আগের ছবি
কুষ্টিয়া : ‘পারে লয়ে যাও আমায়’- এই মরমী উচ্চারণে বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের ১২৬তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে রোববার থেকে কুষ্টিয়ার ছেউড়িয়ার আখড়াবাড়িতে শুরু হচ্ছে তিন দিনব্যাপী আলোচনা, সংগীতানুষ্ঠান ও লালন মেলা।
রোববার সন্ধ্যায় সংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নুর এমপি আনুষ্ঠানিকভাবে এর উদ্বোধন করবেন।
অনুষ্ঠানে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মো. জহির রায়হানসহ লালন গবেষকসহ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখবেন।
এদিকে তিরোধান দিবস উপলক্ষে লালন মাজার প্রাঙ্গনে বসেছে সাধুদের হাট। আখড়াবাড়ি ঘুরে দেখা গেছে, ইতিমধ্যেই মাজারপ্রাঙ্গনে আসতে শুরু করেছে বাউল ভক্ত ও সাধুরা। লালন উন্মুক্ত মঞ্চে বসবে আলোচনা ও সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকবে।
কালিগঙ্গার ভরাট জায়গায় হরেক রকমের পণ্যের পসরা বসাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। থাকবে নাগরদোলাসহ বিভিন্ন আসবাবপত্রের দোকানপত্র, খৈ, মুড়ি, মুড়কি, বাতাসা, জিলাপীসহ নানান দোকানপাট।
আশপাশে ও আখড়াবাড়ি চত্বরে লালন ভক্তরা আসন গেড়ে বসেছেন। মুখে মুখে থাকবে সাঁইজির বাণী। এই অনুষ্ঠানে প্রকৃত সুরে লালনের আধ্যাত্মিক গান পরিবেশনের জন্য খন্ড খন্ড আকারে লালন সঙ্গীত শোনাবেন এবং দেশ-বিদেশ থেকে আসা লাখ লাখ লালন ভক্তকে তৃপ্তি দিবেন।
লালন একাডেমির শিল্পী শিরীন আক্তার জানান, লালনের গান বিভিন্নভাবে ও মিউজিক দিয়েও গাওয়া হচ্ছে। আমরা লালনের প্রকৃত সুর ধরে রাখার চেষ্টা করছি। আগামী তিন দিন ধরে লালনের গানের আধ্যাত্মিকতা তুলে ধরা হবে তার সুরেই। এখানে আসা লালন অনুসারী বাউলদের খাদ্যসহ সব ব্যবস্থা নিশ্চিত করার পাশাপাশি বিশাল এই লালন মেলার।
১৮৯০ সালের ১৬ অক্টোবর (পহেলা কার্তিক) তার মৃত্যুর পর থেকে লালন ভক্তরা এ ধারা অব্যাহত রেখেছে। প্রতিবছর বাউল সম্রাট লালনের মৃত্যু বার্ষিকীতে বাউলভক্ত সাধু-গুরুরা আখড়াবাড়িতে চলে আসে বেশ কয়েকদিন আগে থেকেই। তার মৃত্যুর পর থেকে এ ধারা অব্যাহত রয়েছে। এবারও এর ব্যাতিক্রম হয়নি। সাধু আঙিনায় আসন পেতে বসেছেন লালন অনুসারী-বাউলরা।
লালন ফকিরের জাতহীন মানবধর্মে দীক্ষিত হয়ে তার জীবনকর্ম, ধর্ম-দর্শন, মরমি সংগীত ও চিন্তা-চেতনা হাতড়ে তা থেকে শিক্ষা নিতে দাওয়াতপত্র ছাড়াই দিন-ক্ষণ ঠিক রেখে এবারও সাঁইজির ধামে ছুটে আসবেন ভক্ত, অনুসারী, দর্শনার্থীরা।
এবার এ উৎসবে যোগ দিতে বাউলরা অনেক আগে থেকে মাজার চত্বরে আসন গেড়েছেন। উৎসবে লাখো বাউল ভক্তদের পদচারণায় মুখরিত কুষ্টিয়ার ছেউড়িয়ার লালন চত্বর। বহিরাগতদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। নিরাপত্তার জন্য সকল ধরনের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানালেন লালন একাডেমীর ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক সেলিম হক।
বহুমাত্রিক.কম