Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ৫ ১৪৩১, শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪

ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ায় শঙ্কার মেঘ ইউরোপে

বহুমাত্রিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ০০:১৪, ১০ নভেম্বর ২০১৬

আপডেট: ০০:১৬, ১০ নভেম্বর ২০১৬

প্রিন্ট:

ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ায় শঙ্কার মেঘ ইউরোপে

ঢাকা : ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ায় বিশ্বের কোথাও কোথাও দেখা দিয়েছে শঙ্কার মেঘ, কোথাও বা দমফাটা উল্লাস। কারও মতে, আমেরিকায় একটি যুগের অবসান ঘটালেন রিপাবলিকান ট্রাম্প।

কেউ বলছেন, ট্রাম্পের ভাবমূর্তি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পক্ষে উপযুক্ত নয়। কেউ কেউ আবার সরাসরি মন্তব্য না করে কিছুটা এড়িয়ে গিয়ে বলেছেন, সামনের দিনগুলিতে তাঁর কাজকর্মই বলে দেবে ট্রাম্পকে ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে বেছে নিয়ে মার্কিন জনতা কতটা সিদ্ধান্ত নিলেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের নির্বাচন দৃশ্যতই রাশিয়া ও ইউরোপের দেশগুলিকে কার্যত আরও বেশি করে দুই শিবিরে আলাদা করে দিয়েছে। যতটা খুশি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, ততটাই আশঙ্কা আর উদ্বেগের সুর শোনা গিয়েছে ফ্রান্স, জার্মানি সহ ইউরোপের শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলির নেতা-নেত্রীদের গলায়।

আবার সদ্যই ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছেড়ে বেরিয়ে আসা দেশ ব্রিটেনের গলায় কিন্তু অন্য সুর। ব্রিটেন সদ্য নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে হাত মিলিয়ে চলা যায় বলেই মনে করছে। প্রায় একই সুর ভারতেরও।

টুইট করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, ‘‘অভিনন্দন জানাচ্ছি আপনাকে। আগামী দিনে আমেরিকার সঙ্গে ভারতের আরও জোরদার সম্পর্ক গড়ে ওঠার দিকে তাকিয়ে আছি।’’ ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। অভিনন্দন বার্তায় সদ্য নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডন্টকে সস্ত্রীক বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণও জানিয়েছেন তিনি।

কিন্তু আশঙ্কা আর উদ্বেগের সুরটা শোনা গিয়েছে ফ্রান্স আর জার্মানির মতো ইউরোপের বড় রাষ্ট্রশক্তিগুলির নেতা-নেত্রীদের গলায়। জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মর্কেল সরকারের এক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী বলেছেন, ‘‘ভূ-রাজনৈতিক ভাবে খুবই অনিশ্চয়তার পরিবেশ তৈরি হল। এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট (ট্রাম্প) কী করবেন, সে সম্পর্কে আমাদের কোনও ধারণাই নেই।’’

জার্মান চ্যান্সেলরের দল ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ইউনিয়ন (সিডিইউ)-এর সদস্য এবং জার্মান পার্লামেন্টের বিদেশ সংক্রান্ত কমিটির প্রধান নর্বার্ট রোয়েটজেন বলছেন, ‘‘অমন একটা বদরাগী মানুষ কী ভাবে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করবেন, কী ভাবেই বা আগামী দিনে তিনি বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাশালী মানুষ হয়ে উঠবেন, তা নিয়ে আমরা সংশয়ে আছি।’’

আরও সরাসরি মন্তব্য করেছেন আমেরিকায় ফরাসি রাষ্ট্রদূত গেরার্ড আরাউদ। তাঁর টুইটে আরাউদ লিখেছেন, ‘‘ব্রেক্সিট আর ট্রাম্পের মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর মনে হচ্ছে, দুনিয়ায় সব কিছুই ঘটতে পারে। গোটা বিশ্বটা চোখের সামনে যেন কেমন করে ভেঙে যাচ্ছে! এটুকু বলা যায়, নিও-লিবারালিজমের দিন শেষ হল। এর পর কী হবে, জানি না।’’ পরে অবশ্য আরাউদের টুইটটি ডিলিট (মুছে দেওয়া) করে দেওয়া হয়।

চীনের সরকারি সংবাদ মাধ্যম অবশ্য পরোক্ষে ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার ঘটনাকে সমর্থনই করেছে। ‘জিনহুয়া’ বলেছে, ‘‘আমেরিকার সঙ্কটের সময়েই এই রায়টা এল। আমেরিকার একটি বড় অংশের মানুষ যে আর দেশের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মাতব্বরদের মাতব্বরি পছন্দ করছেন না, তারই প্রমাণ মিলেছে এই রায়ে।’’

যদিও চীনা কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র ‘পিপলস্‌ ডেলি’ একটি নিবন্ধে ট্রাম্পের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার ঘটনাটিকে ‘‘দুর্বল গণতন্ত্রের পরিচায়ক’ বলে বর্ণনা করেছে। ভোটের আগে থেকেই রাশিয়ার মতো চীনও কিছুটা প্রকাশ্যে ট্রাম্পকে সমর্থন করছিল। কারণ, চীনের বিদেশনীতি নিয়ে একটি কথাও বলেননি ট্রাম্প, তাঁর ভোট প্রচারে।

ও দিকে ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট ওবামার সময়েই দক্ষিণ চীন সাগরে চীনা মাতব্বরি কমাতে মার্কিন তৎপরতা সকলেরই নজর কেড়েছিল। ট্রাম্পের হাতে হাত মিলিয়ে চলার ব্যাপারে আশা প্রকাশ করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে।

ও দিকে, ট্রাম্পকে পাঠানো অভিনন্দন বার্তায় হাসিনা বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আগামী দিনে আরও দৃঢ় হবে। আমি আশাবাদী আপনার নেতৃত্বে আমেরিকার সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হবে। দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক স্বার্থ সম্পর্কিত বিষয়গুলো আমরা ভবিষ্যতে আরও এগিয়ে নিয়ে যাব এবং নিরাপদ বিশ্ব ব্যবস্থা গড়ে তুলব, যেখানে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বাস করতে পারবে এবং সমৃদ্ধির পথে শান্তিপূর্ণ ভাবে ক্রমশ এগিয়ে যাবে।’’

আনন্দবাজার পত্রিকা

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer