Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

বৈশাখ ৫ ১৪৩১, শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪

ঝিনাইদহে পাসপোর্ট অফিসে ঘুষ বাণিজ্যের ‘নেতৃত্বে’ আলপিন নাহার

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ০৩:৩০, ২১ জানুয়ারি ২০১৭

আপডেট: ০০:০০, ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯

প্রিন্ট:

ঝিনাইদহে পাসপোর্ট অফিসে ঘুষ বাণিজ্যের ‘নেতৃত্বে’ আলপিন নাহার

ছবি: বহুমাত্রিক.কম

ঝিনাইদহ : ঝিনাইদহ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের অফিস সহকারী আলপিন নাহারের বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্যের নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

অপরদিকে, সাবেক সহকারী উপ-পরিচালক আব্দুল মোত্তালেব সরকারের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দফা তদন্তে ব্যাপক দুর্নীতি ও ঘুষ বাণিজ্যর প্রমাণ মিলেছে। শুক্রবার রাজশাহী বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের সহকারী পরিচালক আবজাউল আলম তদন্তে আসেন।

এর আগে গত বছরের গত ২৪ আগষ্ট ডিএডি আব্দুল মোত্তালেব সরকারের বিরুদ্ধে কর্মক্ষেত্রে হয়রানি, ঘুষ বাণিজ্য ও উত্যক্তসহ যৌন নিগ্রহের অভিযোগ তদন্ত করতে ঝিনাইদহে আসেন প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (সংস্থাপন) নাসরিন পারভিন নুপুর। তিনি তদন্ত করে রিপোর্ট প্রদান করেন। ওই রিপোর্টে উভয়ই ফেঁসে যান।

অভিযোগ পাওয়া গেছে, চাকরি বাঁচাতে উপর মহলে তদ্বির করে আবারো দ্বিতীয় দফা তদন্তের আয়োজন করেন সহকারী উপ-পরিচালক আব্দুল মোত্তালেব সরকার। দ্বিতীয় দফার রিপোর্টটি পুরোপুরি তার পক্ষে নেবার জন্য মিমাংসিত বিষয়টি নতুন করে আবারো তদন্ত করা হচ্ছে মর্মে অভিযোগ উঠেছে।

তদন্ত কর্মকর্তা আবজাউল আলম শুক্রবার সাংবাদিকদের জানান, নিরপেক্ষ ভাবে বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। উভয় পক্ষের তথ্য উপাত্ত যাচাই করা হচ্ছে। তিনি দ্রুত রিপোর্ট দিবেন বলে জানান।

ঝিনাইদহ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক বজলুর রশিদের কাছে তদন্তের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে সাংবাদিকদের বলেন, গোপন তদন্তের বিষয়ে আপনারা বিভাবে খবর পেলেন ?

সহকারী উপ-পরিচালক আব্দুল মোত্তালেব সরকারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগকারী রোখসানা জানান, আমি বিষয়টি ডিজি মহোদয়কে লিখিতভাবে জানিয়েছিলাম। প্রথমে একবার তদন্ত হয়েছে। পক্ষপাতিত্ব নয়, আমি ন্যায় বিচার চাই।

উল্লেখ্য, পাসপোর্ট গ্রহিতাদের কাছ থেকে বেপরোয়া ঘুষ আদায়, মানুষের সাথে চরম দুর্ব্যবহার, দুর্নীতি ও অফিসের নারী কর্মচারী রোখসানাকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার কারণে মোতালেব সরকারকে রাঙ্গামাটি পাসপোর্ট অফিসে বদলি করা হয়। সে সময় ঝিনাইদহ পাসপোর্ট অফিসে পদায়ন (চঃ দাঃ) করা হয় রাঙ্গামাটি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের ডিএডি ফরিদ উদ্দীন আহমেদকে। কিন্তু ফরিদ উদ্দীনকেও ২/৩ মাস পর বদলি করা হয়।

বর্তমান সহকারী পরিচালক হিসেবে বজলুর রশিদকে পদায়ন করা হয়েছে। অভিযোগ পাওয়া গেছে, একাধিক কর্মকর্তার বদলি হলেও ঝিনাইদহ পাসপোর্ট অফিসে ঘুষ বন্ধ হয়নি। বরং ঘুষের রেট আট’শ থেকে বৃদ্ধি করে ফাইল প্রতি নয়’শ টাকা করা হয়েছে।

এ হিসেবে ঝিনাইদহ পাসপোর্ট অফিসে দিনে আনুমানিক এক থেকে দেড় লাখ টাকা করে ঘুষ আদায় করা হচ্ছে। ঘুষের টাকা না দিলে চরম ভাবে হয়রানি করা হয় মানুষকে। এ নিয়ে পাসপোর্ট গ্রহিতাদের মাঝে ক্ষোভ এবং অসেন্তাষের অন্ত নেই। পদে পদে হয়রানি ও দুর্ব্যবহারের শিকার হতে হয় ঝিনাইদহের মানুষকে। ঝিনাইদহ পোসপোর্ট অফিসের ঘুষের টাকা প্রতি সপ্তাহে ভাগাভাগি করা হয়। এর মধ্যে সহকারী পরিচালকের নামে ৬০% ও বাকী ৪০% টাকা সাধারণ স্টাফরা ভাগ করে নিচ্ছেন।

অফিস সহকারী আলপিন নাহার এই ঘুষ বানিজ্যের নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে অভিযোগ। তার সাথে আছেন সুপারভাইজার ইমরান, গৌতম কুমার সাহা, মাসুদ, হাসান, জয়নাল আবেদীন, কামরুজ্জামান ও সোহাগ।

এরা স্টোর রুম ও বাথরুমে ঢুকে ঘুষ নিয়ে থাকেন। এদের মধ্যে ইমরান, সোহাগ, কামরুজ্জামান ও জয়নালের কোন সরকারি বেতন নেই। একটি প্রজেক্টে এই চারজনের বেতন হতো। প্রজেক্ট শেষ হওয়ার পর ঘুষের টাকায় এদের বেতন দেওয়া হয়।

অফিস সহকারী আলপিন নাহার ঘুষ আদায় করে প্রতি সপ্তাহে ইমরান, সোহাগ, কামরুজ্জামান ও জয়নালের বেতন প্রদান করেন। এ বিষয়ে ঝিনাইদহ পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক বজলুর রশীদ জানান, আমি নতুন মানুষ। অফিসে কোন ঘুষ নেওয়া হয় কিনা তা আমার জানা নেই। কর্মচারী ইমরান, সোহাগ, কামরুজ্জামান ও জয়নালের কি ভাবে বেতন দেওয়া হয় তিনি বলতে পারেন নি।

অফিস সহকারী আলপিন নাহার জানান, রোববার অফিস টাইমে এসে সব কিছু শুনে যাবেন। আমি তো অফিসের প্রধান নই।

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer