ঢাকা : জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস উপলক্ষে আগামী ১৮ এপ্রিল মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে সরকারি আইনি সহায়তা কার্যক্রমের (সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড) অগ্রগতি সম্পর্কে মতবিনিময় সভা (মিট দ্য প্রেস) অনুষ্ঠিত হবে।
সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির সদস্য সচিব ও সহকারী এটর্নি জেনারেল এডভোকেট টাইটাস হিল্লোল রেমা জানান, আগামী ২৮ এপ্রিল পঞ্চমবারের মতো ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস’ পালিত হতে যাচ্ছে।
দিবসটি উপলক্ষে সুপ্রিম কোর্টের কনফারেন্স কক্ষে ১৮ এপ্রিল সকাল ১০টায় ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠিত হবে। দেশের সর্বোচ্চ আদালতে বিন্যামূল্যে তথা সরকারি খরচে আইনি সেবা কার্যক্রম বিষয়ে এ মিট দ্য প্রেস তথা মতবিনিময়ের আয়োজন।
সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান বিচারপতি এম, ইনায়েতুর রহিমসহ কমিটির সদস্যগণ এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। অনুষ্ঠানকে সফল করতে আইন, মানবাধিকার বিষয়ক এবং সুপ্রিম কোর্টে দায়িত্ব পালনরত গণমাধ্যমকর্মীদের সংগঠন ল’রিপোর্টার্স ফোরামকে (এলআরএফ) অনুরোধ জানানো হয়েছে।
তিনি বলেন, এখন দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টে অসমর্থ বিচার প্রার্থীরা বিনা খরচায় (সরকারি খরচ) আইনি সেবা পাচ্ছেন। সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির এ কার্যক্রম সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে অবহিত করতে গণমাধ্যম অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
২০১৫ সালের ৮ সেপ্টেম্বর প্রধান বিচারপতি সুপ্রিম কোর্টে লিগ্যাল এইড স্থাপন করেন। এ লিগ্যাল এইড অফিসের মাধ্যমে উচ্চ আদালতে সরকারি খরচে আইনি সেবা দেয়া হচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টের লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এম, ইনায়েতুর রহিম।
সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার (প্রশাসন ও বিচার) মো. সাব্বির ফয়েজ বাসস’কে বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে অসহায় ব্যক্তিদের বিনামূল্যে আইনি সহায়তা ও পরামর্শ দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটি। দিনে দিনে এ সেবার কার্যক্রম আরো গতিশীল হচ্ছে এবং কার্যের পরিধিও বাড়ছে।
তিনি বলেন, জেলখানায় আটক বন্দীদের আইনি সেবার মানোন্নয়নে দেশের প্রত্যেকটি জেলার কারাগারগুলোতে চিঠি প্রেরণ করে তথ্য বিনিময়ের পাশাপাশি জেল আপীল মামলাগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেখার অনুরোধও জানানো হয়েছিলো। ফলে এক্ষেত্রে ইতিবাচক ফল পাওয়া যাচ্ছে। যা গণমাধ্যমের কল্যাণে দেশবাসী অবহিত হচ্ছে।
আগামী ২৮ এপ্রিল দেশে পঞ্চমবারের মতো ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস’ পালিত হবে। গতবছরও এদিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে ‘জাতীয় আইনগত সুবিধা প্রদান দিবসের’ অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী লিগ্যাল এইড কল সেন্টার জাতীয় হেল্পলাইনের উদ্বোধন করেন। এ হেল্পলাইনে ১৬৪৩০ নম্বরে ফোন করে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদানকারী সংস্থার মাধ্যমে বিনামূল্যে আইনি সহায়তা পাচ্ছেন দেশের স্বল্প আয়ের ও অসহায় বিচারপ্রার্থীগণ।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল, সহায় সম্বলহীন, অসমর্থ বিচারপ্রার্থী জনগণকে সরকারি খরচে আইনি সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে ‘আইনগত সহায়তা প্রদান আইন-২০০০’ প্রণয়ন করে। ২০০০সালে তৎকালীন শাসন আমলে আইনটি প্রণয়ন করে আওয়ামী লীগ। তারপরের সরকারগুলো আইনটি কার্যকরে উল্লেখযোগ্য কোন পদক্ষেপ নেয়নি। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠনের পর আওয়ামী লীগ দরিদ্র ও অসচ্ছল জনগণের বিচারপ্রাপ্তি নিশ্চিতে আইনটি কার্যকরে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং তা অব্যাহত রয়েছে।
২০০০ সালে প্রণীত আইনটি অনুযায়ি ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা’ গঠন করা হয়। রাজধানীর ১৪৫, নিউ বেইলী রোডে এ সংস্থার প্রধান কার্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। এর ব্যাপ্তি সুপ্রিম কোর্ট, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত নেয়া হয়। জেলা কমিটি গঠন, প্রতিটি জেলা জজ আদালতে এর কার্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। এতে দরিদ্র-অসচ্ছল ও অসহায় জনগণ বিচারপ্রাপ্তিতে সুবিধা পাচ্ছেন। নানা প্রচার, প্রচরণা, সেমিনার ও কর্মশালা আয়োজনের মধ্য দিয়ে এ সেবা বিষয়ে জনসচেতনতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার নিজস্ব ওয়েবসাইট রয়েছে। এ ওয়েবসাইটে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান বিষয়ে বিস্তারিত সকল তথ্য জানা যায়।
