ঢাকা : মাটির তলা থেকে বেরিয়ে পড়ল হরপ্পা সভ্যতার সুপ্রাচীন একটি নগরের হাড়গোড়, কঙ্কাল!
আজ থেকে প্রায় সাড়ে তিন হাজার বছর আগে এক ভয়ঙ্কর সুনামিতে ভেঙে তছনছ হয়ে গিয়ে সমুদ্রে তলিয়ে গিয়েছিল ওই প্রাচীনতম নগর।
প্রত্নতাত্ত্বিকদের দাবি, সুপ্রাচীন হরপ্পা সভ্যতায় ওই নগরটির গোড়াপত্তন হয়েছিল প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে। তার দেড় হাজার বছরের মধ্যেই এক ভয়ঙ্কর সুনামি তছনছ করে দিয়েছিল ওই প্রাচীনতম নগর।
পানাজিতে ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ওশ্যানোগ্রাফি’-র অধিকর্তা এসডব্লিউএ নাকভি এই প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারের খবর দিয়ে জানিয়েছেন, ‘‘আজ থেকে ঠিক ৩ হাজার ৪৫০ বছর আগে ওই সুনামি ধ্বংস করে দিয়েছিল ধোলাভিরার ওই প্রাচীনতম নাগরিক সভ্যতাকে।
সমুদ্রের তলিয়ে গিয়েছিল গোটা শহরটা। সুপ্রাচীন ওই শহরটি আদতে ছিল খুবই ঝকঝকে একটি পরিকল্পিত বন্দর নগর। যেখানে থাকতেন সম্ভ্রান্ত পরিবারের লোকজনই। ভারতের ভৌগোলিক সীমায় পড়া ওই সুপ্রাচীন নগরটি ছিল হরপ্পা সভ্যতার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর।
ওই প্রাচীন নগরে ছিল একটি দুর্গ। সেই সময়েই ঝাঁ চকচকে ওই শহরের লাগোয়া এলাকায় গড়ে উঠেছিল মফস্সলও।
অর্থনৈতিক ভাবে কিছুটা দুর্বল মানুষজন থাকতেন বন্দর নগরের লাগোয়া ওই মফস্সলে।’’আচমকা সুনামিতে ধ্বংস হয়ে গেলেও, প্রত্নতাত্ত্বিকদের অনুমান, হরপ্পা সভ্যতার ওই প্রাচীন নগরের বাসিন্দারা সুনামির বিপদ সম্পর্কে সচেতন ছিলেন। ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ওশ্যানোগ্রাফি’-র বিজ্ঞানী রাজীব নিগম বলেছেন, ‘‘সুনামি ঠেকানোর ব্যবস্থাও নিয়েছিলেন তাঁরা। আর সেই ব্যবস্থা নিতে গিয়ে উন্নত প্রযুক্তি-প্রকৌশলের ওপরেই তাঁরা ভরসা রেখেছিলেন। গোটা শহরটিকে ১৪ থেকে ১৮ ফুট উঁচু পাথর দিয়ে বানানো পাঁচিলে ঘিরে ফেলেছিলেন তাঁরা।’’
কিন্তু সেই পাঁচিলেও শেষ রক্ষা হয়নি ধোলাভিরার ওই প্রাচীন নগরের। হরপ্পা সভ্যতার বন্দর নগরের সলিলসমাধি হয়েছিল ভয়ঙ্কর সুনামিতেই!
আনন্দবাজার পত্রিকা