ছবি: বহুমাত্রিক.কম
খুলনা : ‘ঘরের মধ্যে পানি। রান্নাঘরের চুলা ডুবেছে পানিতে। রান্না করতে পারছি না। ঘরের বাইরে যেতে পারছি না। গত চারদিন ধরে এ অবস্থায় ঘরে বন্দি হয়ে থাকলেও নগরপিতার খবর নেই। সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে কেউ খোঁজও নেননি। কেমন আছি কিভাবে আছি।’
নগরীর খালিশপুরের বাস্তহারা কলোনীর বাসিন্দা আব্দুস সাত্তার ক্ষোভ প্রকাশ করে এ কথা বলেন।
মঙ্গলবার বেলা ১১ টায় বাস্তহারা কলোনীতে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি ঘরেই পানি উঠেছে। ঘরের মধ্যে মেঝেতে বসার জায়গা নেই। ঘরের মধ্যে মাচায় জড়োসড়ো হয়ে বসে আছে আব্দুস সাত্তারের পরিবার। ঘরের বাইরে দাড়িয়ে কথা হয় তার সাথে। তিনি বলেন, আমরা গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছি কিন্তু মেয়রের দেখা পাইনি।
নগরীর সামসুর রহমান সড়কের বাসিন্দা কামরুল ইসলাম বলেন, নিয়মিত সিটি কর্পোরেশনের কর পরিশোধ করছি। কিন্তু ন্যনতম নাগরিক সেবা পাচ্ছি না। নগরীর রাস্তাঘাট জরাজীর্ন হয়ে পড়েছে। সংস্কার হয় না। সিটি কর্পোরেশন ওয়াসার কাজের অজুহাত দেখিযৈ পার পেতে চায়। নগরবাসীর সেবায় কেসিসির কোন মাথা ব্যথা নেই।
মুজগুন্নী সড়কের বাসিন্দা বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে চাকরীজীবী মামুনুর রহমান বলেন, গত দুই দিন অফিসে যেতে পারিনি। মঙ্গলবার সকালে অফিসে গিয়েছিলাম। এখন (দুপুর আড়াইটা) রিক্সা পাইনি। সড়কে পানির কারণে ইজি বাইক চলতে পারছে না। হাটুর উপরে পানি জমেছে। পরণের পোষাক নোংরা পানিতে ভিজে গেছে।
গত কয়েকদির বৃষ্টিপাতের ফলে খুলনা মহানগরীর বেশিরভাগ সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। নগরীর খানজাহান আলী রোড়, কেডিএ এভিনিউ, যশোর রোড়. শামছুর রহমান রোড়, গগন বাবু রোডসহ ও ৩১ নং ওয়ার্ডের বেশিররভাগ এলাকায় দুপুর পযর্ন্ত জলাবদ্ধতার মধ্যে যানবাহন চলাচল করতে হচ্ছে।
যশোর রোড়ের বয়রা এলাকায় জলাবদ্ধতার কারণে অনেককে জাল দিয়ে মাছ ধরতে দেখা গেছে। মাছ ধরায় কাজে যোগ দিয়েছে শিশুরাও।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে নগরীর খানজাহান আলী সড়কে রয়েল মোড়, শান্তিধাম এলাকা ঘুরে কোমর পানির মধ্যে যানবহন চলাচল করতে দেখা যায়। পানির মধ্যে বিকল হয়ে যাওয়া যানবহনগুলোকে চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। বৃষ্টির কারণে নগরীর স্কুলগুলো অঘোষিত ছুটির অবস্থা দেখা দিয়েছে। অনেকে বৃষ্টির মধ্যে স্কুলে গিয়ে আবার কাকভেজা হয়ে বাড়ি ফিরতে হয়েছে।
তবে অপর এক সূত্র দাবি করেছে, সিটি মেয়র বিএনপির নগর শাখার সাধারণ সম্পাদক নগরবাসীর দুর্দশার খোজ না নিলেও দলীয় সভা সমাবেশে তৎপর। তিনি প্রতিদিন বিকেলে বিএনপির সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচিতে বিভিন্ন ওর্য়াডের বিএনপির সভায় যোগ দিচ্ছেন। তিনি ব্যস্ত নিজের পদ সামাল দিতে।
খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র মনিরুজ্জামান মনি বলেন, রুপসা ও ভৈরব নদীতে জোয়ারের পানির উচ্চতা বেড়েছে। জোয়ারের সময়ে শহরের রুপসা, নতুন বাজারসহ বিভিন্ন। লোকা দিয়ে জোয়ারের পানি শহরে প্রবেশ করছে। ভাটার সময়ে সব পানি নেমে যেতে পারছে না। পানি নেমে যাবার স্লুইজ গেটগুলিতে সিটি করপোরেশনের প্রকৌশলীরা তদারকি করছেন। মেয়র বলেন, তিনি প্রতিদিনই নগরীর বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে খোজ খবর নিচ্ছেন।
বহুমাত্রিক.কম