Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

চৈত্র ১৩ ১৪৩০, শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪

ঘুরে আসুন সবুজ গালিচায় মোড়ানো মুন্নার, কেরালা

বহুমাত্রিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১১:০৫, ৩১ জানুয়ারি ২০১৮

আপডেট: ০০:০০, ৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৯

প্রিন্ট:

ঘুরে আসুন সবুজ গালিচায় মোড়ানো মুন্নার, কেরালা

ফাইল ছবি

ঢাকা : কুয়াশাচ্ছন্ন পর্বত, সারি সারি রুপালি অর্জুন এবং সবুজ চা বাগানের সাগরের মাঝে নিরুদ্দেশ হয়ে যেতে চাইলে আপনার যেতে হবে ভারতের দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থিত মুন্নার টাউনে। কেরালা রাজ্যের মাঝে অবস্থিত এই বিশ্বখ্যাত চায়ের রাজ্য।

স্থানীয়রা বিশ্বাস করে মুন্নার-এর নামকরণ করা হয়েছে তিন নদীর মিলনস্থলের কারণে। মুধিরাপুজা, নাল্লাথানি এবং কুন্দালি নদীর স্রোত যেন এক হয়ে মিলেছে মুন্নার এর ঠিক মাঝখানে এবং এই নদীর কারণেই মুন্নারের আবহাওয়া, জীবজন্তু এবং বৃক্ষের সমাহার যেন অন্য যেকোনো স্থান থেকে ভিন্ন।

মুন্নার বর্তমানে একটি জনপ্রিয় ট্যুরিস্ট ডেস্টিনেশান। ভারতে প্রথম মুন্নার টাউনে বাসস্থান গড়ে তোলে ফ্রেঞ্চরা এবং তারা তাদের অস্তিত্বের প্রমাণ রেখে গিয়েছে এখানকার বিভিন্ন স্থাপত্যে। দিল্লি থেকে সরাসরি ট্রেন যেয়ে পারি জমাবে এরনাকুলাম রেইল স্টেশানে। আছে লাক্সারি ট্রেনের ব্যবস্থাও। সেখান থেকে বাসে করে পৌঁছে যাবেন মুন্নার-এর কেন্দ্রে। বিশ্বখ্যাত টাটা চা-এর উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং এক্সপোর্ট হয় এই মুন্নার থেকেই এবং বলতে গেলে এই স্থান চা-প্রেমিকদের জন্য এক টুকরো স্বর্গ।

চা গাছ থেকে শুরু করে প্যাকেটজাত করা পর্যন্ত যদি পুরো প্রক্রিয়া দেখতে চান, তবে প্রথমেই আপনার যাত্রা শুরু করবেন টাটা টি মিউজিয়াম দিয়ে। প্রতি আধা ঘণ্টা অন্তর জাদুঘরে একটি ফ্রি ট্যুর দেওয়া হয়, যেখানে আপনি স্বচক্ষে দেখতে পারবেন চা উৎপাদন। বর্তমানে মুন্নার কেন বিশ্বের বুকে চা শিল্পের একটি অনন্য স্থান, সেটি জানার জন্য একটি ডকুমেন্টারিও দেখান হয় এই মিউজিয়ামে।

চা বাগানই মুন্নার-এর একমাত্র ট্যুরিস্ট আকর্ষণ নয়। এরাভিকুলাম জাতীয় উদ্যান আছে এই টাউনে। সুন্দর গঠন এবং মোটা চামড়ার অধিকারী বিলুপ্তপ্রায় নীলগিরি টাহর মোষের দেখা মিলবে এই সুরক্ষিত জঙ্গলে। নিলাকুরাঞ্জি এক ধরনের অদ্ভুত সুন্দর বেগুনি রঙা ফুল। সেই বিরল ফুল আছে এই উদ্যানে এবং প্রতি ১২ বছর অন্তর এই ফুল ফোটে। সেই সময় পুরো মুন্নার অঞ্চলের পাহাড় ঢেকে যায় বেগুনি চাদরে। সে এক অপূর্ব সুন্দর দৃশ্য, যা দেখার জন্য দূরদূরান্ত থেকে মানুষ ভিড় করে এই অঞ্চলে।

এরাভিকুলাম পার্ক মূলত কানান দেভান পর্বতমালার মধ্যে অবস্থিত। বনের পুরোটাই সবুজ-শ্যামল গাছে আবৃত। আপনি বিরল মোষের দেখা নাও পেতে পারেন, তবে আশপাশের দৃশ্য ভুলে যাবার মতো নয়।

মুন্নারে থাকার জন্য অবশ্যই আপনাকে বেছে নিতে হবে কোনো চা বাগানের রিসোর্ট। তালায়ের ভ্যালী বাংলো কিংবা লকহার্ট টি ফ্যাক্টরিতে আছে কিছু অসাধারণ সুন্দর রিসোর্ট। মাথার উপর ঝাড়বাতি, ভিক্টোরিয়ান আসবাবপত্র, সুবিশাল ফায়ার প্লেস এবং হীরকে মোড়ানো আয়ানার দেখা পাবেন এসব লাক্সারি রিসোর্টে। রেস্তোরাঁয় পাবেন তাজা চা এবং খাওয়াদাওয়া করে বেরিয়ে পড়ার জন্য গাড়িও প্রস্তুত থাকে এসব রিসোর্টে।

বাংলোগুলো প্রায় ২,৫০০ একর আয়তনের চা বাগানের মাঝখানে অবস্থিত। গহীন বনের মাঝে থাকার অভিজ্ঞতা পাবেন। ভুমি থেকে মুন্নারের উচ্চতা কম নয়। রাত পেরোতেই দেখবেন রুমের ভিতরে মেঘ এসে খেলা করছে। চায়ের কাপ হাতে নিয়ে সানরাইজ দেখতে ভুলবেন না।

কীভাবে যাবেন
মুন্নার যেতে হলে বাস ধরতে পারবেন ভারতের বেশির ভাগ রাজ্য থেকে। কচি শহর থেকে মুন্নার ১৫০ কিলোমিটার দূরে, যেতে পারবেন রেলে। এরনাকুলাম বা আলুভা স্টেশানে নেমে, সেখান থেকে গাড়ি নিয়ে মুন্নার।

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer