ঢাকা : জরায়ুমুখের ক্যান্সার নির্ণয়ে ‘লিকুইড বেইসড সাইটোলজি (এলবিসি) পদ্ধতি বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো চালু হয়েছে।
জরায়ুমুখের ক্যান্সার নির্ণয়ে উন্নতমানের এই পদ্ধতি আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করার লক্ষ্যে শনিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) শহীদ ডা. মিলন হলে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন
বিশেষ অতিখি ছিলেন,বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মোঃ শহীদুল্লাহ সিকদার ও উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ডা. এ এস এম জাকারিয়া স্বপন। সভাপতিত্ব করেন প্যাথলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. অসীম রঞ্জন বড়ুয়া।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়,বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ১৩ হাজার নারী জরায়ুমুখ ক্যান্সারে নতুন করে আক্রান্ত হন। একটু সচেতন হলেই এর প্রতিরোধ সম্ভব। নারীদেহের বিভিন্ন প্রকার ক্যান্সারের মধ্যে জরায়ুমুখ দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এবং ক্যান্সারজনিত মৃত্যুতে এর স্থান পঞ্চম বলে বিশেষঞ্জ চিকিৎসকরা উল্লেখ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যাথলজি বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে জিএসবির সভাপতি অধ্যাপক ডা. লায়লা আঞ্জুমান বানু, গাইনী বিভাগের অধ্যাপক ডা. আশরাফুন্নেসা, বেকটন ডিকশন-এর বিজনেস ডিরেক্টর নীরাজ রাগুবংশী বক্তব্য রাখেন।
অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান বলেন, জরায়ুমুখের ক্যান্সার নির্ণয়ে লিকুইড বেইসড সাইটোলজি পরীক্ষাটি চালু হওয়ায় দীর্ঘদিনের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হলো।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা ও চিকিৎসাসেবা আজ একটি গৌরবের জায়গায় পৌঁছেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন,দেশের চিকিৎসাসেবার মান অনেক বেড়েছে এবং অনেক দূর এগিয়ে গেছে। আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালু হলে বাংলাদেশেই আন্তর্জাতিক মানের চিকিৎসাসেবা দেয়া সম্ভব হবে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, জরায়ুমুখের ক্যান্সার নির্ণয়ে এ ধরণের পরীক্ষা পদ্ধতি বাংলাদেশে এই প্রথম। প্রচলতি কনভেনশনাল মেথড থেকে এ পদ্ধতি অনেক উন্নতমানের।
বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সুলভ মূল্যে সংশ্লিষ্ট রোগীরা এ পরীক্ষাটি করাতে পারবেন। ভবিষ্যতে লিকুইড বেইসড সাইটোলজি পরীক্ষা পদ্ধতির মাধ্যমে জরায়ুমুখের ক্যান্সার ছাড়াও অন্যান্য ক্যান্সারসমূহ সঠিকভাবে নির্ণয় করা যাবে। লিকুইড বেইসড সাইটোলজি ডায়াগনোসিস-এর মাধ্যমে আরো স্পষ্টভাবে ক্যান্সারের পূর্ব অবস্থা নির্ণয় করা যাবে এবং ক্যান্সার হওয়া থেকে মানুষকে রক্ষা করা যাবে।
বক্তারা জানান,প্যাপ স্মিয়ার টেস্টের মাধ্যমে এ জাতীয় ক্যান্সার এবং এর পূর্ববর্তী অবস্থা সহজে সনাক্ত করা যায়। আর প্যাপ স্মিয়ার টেস্ট আরো সঠিকভাবে সম্পন্ন করার জন্য দেশে প্রথমবারের মতো এলবিসি প্রযুক্তিটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে চালু করা হয়েছে।
প্রতিদিন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যাথলজি বিভাগে উক্ত পরীক্ষাটি সর্বসাধারণের জন্যে ব্যবস্থা করা হয়েছে। এটি বর্তমানে প্রচলিত পদ্ধতি-কনভেনশনাল প্যাপ স্মিয়ার থেকে উন্নততর। বিএসএমএমইউ-এর প্যাথলজি বিভাগে হিস্টোপ্যাথলজি, সাইটোপ্যাথোলজি প্রভৃতি পরীক্ষার পাশাপাশি বর্তমানে ইমিউনোহিস্টো কেমিস্ট্রি ইমিউনোফ্লুরেসেন্স ও ক্রোমোসোমাল এনালাইসিস পরীক্ষাসমূহ করা হচ্ছে।