গাজীপুর : প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর অংশগ্রহন ছাড়াই আসন্ন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রার্থীদের নিয়ে জনগণের মুখোমুখি অনুষ্ঠান আয়োজন করল বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)।
সোমবার গাজীপুর জেলা পরিষদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র মিলনায়তনের এ অনুষ্ঠানে ৪ প্রার্থী অংশ নেন।
প্রার্থীরা ওয়ার্ড ভিত্তিক শিশু পার্ক প্রতিষ্ঠা, সকলের জন্য ব্যবহারযোগ্য ফুটপাত নির্মাণ, পরিকল্পিত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা,সুন্দর স্বাস্থ্যসেবা, সুপেয় পানি সরবরাহ ও নিষ্কাশন, বাজার রক্ষণাবেক্ষন, জলাশয় রক্ষা ও সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দেন।
মতবিনিময় সভায় স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী ফরিদ আহমেদ, কমিউনিস্ট পার্টির কাজী মো. রুহুল আমীন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের অধ্যক্ষ মো. নাসির উদ্দিন, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের অ্যাডভোকেট মো. জালাল উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। অনুপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত অ্যাডভোকেট মো. জাহাঙ্গীর আলম, বিএনপি মনোনীত হাসান উদ্দিন সরকার ও ইসলামী ঐক্যজোটের মেয়র প্রার্থী মাওলানা ফজলুর রহমান।
প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক সাবরিনা সুলতানা বলেন, গাজীপুর মহানগরের অনেক স্থানে প্রতিবন্ধীদের প্রবেশগম্যতা নেই। চাহিদার ভিত্তিতে গাজীপুর মহানগরে প্রতিবন্ধী বান্ধব অবকাঠামো নির্মাণের দাবি করে তিনি বলেন, নির্বাচনী প্রচারণায় প্রতিবন্ধীদের প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আনতে হবে।
বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব প্ল্যানার (বিআইপি) প্রতিনিধি আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, গাজীপুর শহর উন্নয়নে এখনো পর্যন্ত কোন মাস্টার প্ল্যান হয়নি। ইমারত শিল্প নির্মাণে কোন নিয়ন্ত্রন নেই। একটি মহানগরের টেকসই উন্নয়নে কমপক্ষে ১২ থেকে ১৫ ভাগ জলাশয় লাগে। সেগুলোরও কোনো রক্ষণাবেক্ষণ নেই।
স্থাপত্য ইনস্টিটিউটের স্থপতি শায়লা জোয়ার্দার বলেন, সকলের বাসযোগ্য মহানগর প্রতিষ্ঠায় জলাধার, জনসংখ্যা এবং বায়ু দুষণ মুল্যায়ন করতে হবে। বন রক্ষা ও বনায়নে ভূমিকা রাখতে হবে। শ্রমিকদের নিরাপদ যাতায়াতের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। সর্বোপরি একীভূত ও স্মার্ট শহর গড়ার ক্ষেত্রে একজন মেয়রকে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে।
গাজীপুরে জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান দিলরুবা ফৌজিয়া বলেন, গাজীপুর থেকে ঢাকার পথ ৪৫ মিনিটের। অথচ সময় লেগে যায় প্রায় পাঁচ ঘণ্টা। মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন বলেন, মহানগরের শিল্প, আবাসিক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আলাদা জোন করতে হবে। সাংবাদিক নূরুল আমীন সিকদার ঢাকা থেকে গাজীপুর পর্যন্ত ডাবল রেল লাইন স্থাপনের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন।
এছাড়াও শ্রেণী বৈষম্য দূর করা,ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানজট নিরসনে তিনটি বাইপাস সড়ক নির্মাণের প্রয়োজনের করা বলেন নাগরিকরা। সভাস্থলে গাজীপুর সরকারী মহিলা কলেজের গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম তিতাস পরিবেশ রক্ষার নানা ধরণের শ্লোগান সম্বলিত ফেস্টুন নিয়ে প্রতীকী অবস্থান গ্রহণ করেন।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক ড. মোহাম্মদ আব্দুল মতিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইলেক্টোরাল সিস্টেমস এর প্রোগ্রাম ম্যানেজার কানিজ ফাতেমা প্রমুখ।
এদিকে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী উপস্থিত না থাকার অংশগ্রহনকারীরা অনুষ্ঠানের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক ড. মোহাম্মদ আব্দুল মতিন সাংবাদিকদের বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মনোনীত প্রার্থীর বাসায় গিয়ে সাক্ষাত করে তাদের উপস্থিতির নিশ্চয়তা দেওয়ার পর দিন ও তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু কেন তারা উপস্থিত থাকেননি তা জানা নেই। এমনকি উপস্থিত থাকতে না পারার বিষয়টিও বড় দু’দলের মনোনীত মেয়র প্রার্থীরা জানাননি। আমরা তাদের জন্য অপেক্ষা করে কমপক্ষে আধা ঘন্টা পর অনুষ্ঠান শুরু করেছি।
বহুমাত্রিক.কম