Bahumatrik | বহুমাত্রিক

সরকার নিবন্ধিত বিশেষায়িত অনলাইন গণমাধ্যম

চৈত্র ১৪ ১৪৩০, শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪

গরু-ছাগল বিচরণক্ষেত্র মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

এস এম জামাল, কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ০১:১১, ১ জুন ২০১৭

আপডেট: ০২:৩২, ১ জুন ২০১৭

প্রিন্ট:

গরু-ছাগল বিচরণক্ষেত্র মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

ছবি: বহুমাত্রিক.কম

কুষ্টিয়া : যেখানে রোগীদের ঠাঁই হওয়ার কথা ছিল সেখানে বিচরণ করছে গবাদি পশু। হাসপাতাল চত্বরে গরু-ছাগলের অবাধ বিচরণ দেখে মনে হতে পারে এটি একটি খামারবাড়ি। তবে এটিই হচ্ছে উপজেলার সাড়ে তিন লাখ মানুষের চিকিৎসা কেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। সরকারী এই হাসপাতালের করুণ দশা। কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এমন অবস্থা বিরাজ করছে।

এছাড়াও হাসপাতালে আগত রোগীরা ওষুধ না পাওয়াসহ বিভিন্ন অব্যবস্থাপনার অভিযোগ তুলেছেন। রোগীদের অভিযোগ, সরকারি হাসপাতালে ওষুধ পাওয়া যায় না। এটি একটি নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার।

ডাক্তার থাকলে ওষুধ থাকে না, ওষুধ থাকলে ডাক্তারের দেখা মেলে না। সাধারণ রোগীরা যখন ওষুধ পাচ্ছে না তখন হাসপাতাল চালু রেখে অযথা টাকা ব্যয় করার কোনো প্রয়োজন নেই বলেও অনেকেরই এমন মন্তব্য।

নিয়ম অনুযায়ী ৫০ শয্যার এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ইউএইচএ, আরএমওসহ ১৪ জন ও ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ১২ জনসহ মোট ২৬ জন চিকিৎসক থাকার কথা। এরমধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ১৪ জনের মধ্যে ইউএইচএ, আরএমওসহ আছেন মাত্র ৫ জন। ৯ জন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আদেশে ডেপুটেশনে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজে কর্মরত।

অন্যদিকে ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ১২টির মধ্যে ৬টি পদ শূন্য। বাকি ৬টি পদের ৫ জন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশে ডেপুটেশনে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজে কর্মরত।

২৬টি পদের অর্ধেকের বেশি ১৪ জন আছেন ডেপুটেশনে। ডেপুটেশনে থাকা চিকিৎসকরা হলেন, জুনিয়র কনসালট্যান্ট কার্ডিওলজি ডাঃ বসির উদ্দিন, মেডিকেল অফিসার ডাঃ শামীমা আক্তার, ইনডোর মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ কামরুন নাহার, ডাঃ নুর-এ- নাসরীন, ডাঃ নাজনীন হাবিব, বহলবাড়ীয়া ইউনিয়ন সেন্টারের সহকারী সার্জন ডাঃ অনামিকা অধিকারী, কুর্সা ইউনিয়ন সেন্টারের সহকারী সার্জন ডাঃ আনিছুর রহমান, আমবাড়ীয়া ইউনিয়ন সেন্টারের সহকারী সার্জন ডাঃ তামিমা আফরোজ, মালিহাদ ইউনিয়ন সেন্টারের সহকারী সার্জন ডাঃ শামীম আরা বেগম, বারুইপাড়া ইউনিয়ন সেন্টারের সহকারী সার্জন ডাঃ এ জে এম মুছাদ্দেক রেজা।

বছরের পর বছর ওই চিকিৎসকরা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আদেশে ডেপুটেশনে থাকলেও ডেপুটেশন বাতিল করে স্ব স্ব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ফিরিয়ে আনার কোনো উদ্যোগ নাই।

নারী ও শিশুবান্ধব বর্তমান সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন থাকার পরও এ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে অর্ধযুগ ধরে গাইনী ও শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ’র পোষ্টিং নাই।

চিকিৎসক সংকটের কারনে, সাড়ে তিন লাখ জনসংখ্যার উপজেলা সরকারী স্বাস্থ্য সেবার এ প্রতিষ্ঠানটির চিকিৎসা সেবা রীতিমত ভেঙ্গে পড়েছে। চিকিৎসক সংকটের কারনে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ আব্দুর রাকিব, মেডিক্যাল অফিসার ডাঃ মাসুদুল হাসান ও ডেন্টাল সার্জন ডাঃ এস এম সাজ্জাদুল ইসলামকে দিয়ে রাত্রীকালীন জরুরি সেবা প্রদান করতে হচ্ছে।

হাসপাতালে সেবা প্রত্যাশীদের সেবা না পাওয়ায় অভিযোগের ভিত্তিতে জীবন রহমান নামের এক তরুন জানান, সকাল সাড়ে ১১টায় ডিউটি রুমে গিয়ে ডাক্তারকে পাওয়া যায়নি। তার রুমে তালাবদ্ধ ছিলো। বেলা একটার দিকে কয়েকজন রোগী ওষুধ নিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর ডিসপেনসারিতে গিয়ে দেখেন সেটি বন্ধ। অথচ তার সামনে বারান্দায় কয়েকটি ছাগলের অবাধ বিচরণ চোখে পড়ে রোগীদের। সেসময় অনেকেই ওষুধ নিতে এসে ফিরে যায় রোগীরা।

এ বিষয়ে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো. জহির রায়হান জানান, প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সিভিল সার্জনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বহুমাত্রিক.কম

Walton Refrigerator Freezer
Walton Refrigerator Freezer