দিল্লির অনেক নারী চুল রক্ষা করার জন্য খোঁপায় দেবিখচিত ব্যান্ড ব্যবহার করেন।
ঢাকা : ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ হরিয়ানা ও রাজস্থানে পঞ্চাশেরও বেশি নারী অচেতন অবস্থায় তাদের চুল কেটে নেওয়ার অভিযোগ করেছেন।
পুলিশও এই রহস্যের কূল-কিনারা খুঁজে পাচ্ছে না, রীতিমতো নাকানিচুবানি খেতে হচ্ছে তাদের।
এই রহস্যেঘেরা `চুল চোর` কে নিয়ে দুই রাজ্যের নারীদের মধ্যে যে ভয় ও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে, তা নিয়ে প্রতিবেদন করেছেন বিবিসির বিকাশ পান্ডে।
"হঠাৎ একদিন তীব্র আলোর ঝলকানি আমাকে অচেতন করে দেয়। এক ঘন্টা পর জেগে দেখি আমার চুল কেটে নেওয়া হয়েছে," বলেন সুনিতা দেবী। তাঁর বয়স ৫৩ বছর।
হরিয়ানার গুরগাঁও জেলার ভিমগড় খেরির এই গৃহিনী শুক্রবারের ওই হামলার `মানসিক আঘাত` ভুলতে পারছেন না। তিনি না পারছেন ঘুমাতে, কোনো কিছুতে মনোযোগও দিতে পারছেন না।
সুনিতা দেবী যে এলাকায় থাকেন সেটি মূলত ব্যবসায়ী এবং কৃষক অধ্যুষিত এলাকা। তিনি অভিযোগ করেছেন, চুল কেটে নেওয়া বয়স্ক পুরুষ চোরের পরনে ছিল উজ্জ্বল রংয়ের কাপড়।
রাত সাড়ে নয়টার দিকে নিচতলায় একা ছিলেন সুনিতা; ছেলের বউ আর নাতি ছিলেন দোতলায়। অথচ কেউই কিছু শুনতে পায়নি।
তারা যে গলিতে থাকেন সেখানে আরও প্রায় বিশটির মতো ঘর আছে। রাত নয়টা থেকে ১০টা পর্যন্ত প্রত্যেকটি বাড়িতে লোক গমগম করে বলে জানান প্রতিবেশিরা, রাতের খাবারের পর সবাই কথা বলে বা বিশ্রাম করে।
"শুক্রবারও এর ব্যতিক্রম ছিল না। কিন্তু প্রতিবেশিদের কেউই সুনিতা দেবীর বাসায় কাউকে ঢুকতে বা বের হতে দেখেনি" বলেন মুনেশ দেবী।
ফলে, রহস্য আরো ঘনীভূত হয়।
কিন্তু ঘটনা এখানেই শেষ নয়। পরদিন একই ধরনের ঘটনা ঘটে।সুনিতা দেবীর বাসার কয়েক গজ দূরে থাকেন গৃহকর্মী আশা দেবী; তিনিও রাতের আঁধারে তাঁর চুল হারান। কিন্তু এবারের হামলাকারী পুরুষ নন, একজন নারী।
আশা দেবীর শ্বশুর জানান, হামলার পরদিনই ছেলের বউসহ বাড়ির সব নারীকে উত্তর প্রদেশের এক আত্মীয়ের বাড়িতে রেখে আসেন তিনি।
স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, চুল কেটে নিয়ে যাওয়া এই `ভুতুরে নাপিত` প্রথম দেখা যায় রাজস্থানে, জুলাই মাসে।
এরপর থেকে হরিয়ানা এমনকি রাজধানী দিল্লিতেও এই ধরনের ঘটনার খবর পাওয়া গেছে।
এরই মধ্যে `চুল চোর` কে নিয়ে নানা ধরনের গল্প চালু করে দিয়েছেন অনেকে।
কারো মতে, সংঘবদ্ধ কোনো চক্র এমন হামলার সঙ্গে জড়িত। আবার কারও মতে, তান্ত্রিক বা ডাইনিরা বেছে বেছে নারীদের চুল কাটছেন। কারও বিশ্বাস, এসব ঘটনায় জড়িয়ে আছে `অতিপ্রাকৃত শক্তি`।
বিবিসি বাংলা