুল বাগান ঘুরে এসে

প্রকাশিত: ০১:৫২, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

আপডেট: ০২:০৮, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

প্রিন্ট:

তাহিরপুরের নয়নাভিরাম শিমুল বাগান

ছবি : বহুমাত্রিক.কম

সুনামগঞ্জ : শীতের পর বসন্তের বাতাস জানান দিচ্ছে শিমুল ফুল ফোটার সময় এসেছে। শিমুল ফুলের রক্তিম আভা বসন্তের বাতাসে দোল খাচ্ছে যাদুকাট নদীর তীরে শিমুল বাগানটিতে। হাওর, পাহাড়, নদীর পাশেই এখন নতুন আকর্র্ষনীয় স্থান লালে লাল তাহিরপুরের শিমুল বাগান।

মাঘের শুরুতেই শুরু হয় শেষ ভাগ থেকে ফালগুন পর্যন্ত শিমুল বাগানে রক্তিম আভা এই বাগানের মুল আকর্র্ষণ। বসন্তের সুরে সুর মিলিয়ে ইতিমধ্যে ফুটতে শুরু করেছে সারিবদ্ধ ভাবে সাজানো গাছে গাছে রক্ত মাখা শিমুল ফুল। পাপড়ি মেলে থাকা শিমুলের রক্তিম আভা আর শুভাষ মন রাঙ্গিয়ে ঘুম ভাঙ্গায় সৌখিন হ্নদয়ে এ যেনো কল্পনার রঙ্গে সাজানো এক শিমুলের প্রান্তর। সেই সোন্দর্য উপভোগ করতে সময় দল বেঁেধ হাজার হাজার পর্যটক ও দশনার্থীরা ছুটে আসছে এই শিমুল বাগানে।

স্থানীয়রা জানান, সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার মানিগাঁও গ্রাম সংলগ্ন শিমুল বাগানটি পর্যটকদের কাছে দিনদিন আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। শীত ও বর্ষায় সব সময় দল বেঁেধ হাজার হাজার পর্যটক ও দশনার্থীরা ছুটে আসছেন এই শিমুল বাগানের সৌর্ন্দয উপভোগ করতে। ওপারে ভারতের মেঘালয় পাহাড়। মাঝে চোখ জুড়ানো মায়াবী যাদুকাটা নদী, বারেকটিলা আর এ পাড়ে শিমুল বাগান। সব মিলে মিশে মানিগাঁও গ্রামটি গড়ে উঠেছে প্রাকৃতির এক অপরুপ এক অনবদ্য কাব্যবিক ভাবনায় প্রান্তর।

বাণিজ্যিক চিন্তা ধারা, থেকে যাদুকাটা নদীর পাড়ে গড়ে উঠেছে সুনামগঞ্জের আলোচিত বিশাল এলাকা নিয়ে এই শিমুল বাগান। বর্ষা ও শুষ্ক মৌসুমে এই শিমুল বাগানে সারি সারি গাছের সবুজ পাতার সুনিবির ছায়ায় পর্যটকদের ক্লান্তি ভুলিয়ে দেয়। আর বসন্তের ডালে ডালে ফুটে থাকা রক্ত মাখা লাল ফুলে আন্দোলিত করে সেই সাথে রাঙ্গিয়ে দেয় দর্শনার্থীদের মন। বর্ষা, বসন্তে আর হেমন্তেÍ এর একেক সময় একেক রুপ দেখা যায়। যা দেখে এক অন্য রকম ভাল লাগার অনুভুতি জন্ম নিয়েছে সৌন্দর্য পিপাসু লোকজনের মনে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০০২ সালে বাদাঘাট ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান প্রয়াত জয়নাল আবেদীন উত্তর বড়দল ইউনিয়নের মানিগাঁও গ্রামের যাদুকাটা নদী সংলগ্ন ৯৮ বিঘা অনাবাদী জমি ক্রয় করেন। এই জমিটি বালু আবরিত থাকায় বাণিজ্যিক ভাবেই এই শিমুল বাগান তৈরী করার জন্য তিনি প্রাথমিক ভাবে চিন্তার করেন। এই চিন্তা থেকেই তিনি এ বাগানে সারিবদ্ধ ভাবে ৩হাজারের অধিক শিমুল চারা রোপণ করেন। শুরু থেকে এপর্যন্ত ১৬ বছরের ব্যবধানে শিমুল চারা এখন ডালপালা পুষ্পপল্লবে এক অতুলনীয় দৃষ্টিনন্দন বাগানে পরিণত হয়েছে। শুধু তাই নয় এই বাগানে বিভিন্ন ছবি, নাটক ও গানের মিউজিক ভিডিওর শুটিং হচ্ছে।

এই বাগানে বেড়াতে আসা স্থানীয় সোহেল আহমেদ সাজু বলেন, এই বাগানটি দেখতে অসাধারণ। খোলা মেলা অবস্থান এত বড় শিমুল বাগান দেশের কোথাও আর দেখে নি। এই বাগানে প্রচুর দর্শানার্থী আসে খুবেই ভাল লাগার মত এলাকা। নদী, পাহাড় আর শিমুল বাগান প্রকৃতির এক অপূর্ব মিলনমেলা। যার ফলে বাগানের ভিতরটায় গেলে দর্শনার্থী ও পর্যটকগন এক অন্য রকম ভাল লাগার জন্ম নেয়। হারিয়ে যায় অন্য এক অজানা ভুবনে। এই বাগানটিকে আরো আধুনিক করে সাজালে এটি হবে এই জেলার আলোচিত পর্যটন স্পট। এই শিমুল বাগানটি দেখার জন্য প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটন ও সৌন্দর্য পিপাসু লোকজন আসছেন অনেক কষ্ট করে।

শিমুল বাগানের প্রতিষ্টাতা জয়নাল আবেদিনের ছেলে বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান রাখাব উদ্দিন বলেন, আমার বাবা একজন বৃক্ষপ্রেমী ছিলেন তিনি যাদুকাটা নদীর তীরে শিমুল বাগান-ই লাগাননি টাংগুয়ার হাওরের যে দৃষ্টিনন্দন হিজর করছ আছে সেগুলোও তিনিই লাগিয়েছেন। বাবা নেই আছে তার রেখে যাওয়া এক অনবদ্য সৃষ্টি। যার জন্য এখনও সবাই আমার বাবার কথা মনে করছে। বাবার রেখে যাওয়া এই দৃষ্টি নন্দন শিমুল বাগানটি আমি দেখাশুনা করছি। আরো কি ভাবে ভাল রাখা যায় সৌন্দর্য ভাড়ানো যায় সে চেষ্টা করছি। এছাড়াও এই বাগানটিকে ঘিরে পর্যটকদের স্বার্থে ও জেলায় একটি আন্তর্জাতিক মানের রিসোর্স করা যায় সে চেষ্টাও করছি।

তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল বলেন, এই শিমুল বাগানটি দিন দিন সবার কাছে আকর্ষনীয় হয়ে উঠেছে। যার ফলে অনেক দর্শনার্থী ও পর্যটকরা পূর্বে না আসলেও এখন দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকেই আসছে এক পলক দেখার জন্য এ বাগানটি।

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer